1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কুকুর ধরবে করোনা

২৮ মে ২০২০

ফিনল্যান্ডে একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, কুকুরকে শেখালে তারা গন্ধ শুকে করোনায় কেউ আক্রান্ত হয়েছে কি না তা বলে দিতে পারে। করোনা সংক্রমণের একটা নির্দিষ্ট গন্ধ আছে, যা কুকুর ধরে ফেলতে পারে।

https://p.dw.com/p/3ctcw
ছবি: picture-alliance/abaca/R. Lafargue

সমীক্ষাটা করেছেন হেলসিংকি বিশ্বিদ্যালয়ের একদল গবেষক। কুকুরকে বিশেষভাবে শেখালে তারা গন্ধ শুঁকে করোনা ধরে ফেলবে। কোভিড ১৯ রোগে আক্রান্ত রোগীর শরীরে একটি গন্ধ পাওয়া যায়। কুকুরকে শেখালে তারা সেই গন্ধ নিখুঁতভাবে ধরে ফেলতে পারে। কয়েক সপ্তাহ লাগে তাদের গন্ধটা ধরতে। তারপর কোনটা করোনা রোগীর মূত্র, কোনটা নয়, তা সেই প্রশিক্ষিত কুকুর নির্ভুলভাবে বলে দিতে পারে। 

ডগরিস্ক গ্রুপের প্রধান আনা হেলম বিওরিকম্যান বলেছেন, প্রতিটি রোগের একটা গন্ধ থাকে। কুকুরকে প্রশিক্ষণ দিলে সেই গন্ধ তারা ধরে ফেলে। আমাদের সেই প্রশিক্ষণ দেওয়ার অভিজ্ঞতা আছে। কুকুর কীভাবে দ্রুত সেই নতুন গন্ধ শুঁকতে পারছে, সেটা দেখাও দুর্দান্ত অভিজ্ঞতা। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই কুকুর করোনার গন্ধ বুঝে নিতে পারে। তারপর করোনা আক্রান্তের মূত্রের গন্ধ শুঁকে সে বলে দেবে যে করোনা হয়েছে। ল্যাবে পরীক্ষা যতটা নির্ভরযোগ্য, কুকুরের করোনা ধরাও ততটাই নির্ভরযোগ্য।  

ফিনল্যান্ডের বিজ্ঞানীরা এখন আরও পরীক্ষা করবেন। গবেষণার ভাষায় যার নাম ডবল ব্লাইন্ড স্টাডি। এতে কুকুর অনেক বেশি সংখ্যায় রোগীদের মূত্রের গন্ধ শুঁকবে এবং বলে দেবে কোনটা করোনা রোগীর, কোনটা নয়। সেটা সফল হলে তারপর কুকুরদের করোনা ধরার কাজে ব্যবহার করা হবে।

তবে শুধু ফিনল্যান্ড নয়, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানিতেও এ নিয়ে পরীক্ষা হচ্ছে। ফিনল্যান্ডের গবেষক দলের ফলাফল তাঁদেরও সাহায্য করবে। কিন্তু জার্মান অ্যাসিসটেন্স ডগ সেন্টারের লুকা বারেট বলেছেন, ''এখনও একটা কথা কেউ নিশ্চিতভাবে বলতে পারেননি যে, এই ভাইরাস নিয়ে প্রশিক্ষণ করানোটা কতটা বিপজ্জনক। জার্মান ভাইরাসবিদরা এই ধরনের পরীক্ষার বিরুদ্ধে। কারণ, এই ভাইরাস নিয়ে আমরা বিশেষ কিছু জানি না।'' 

করোনা রোগীর মূত্রে কী করে এই গন্ধটা আসে, তা এখনও খুব স্পষ্ট নয়। করোনার ভাইরাস ফুসফুসকে আক্রমণ করে, রক্তনালি, কিডনি ও অন্য অঙ্গের ক্ষতি করে। এটাও মনে করা হচ্ছে, রোগীর মূত্রের গন্ধ বদল হয়। কুকুরের ঘ্রাণশক্তি খুবই শক্তিশালী বলে তারা সেই বদল ধরে নিতে পারে।

বারেট জানিয়েছেন, ''কিছু রোগের নির্দিষ্ট গন্ধ থাকে। কুকুর সেটা শুঁকে নিখুঁতভাবে বলে দিতে পারে। একটা সমীক্ষা অনুযায়ী কুকুরগন্ধ শুঁকে স্তনে ক্যান্সার হয়েছে কি না বলে দিতে পারে। ৯৩ শতাংশ ক্ষেত্রে তারা ঠিকভাবে বলে দেয়। ত্বকের, ডিম্বাশয়ের, মূত্রথলির ক্যান্সারও কুকুর গন্ধ শুঁকে বলে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। এমনকী তারা পার্কিনসন আক্রান্ত রোগীদেরও গন্ধ শুঁকে বলে দিতে পারে। এই রোগে কেউ আক্রান্ত হওয়ার কয়েক বছর আগেও কুকুর তা বলে দিতে পারে।'' বারেট জানিয়েছেন, ''এখান থেকেই পার্কিনসনের আগাম ওয়ার্নিং দেওয়ার জন্য কুকুরদের প্রশিক্ষিত করি। এমনকী প্রশিক্ষণ দিলে কুকুররা ম্যালেরিয়া হয়েছে কি না তা বলে দিতে পারে। তবে ১০ জনের মধ্যে সাতজনের ক্ষেত্রে তারা সঠিকভাবে বলতে পারছে। এটা যথেষ্ট নয়।''  

কুকুরেরশুঁকে দেখার ক্ষমতা মানুষের থেকে দশ লাখ গুণ বেশি। মানুষের ৫০ লাখ ঘ্রাণকোষ আছে। কুকুরের আছে ২২ কোটি। কুকুর প্রতি মিনিটে ৩০০ বার নিঃশ্বাস নিতে পারে। তার মানে তাদের ঘ্রাণকোষ সমানে তাদের নতুন গন্ধ  সরবরাহ করে যাচ্ছে। সাধারণত ল্যাব্রাডর রিট্রিভারদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। তবে স্প্যানিয়েল ও শিকারি কুকুরদেরও এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়ে থাকে। প্রত্যেককে একটা গন্ধের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। সেটা মাদক হতে পারে বা বিস্ফোরক। অথবা কোনও অসুখের গন্ধ। একটা কুকুর একাধিক অসুখের গন্ধ টের পাবে না।

আলেকজান্ডার ফ্রয়েন্ড/ জিএইচ/এসজি