1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কৃষকদের ‘চাবুক' মারছেন মোদী

২০ এপ্রিল ২০১৭

৩৮ দিন ধরে মোদীর উদ্দেশ্যে নিজেদের কথা বলছেন তাঁরা৷ কিন্তু মোদী শুনছেন না৷ অভিনব উপায়ে প্রতিবাদ করছেন, যাতে মোদীর নজরে পড়ে৷ অথচ মোদী দেখছেন না৷ মোদী নাকি উল্টে চাবুক মারছেন কৃষকদের৷

https://p.dw.com/p/2bazB
Indien Dürre Farmer Protest Ratten
ছবি: Reuters/N.Bhalla

ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য তামিলনাড়ু ভয়াবহ খরায় আক্রান্ত৷ ফসলের ক্ষতি হয়েছে ব্যাপক৷ তাই অনেক দিন ধরেই সরকারের কাছে ঋণ মওকুফ এবং খরার জন্য বিশেষ অর্থ অনুদানের দাবি জানাচ্ছিলেন কৃষকরা৷ কিন্তু সরকার অনড়৷

তামিলনাড়ৃতে থেকে দাবি আদায় সম্ভব নয় বুঝে সেই রাজ্যের অনেক কৃষকই ৩৮ দিন আগে চলে যান রাজধানী নতুন দিল্লিতে৷ শুরু হয় নানা উপায়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সহানুভূতি আদায় করে দাবি পূরণের চেষ্টা৷ অস্তিত্ব রক্ষার প্রাণান্ত চেষ্টা থেকে যন্তরমন্তর এলাকায় অবস্থান নিয়ে অভিনব সব উপায়ে শুরু করেন প্রতিবাদ, বিক্ষোভ৷

গত কয়েক বছরে ভারতের খরা উপদ্রুত বিভিন্ন এলাকায় যেসব কৃষক আত্মহত্যা করেছেন, তাঁদের স্মরণ করে, সেরকম পরিণাম এড়াতে মৃতদের মাথার খুলি নিয়ে করা হয় মিছিল৷

এক কৃষককে নরেন্দ্র মোদী সাজিয়ে তার পায়ে মেখে দেয়া হয় নিজের শরীরের রক্ত৷ তবুও যদি প্রধানমন্ত্রীর টনক নড়ে!

এক পর্যায়ে মাথার অর্থেক চুল চেঁছে ফেলেন প্রকাশ্যে৷ যাঁদের পরিবারের সদস্যদের মুখে দু'বেলা অন্ন তুলে দেওয়ার নিশ্চয়তা নেই, আধা-নেড়ে হলে যে খারাপ দেখায় তা নিয়ে মাথা ঘামানোর দরকার কি তাঁদের!

যন্তরমন্তরের সামনে নানাভাবে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ করেও কোনো কাজ না হওয়ায় এক সময় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনের সামনে যান হতদরিদ্র কৃষকরা৷ উদ্দেশ্যে – প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করে নিজেদের কথা সরাসরি তাঁকে জানানো৷ কিন্তু চাইলেই তো প্রধানমন্ত্রীর দেখা পাওয়া যায় না৷ আসে পুলিশি বাঁধা৷ এর প্রতিবাদে রাস্তায় নগ্ন হয়ে গড়াগড়ি যান কৃষকরা৷

ভারতের রাজধানীতে, প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের সামনে দাবি আদায়ের জন্য ‘বেআব্রু' হয় অসহায় কৃষক, তবুও আসে না আশ্বাস৷ আসে না মোদীর দর্শণ লাভের সুযোগ৷ কৃষকরা অবশেষে ‘আব্রু' ঢাকেন৷ পোষাক নির্বাচনেও থাকে প্রতিবাদ৷ পুরুষ কৃষকরা লজ্জা নিবারণ করেন নারীর শাড়িতে!

তাতেও কিছু হয় না৷ কিন্তু এভাবে দিনের পর দিন চলতে থাকলে এক সময় কী অবস্থা দাঁড়াতে পারে তা কল্পনা করে রাস্তায় ভাত ছিটিয়ে তাতে ডাল ঢেলে কৃষকরা সেই ভাত খেলেন৷ এভাবে বোঝাতে চাইলেন অভাবে ঘটি-বাটি সব গেলে প্রকৃতিই হবে শেষ আশ্রয়৷

যখন ক্ষেতে ফসল আর থাকবেই না, তখন কী করবেন? ভাত, ডালই বা পাবেন কোথায়?  তখন হয়ত ইঁদুর বা সাপও খেতে হবে৷ সত্যি সত্যিই ইঁদুর এবং সাপ মুখে তুলে নিলেন কৃষকরা৷

শুধু প্রতিবাদ-বিক্ষোভ করেই থেমে থাকেননি কৃষকরা৷ ভারতের অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি, পানিসম্পদ মন্ত্রী উমা ভারতী, স্বরাষ্ট মন্ত্রী রাজনাথ সিং এবং কৃষি মন্ত্রী রাধা নাথ সিং-এর সঙ্গে দেখা করে নিজেদের দাবির কথা জানিয়েছেন৷ আশা করেছেন, মন্ত্রীদের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কানে যাবে গরিব কৃষকদের দুঃখ-কষ্টের কথা৷

বৃথা আশা৷ কোথাও নরেন্দ্র মোদীর কোনো বক্তব্যে বোঝার উপায় নেই যে, ১৭০ কোটি মানুষের দেশের একটি রাজ্যের কৃষকরা চাষবাস ছেড়ে রাজধানীতে এসে দাবি আদায়ের চেষ্টা করছেন এক মাসেরও বেশি সময় ধরে৷

অবশেষে কৃষকরা একজনকে মোদীর চেহারার মতো করে বানানো মুখোশ পরিয়ে, তাঁকে মোদীর মতো পোশাক পরিয়ে বললেন, ‘এই নাও চাবুক, চাবুক দিয়ে মারো আমাদের৷''

এসিবি/ডিজি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য