1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কেমন হলো জাতীয় ই-তথ্যকোষ?

১৬ মার্চ ২০১১

চালু হলো ‘জাতীয় ই-তথ্যকোষ’৷ ইন্টারনেটে বাংলায় প্রয়োজনীয় তথ্য পেতে তৈরি হয়েছে এটি৷ সরকার একে বাংলা ভাষার সর্বপ্রথম ‘জীবন ও জীবিকা’ ভিত্তিক তথ্যভান্ডার বলছে৷

https://p.dw.com/p/10ZBT
ছবি: AP

ইসা মিয়া৷ বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের এক কৃষক৷ প্রয়োজন থাকলেও সবসময় জেলা শহরে যেতে পারেন না তিনি৷ এরকম হাজারও ইসা মিয়ার কাছে প্রয়োজনীয় তথ্য পৌঁছে দিতে জাতীয় ই-তথ্যকোষ তৈরি হয়েছে৷

এই তথ্যকোষে রয়েছে ১৪৮টি সরকারি অফিসের ওয়েবসাইটের তথ্য৷ সঙ্গে প্রায় ৫০টির মতো দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থার তথ্য৷ ফলে ই-তথ্যকোষে থাকা সার্চ অংশে কোনো কিছু লিখে খুঁজতে দিলে সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইটগুলোতে থাকা তথ্যগুলো বেরিয়ে আসে৷ অর্থাৎ বলা যায়, প্রয়োজনীয় তথ্য সহজে খুঁজে পাবার জন্যই জাতীয় ই-তথ্যকোষ৷

উদ্দেশ্য

তথ্যভান্ডারটি তৈরি করেছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ‘এ্যাক্সেস টু ইনফরমেশন' এটুআই প্রকল্প৷ এর প্রধান নজরুল ইসলাম খান৷ তাঁর কাছে জানতে চেয়েছিলাম ই-তথ্যকোষ তৈরির উদ্দেশ্য সম্পর্কে৷ তিনি বললেন, ‘‘ইন্টারনেটে বাংলায় কনটেন্টের সংখ্যা খুব কম৷ কিন্তু বাংলাদেশের মাত্র তিন থেকে চারভাগ লোক ইংরেজি পড়তে ও বুঝতে পারে৷ এই সমস্যা থেকে মুক্তির জন্যই এই উদ্যোগ৷''

নজরুল ইসলাম বলেন ইউনিয়ন পর্যায়ে প্রয়োজনীয় তথ্য পৌঁছে দিতে গত বছরের নভেম্বর মাস থেকে সারা দেশে মোট ৪,৫০১টি ‘ইউনিয়ন তথ্য ও সেবাকেন্দ্র' চালু হয়েছে৷ ঐসব কেন্দ্রে থাকা কম্পিউটার থেকে এই তথ্যকোষে ঢুকতে পারবেন সাধারণ জনগণ৷

কী তথ্য পাওয়া যাবে

তথ্যভান্ডারের ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, মোট ১১টি বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে৷ এগুলো হলো কৃষি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, আইন ও মানবাধিকার, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, অকৃষি উদ্যোগ, পর্যটন, কর্মসংস্থান, নাগরিক সেবা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং শিল্প ও বাণিজ্য৷ তথ্য পরিবেশনের ক্ষেত্রে প্রয়োজনে অডিও, ভিডিও ও এ্যানিমেশনেরও সাহায্য নেয়া হয়েছে৷

বর্তমানে প্রায় ৫০ হাজার পৃষ্ঠা সমপরিমাণ তথ্য রয়েছে এই তথ্যকোষে৷ যেটা দিন দিন বাড়বে বলে জানালেন নজরুল ইসলাম৷ আর এক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারে যে কেউ৷ সেটা যেমন কোনো প্রতিষ্ঠান হতে পারে, তেমনি হতে পারে কোনো ব্যক্তিও৷ যদিও এসব তথ্য যাচাই বাছাইয়ের জন্য বর্তমানে কোনো বিশেষজ্ঞ কমিটি নেই৷ তবে ভবিষ্যতে এধরনের কমিটি গঠনের পরিকল্পনার কথা জানালেন তিনি৷

কেমন হলো?

নিয়মিত ইন্টারনেট ব্যবহার করেন এমন একজন মাহবুব উন নবী৷ তিনি প্রথমেই যেটা বললেন সেটা হচ্ছে, এই তথ্যকোষের সার্চ ইঞ্জিনটিতে এখনো অনেক ধরনের সমস্যা আছে৷ তাঁর ভাষায়, ‘‘যদি নৌকা লিখে সার্চ দেয়া যায় তাহলে কোনো কিছু পাওয়া যায় না৷ অথচ এই তথ্যকোষ বানানো হয়েছে এধরনের তথ্য পাওয়ার জন্যই৷ এছাড়া তথ্যকোষের অনেক লেখা মানসম্মত নয়৷ জাতীয় পর্যায়ের একটি ওয়েবসাইটে এ ধরনের লেখা না থাকাই ভাল৷''

এটুআই প্রকল্প থেকে এর আগে বাংলাদেশের প্রতিটি জেলার ওপর যে ওয়েবসাইট বানানো হয়েছিল সেটা একটা ভাল কাজ ছিল বলে মনে করেন মাহবুব৷ সেই তুলনায় জাতীয় ই-তথ্যকোষ তাঁকে কিছুটা হতাশই করেছে৷

এছাড়া সরকারি ওয়েবসাইট বলে একটা বিষয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি৷ সেটা হচ্ছে, নিয়মিত হালনাগাদ৷ মাহবুব বলেন অতীতে দেখা গেছে সরকারি কোনো ওয়েবসাইট একবার হয়ে গেলে পরবর্তীতে আর হালনাগাদ করা হয় না৷

তবে জাতীয় ই-তথ্যকোষ প্রতি তিন মাস পর পর হালনাগাদ ও সমৃদ্ধ করা হবে বলে ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে৷ এছাড়া এটুআই'এর প্রধান নজরুল ইসলামও স্বীকার করছেন ওয়েবসাইটে কিছু ভুলভ্রান্তি ও দুর্বলতা থাকতে পারে৷ এগুলো ঠিক করার জন্য তিনি সকলের কাছে পরামর্শ চেয়েছেন৷ এছাড়া আরও কী ধরনের তথ্য যোগ করা যায় সে ব্যাপারেও জানতে চেয়েছেন তিনি৷

ই-তথ্যকোষ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে লগ অন করুন www.infokosh.bangladesh.gov.bd/

প্রতিবেদন: জাহিদুল হক

সম্পাদনা: অরুণ শঙ্কর চোধুরী