1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ক্যানাডায় হেট ক্রাইম বাড়ছে

Sanjiv Burman২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

প্রায় এক মাস আগে কুইবেক সিটির একটি মসজিদের উপর প্রাণঘাতী আক্রমণের পর ক্যানাডায় বহিরাগতদের প্রতি বিরূপতা, রাজনৈতিক বিভাজন ও হেট ক্রাইম উঠতির দিকে৷

https://p.dw.com/p/2YJpH
টরন্টোর সেই মসজিদ
ছবি: DW/J. Kestler-D'Amours

ফেব্রুয়ারি মাসের ১৭ তারিখে ডাউনটাউন টরন্টোর ‘মসজিদ টরন্টো'-র সামনে বিক্ষোভকারীদের ভিড়; তাদের হাতে যে সব প্ল্যাকার্ড, তাতে লেখা ছিল, ‘‘ইসলামের প্রতি ‘না''', ‘‘মুসলিমরা সন্ত্রাসবাদী''৷ ওদিকে টরন্টো জাতিগতভাবে ক্যানাডার সবচেয়ে বৈচিত্র্যপূর্ণ শহর৷

কিন্তু টরন্টোর বৃহত্তর সমাজ অতি শীঘ্র একটি পাল্টা ডেমোর আয়োজন করে, যা থেকে বিভিন্ন সমর্থনের বার্তা এখনও মসজিদটির গায়ে লটকানো আছে: ‘‘বৈচিত্র্যই আমাদের শক্তি'', ‘‘আমাদের মুসলিম ভাইবোনদের প্রতি ভালোবাসা ও সমর্থন''৷

ইসলাম বিদ্বেষ বেড়ে চলেছে

কিন্তু দৃশ্যত বহিরাগত বিদ্বেষ সারা দেশেই বেড়ে চলেছে, সাধারণ ক্যানেডীয়রা যা নিয়ে উদ্বিগ্ন৷ জনসাধারণ ও রাজনীতিক মহলের একটি ক্ষুদ্র কিন্তু সোচ্চার অংশ ক্রমেই আরো বেশি বৈরিতামূলক ভাষা ব্যবহার করছে৷

তবে সব মিলিয়ে হেট ক্রাইমের সংখ্যা যে খুব বেড়েছে, এমন নয়৷ এছাড়া ইসলাম বিদ্বেষের মতো ইহুদি বিদ্বেষের বিক্ষিপ্ত ঘটনাও পুলিশের নজরে এসেছে, যেমন টরন্টোর একটি কন্ডোমিনিয়াম ভবনের ইহুদি বাসিন্দাদের ফ্ল্যাটের দরজায় ইহুদি বিদ্বেষী বার্তা লেখা হয়েছে৷

গত জানুয়ারি মাসের ২৯ তারিখে কুইবেক সিটির ইসলামিক কালচারাল সেন্টারের উপর বন্দুক আক্রমণে ছ'জন মুসল্লি নিহত হন, আহত হন আরো অনেকে৷ এই ঘটনা ক্যানাডার মুসলিমদের বিমূঢ় করেছে৷ ঘটনাটিকে সর্বত্র সন্ত্রাসবাদের ঘটনা বলে অভিহিত করা হয় ও তার নিন্দা করা হয়৷ হাজার হাজার ক্যানেডীয় মিছিল করে ও নীরব প্রহরার মাধ্যমে হতাহতদের পরিবারবর্গ ও বৃহত্তর মুসলিম সমাজের সঙ্গে তাদের সংহতি প্রকাশ করেন৷

প্রসঙ্গত, ২০১২ থেকে ২০১৪ সাল অবধি ক্যানাডায় হেট ক্রাইমের সংখ্যা কিন্তু কমতেই দেখা যায় – এর পরের তথ্য আপাতত সরকারের কাছে নেই অথবা এ যাবৎ প্রকাশ করা হয়নি৷ সংশ্লিষ্ট তিন বছরে মুসলিমদের লক্ষ্য করে হেট ক্রাইমের সংখ্যা কিন্তু প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে, বলে জানিয়েছে স্ট্যাটিস্টিকস ক্যানাডা৷

কুইবেক সিটির যে মসজিদটির উপর বন্দুকধারী আক্রমণ চালায়, গত বছর তার বাইরে একটি শূকরের মাথা রাখা হয়েছিল৷ ২০১৫ সালের ফেডারাল নির্বাচনের ঠিক পর পরই অন্টারিও-র পিটারবরো শহরের একটি মসজিদে অগ্নিসংযোগ করা হয়৷

দেশ জুড়ে বিভিন্ন ঘটনায় মুসলিম মহিলাদের গালিগালাজ করা হয়েছে, এমনকি তাদের দিকে থুতু ফেলা হয়েছে অথবা অন্যভাবে আক্রমণ করা হয়েছে৷

সাম্প্রতিক কয়েক সপ্তাহে মন্ট্রিয়লের দু'টি মসজিদের জানলার কাচ ভেঙে ফেলা হয়েছে এবং পুলিশের কাছে প্রায় দু'ডজন হেট ক্রাইমের খবর এসেছে৷

ক্যানাডা ২০১৫ সালের নভেম্বর মাস যাবৎ ৪০,০০০-এর বেশি সিরীয় উদ্বাস্তুকে গ্রহণ করেছে৷ কিন্তু অ্যাঙ্গাস রিড ইনস্টিটিউটের সাম্প্রতিক একটি জরিপ অনুযায়ী ৪১ শতাংশ ক্যানেডীয়র মতে, সরকার বড় বেশি উদ্বাস্তু গ্রহণ করেছেন এবং এখন উদ্বাস্তু নেওয়া বন্ধ হওয়া উচিত৷

জরিপে প্রত্যেক চতুর্থ উত্তরদাতা বলেন যে, ক্যানাডার উচিত ছিল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পন্থা অনুসরণ করে সিরীয় উদ্বাস্তুদের আগমনের উপর সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করা ৷

জাতিবাদকে নিন্দা করে প্রস্তাব ও তার প্রতিক্রিয়া

সংসদে আনীত সাম্প্রতিক একটি প্রস্তাবে ক্যানাডায় ইসলাম বিদ্বেষের নিন্দা করার চেষ্টা করা হয়েছে কিন্তু দৃশ্যত ফল হয়েছে ঠিক তার বিপরীত৷ ১০৩ নম্বর প্রস্তাবটির ফলে দক্ষিণপন্থি সমর্থক, রাজনীতিক ও মিডিয়া কলামনিস্টরা এবং সাধারণভাবে ইসলাম বিরোধীরা সকলেই সোচ্চার হয়েছেন৷

প্রস্তাব ১০৩ ফেডারাল সরকারের প্রতি ‘‘জনমানসে ক্রমবর্ধমান বিদ্বেষ ও আশঙ্কার পরিবেশ'' সম্পর্কে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ও যাবতীয় জাতিবাদ ও ধর্মভিত্তিক বৈষম্যকে নিন্দা করতে বলেছে৷

প্রস্তাবটির পিছনে প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর উদারপন্থি সরকার এবং বাম-ঘেঁষা নিউ ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সমর্থন আছে৷ অপরদিকে দক্ষিণপন্থি দলগুলির কাছে এই প্রস্তাব মতপ্রকাশের স্বাধীনতার উপর আক্রমণ৷ ইক্রা খালিদ, যে সাংসদ সংসদে প্রস্তাবটি উত্থাপন করেছিলেন, তাঁকে এ মাসে শত শত হেট বার্তা ও হুমকির সম্মুখীন হতে হয়েছে৷

জিলিয়ান কেসলার-দামুর (টরন্টো)/এসি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য