1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ক্যোলারের ভারত সফর সম্পর্কে জার্মান সংবাদমাধ্যম

৮ ফেব্রুয়ারি ২০১০

জার্মান প্রেসিডেন্ট হর্স্ট ক্যোলারের ভারত সফর সম্পর্কে মন্তব্য করেছে জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্টার আলগেমাইনে সাইটুং সংবাদপত্র৷

https://p.dw.com/p/LvRh
ভারতের একটি গ্রামে বক্তব্য রাখছেন জার্মান প্রেসিডেন্ট হর্স্ট ক্যোলারছবি: AP

চ্যান্সেলর বা জার্মানির অন্যান্য রাজনৈতিক নেতাদের সফর ভারতে তেমন একটা গুরুত্ব পায় না বলে জার্মানির কূটনৈতিক মহলে এমনিতেই একটা ক্ষোভ রয়েছে৷ প্রেসিডেন্টের ক্ষেত্রেও কোন ব্যতিক্রম হয় নি – এই মন্তব্য করেছে ফ্রাঙ্কফুর্টার আলগেমাইনে সাইটুং৷ জার্মানির অতিথিরা মহাত্মা গান্ধী ও অসংখ্য দেবদেবীর দেশে এসে মুগ্ধ হয়ে যান৷ অন্যদিকে তাঁদের যাঁরা আমন্ত্রণ জানিয়েছেন, সেই ভারত সরকারকে ডুবে থাকতে হয় অনেক বাস্তব সমস্যা ও চ্যালেঞ্জের মধ্যে৷

Horst Köhler und Manmohan Singh
ভারতের প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং-এর সঙ্গে ক্যোলারছবি: UNI

জার্মান প্রেসিডেন্ট ক্যোলার ভারতীয় বুদ্ধিজীবিদের সঙ্গে আলোচনায় তাঁর পছন্দের ‘সহযোগিতা ভিত্তিক বিশ্ব ব্যবস্থা' সম্পর্কে উৎসাহ জাগাতে চেয়েছিলেন৷ শ্রোতারা বিনম্রভাবে জার্মানি থেকে আসা ভদ্রলোকের কথা শুনে তারপর ভারতের বাস্তবের সঙ্গে তাঁর পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন৷ সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কা, রাষ্ট্র হিসেবে পাকিস্তানের অস্তিত্ব না থাকার দুশ্চিন্তা, দারিদ্র, গণতন্ত্র না হওয়া সত্ত্বেও চীনের বিশাল সাফল্য ইত্যাদি বিষয় আলোচনায় উঠে এসেছে৷ ক্যোলারের পূর্বসূরি ইয়োহানেস রাউ ৭ বছর আগে ভারত সফরে এসে বিশ্বায়ন প্রক্রিয়ার সমালোচনা করেছিলেন৷ কিন্তু তিনি এমন একটা সময়ে ভারতে এসেছিলেন, যখন সেদেশ সবে বিশ্বায়নের সুবিধেগুলি ভোগ করতে শুরু করেছে৷ ফলে কেউই তাঁর যুক্তি বুঝতে পারেন নি৷ আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের প্রাক্তন প্রধান হিসেবে ক্যোলার অবশ্য গোটা বিশ্ব দেখেছেন, তাঁর চিন্তাধারাও তেমন রাজনৈতিক নয়৷ তিনি জানেন, বিশ্বে কোন কোন বিষয় নিয়ে তর্ক-বিতর্ক চলছে, তিনি ইংরাজিও জানেন৷ বিদেশে থাকাকালীন তিনি ভারতীয় এলিট শ্রেণীর মানুষের সঙ্গে মিশেছেন৷ ভারতের আর্থিক কমিশনের প্রধান বিজয় কেলকারের সঙ্গে দেখা হতেই পুরানো বন্ধুর মত ক্যোলার তাঁকে উষ্ণতার সঙ্গে স্বাগত জানালেন৷ আইএমএফ-এর সময় থেকেই তিনি ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ড.মনমোহন সিং-কে চেনেন৷

Horst Köhler in Indien Bundepräsident
মহাত্মা গান্ধীর সমাধির সামনে সস্ত্রীক ক্যোলারছবি: AP

ক্যোলার যখন শুনলেন, যে আগামী ১০ বছরের মধ্যে ভারতের রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা আজকের তুলনায় ১০ গুণ বেড়ে যাবে, তখন তিনি একদিকে যে কোন ইউরোপীয় রাজনীতিকের মত পরিবেশ দূষণের মাত্রা নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়লেন বটে, কিন্তু অন্যদিকে তিনি এবিষয়েও সচেতন ছিলেন, যে বিষয়টি ভারতের জন্য যথেষ্ট গর্বের৷ তারপর তিনি শুনলেন, ইদানিং ভারত থেকে জার্মানিতে সরাসরি বিনিয়োগের মাত্রা ভারতে জার্মান বিনিয়োগের তুলনায় অনেক বেড়ে গেছে৷ তিনি রসিকতা করে বললেন, কোন ভারতীয় যখন তাঁকে বলেন, আমি একটা জার্মান কোম্পানি কিনতে চাই, তখন তাঁর বেশ নার্ভাস লাগে৷ মনে হচ্ছিল, জার্মান প্রেসিডেন্ট খালি হাতে এসেছেন৷ দ্বিপাক্ষিক ‘কৌশলগত সহযোগিতা'র আওতায় ভারত জার্মানির কাছ থেকে অস্ত্রশস্ত্র ও পরমাণু বিদ্যুত কেন্দ্রের প্রত্যাশা করে, যদিও জার্মানি তা দিতে অপারগ৷ প্রেসিডেন্ট বিলক্ষণ বুঝলেন, যে জার্মানি আর চীন ও ভারতের পর্যায়ে নেই৷ তাহলে ভবিষ্যতে জার্মানির প্রভাব কি থাকবে? অনেকটা বিনয়ের সঙ্গে ক্যোলারের উত্তর, নির্ভরযোগ্যতা ও বিশ্বাসযোগ্যতাই জার্মানির আসল ক্ষমতা৷

প্রতিবেদক : সঞ্জীব বর্মন

সম্পাদনা : আব্দুল্লাহ আল-ফারূক