1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ক্রুজ ট্রিপের রমরমা

১১ মে ২০১৭

ক্রুজ ট্রিপ এখন পর্যটন শিল্পের সোনার হাঁস, নিয়মিত সোনার ডিম পাড়ে৷ ক্রুজ জাহাজগুলি যেন ভ্রাম্যমান দ্বীপ, তা-ও আবার ভূমধ্যসাগরে – সঙ্গে রয়েছে খানাপিনা, নাচগান, শরীরচর্চা, এক কথায় যা প্রাণ চায়৷

https://p.dw.com/p/2clyT
Europa 2 Kreuzfahrtschiff
ছবি: Wikipedia/Brian Burnell

পর্যটন শিল্পের সোনার হাঁস

সাগরের বুকে ছুটি কাটানোর নাম ক্রুজ৷ ক্রুজে যারা যান, তারা একদিকে সমুদ্র, অন্যদিকে নানা দেশ দেখতে আর উপভোগ করতে চান৷ হোটেল তো সঙ্গেই আছে, শুধু সুটকেস খুলে জামাকাপড় বের করে নিলেই হলো৷ রথ দেখা আর কলা বেচার আদর্শ হলো এই ক্রুজ ট্রিপ৷

গতবছর বিশ লাখ জার্মান গিয়েছিলেন ক্রুজ ট্রিপে৷ কিসের আকর্ষণে? এক যাত্রী বললেন, ‘‘প্রথম ক্রুজ ট্রিপটা সত্যিই দারুণ, প্রথমবার এ রকম একটা জাহাজ দেখা৷ বিশেষ করে ডাঙা থেকে এলে প্রথমে অনুভূতিটা হজম করতে হয়৷’’

হামবুর্গ বন্দর থেকে ক্রুজ শিপগুলো ছাড়ে ইংল্যান্ড, ফ্রান্স ও স্পেনের উদ্দেশ্যে৷ হামবুর্গের পর্যটন বিশেষজ্ঞ উলরিশ রাইনহার্ড টুরিজমের হালের ট্রেন্ডগুলো নিয়ে চর্চা করেন৷ তাঁর মতে, ‘‘ক্রুজ জাহাজগুলো হলো ভবিষ্যতের সব ভাসন্ত দ্বীপের মতো৷ চড়লে মনে হবে যেন একটা নতুন অভিজ্ঞতা হচ্ছে৷ দূরে দিগন্ত, আবার প্রতিটি সকালে একটি করে নতুন শহর, যা ঘুরে দেখা যায়৷ নিরাপত্তা রয়েছে, জাহাজে নতুন নতুন লোকের সঙ্গে আলাপ হয়৷ সব মিলিয়ে ক্রুজ ট্রিপের ব্যবসা বাড়ার বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে৷’’

ক্রুজের রকমফের

ইউরোপীয়দের বিশেষ প্রিয় হলো ভূমধ্যসাগর ক্রুজ৷ এখানে গরমকালে বিশেষ বৃষ্টি হয় না, মানে আকাশ নীলই থাকে৷ ওদিকে জাহাজ নোঙর ফেললে স্পেনের বার্সেলোনার মতো সুন্দর শহর ঘুরে দেখা যায়

স্ক্যান্ডিনেভিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ক্রুজ যাত্রীদের পছন্দ নরওয়ে৷ আর নরওয়ে মানেই রাজধানী অসলো৷

ক্রুজ জাহাজে মনোরঞ্জনের কর্মসূচি ক্রমেই আরো আকর্ষণীয় হয়ে উঠছে৷ জাহাজের ডেক-এ ঘাস ছাড়াই গল্ফ খেলা যায়৷ সন্ধ্যায় থাকে নানা ধরনের কনসার্ট আর স্টেজ শো৷ ওয়েলনেস বা ফিটনেস, মানে ওয়ার্কআউট করার জিম – এ সবই আছে৷

ওয়ার্কআউটের পর ভালো খাওয়াদাওয়া না হলে কি চলে? অধিকাংশ ক্রুজ শিপ খানাপিনার ব্যাপারে যে কোনো তিন বা পাঁচ তারা রেস্টুরেন্টের সঙ্গে টক্কর দিতে পারে৷

ক্রুজযাত্রীদের পছন্দ-অপছন্দ

ক্রুজ শিপের আকর্ষণ যত বাড়ছে, সেই অভিজ্ঞতা উপভোগ করার মতো লোকের সংখ্যাও তত বাড়ছে৷ প্রফেসর উলরিশ রাইনহার্ড বলেন, ‘‘আগে লোকে ক্যাপ্টেনস ডিনার বলতে যা বুঝতো, সুট-টাই বা বল-ড্রেস পরে ক্যাপ্টেনস টেবিলে বসে খেতো, আজ তা সাধারণ মানুষদের জন্য চব্বিশ ঘণ্টা খোলা থাকে – শুধু খানাপিনাই নয়, বরং মনোরঞ্জন বা সময় কাটানোর জন্য বাকি যা কিছু করা যায়, সেখানেও ক্রুজ জাহাজগুলো অনেকদূর এগিয়েছে৷’’

কিছু ক্রুজ ট্রিপ আবার বিশেষ ধরনের গ্রাহকদের কথা ভাবে – যেমন কোপেনহেগেন থেকে গ্যোটেবর্গ পর্যন্ত তিন দিনের ‘ফুল মেটাল ক্রুজ’, এটা হলো হার্ডরক ফ্যানদের জন্য৷ এ ক্ষেত্রে আওয়াজটা একটু বেশি হবে আর সুযোগ বুঝে আরো একটা-দু’টো উলকি আঁকিয়ে নিতে পারা যাবে৷

সে তুলনায় ছোট ছোট জাহাজে নদীবক্ষে রিভার ক্রুজ অনেক বেশি শান্ত৷ যেমন ড্যানিউব নদীর বুকে দক্ষিণ জার্মানির পাসাউ শহর থেকে রোমানিয়া পর্যন্ত৷ প্রফেসর উলরিশ রাইনহার্ড বললেন, ‘‘রিভার ক্রুজ চিরকালই জনপ্রিয়, বিশেষ করে ড্যানিউব নদীর ওপর রিভার ক্রুজ, কারণ এভাবে ইউরোপের বিভিন্ন বড় শহর ঘুরে দেখা যায়৷ বহু মানুষ সাগরে যেতে চান না, বরং প্রতিটি মিনিট ডাঙার কাছাকাছি থাকতে চান৷’’

এবার শুধু ক্রুজ জাহাজগুলোকে আর একটু পরিবেশবান্ধব হয়ে উঠতে হবে৷ এজন্য আরো ভালো ইঞ্জিন ও সুট ফিল্টার বসাতে হবে৷ তাহলেই ক্রুজপ্রেমীরা বিবেকের দংশন ছাড়াই ক্রুজ ভ্রমণে যেতে পারবেন – আর ব্যবসাও চলবে ভালো৷

সুসানে ডাউস/এসি