1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভর্কুকি নিয়ে সংকট

অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি১৩ জুন ২০১৪

মোদী সরকার এই প্রথম সব থেকে বড় আন্তর্জাতিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে চলেছে৷ কৃষিপণ্যের ভর্তুকি ইস্যু ডাব্লিউটিও-র এক্তিয়ারের বাইরে রাখার জন্য বিকাশমুখী দেশগুলির প্রয়াস বানচাল করে দিতে চাইছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউ দেশগুলি৷

https://p.dw.com/p/1CHQR
ছবি: Abdus Salam

জুন মাসে জেনিভায় বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার আসন্ন সম্মেলনে ভারতসহ বিকাশমুখী দেশগুলির জন্য পুরানো সংকট আবার নতুন করে দেখা দিতে পারে৷ বিকাশমুখী দেশগুলির দাবি, গরিব কৃষি পরিবারদের খাদ্য নিরাপত্তা দিতে সরকার সমর্থন মূল্যে তা বাজার থেকে কিনে মজুত করতে পারে, যাতে তা ভরতুকি দামে গরিব ও কৃষি পরিবারদের মধ্যে বিতরণ করা যায়৷

এই দাবির তীব্র বিরোধিতা করে এসেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত রাষ্ট্রসহ ধনী দেশগুলি৷ সফলভাবে এর মোকাবিলা করাই হবে নতুন মোদী সরকারের সামনে এখন সব থেকে বড় আন্তর্জাতিক চ্যালেঞ্জ৷ কারণ ভারতের বর্তমান খাদ্য সুরক্ষা আইন অনুসারে সরকার নির্ধারিত সমর্থন মূল্য বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার চলতি কৃষি পণ্য চুক্তি নির্ধারিত ভরতুকির মাত্রা ছাড়িয়ে যাবার আশঙ্কা আছে৷ সে ক্ষেত্রে ডবলিউটিও দেশগুলি ভারতের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে পারে৷ পরিস্থিতি সামাল দিতে ভারতকে নিতে হবে ব্রিকস গোষ্ঠীর দেশগুলির সাহায্য৷ বিশেষ করে চীনের৷ ব্রিকস গোষ্ঠীতে আছে ভারত ছাড়া ব্রাজিল,রাশিয়া,চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকা৷ ব্রাজিল, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকাকে নিয়ে ভারতকে আরো বেশি চাপ সৃষ্টি করতে হবে৷ মোদী সরকার এই কাজে যদি সফল হয়, তাহলে আন্তর্জাতিক শক্তি হিসেবে ভারত এক ধাপ এগিয়ে যাবে, প্রতিষ্ঠিত হবে মোদী সরকারের কূটনীতি এবং কৌশলনীতির সাফল্য৷

কয়েকটি দেশের তাগাদায় বিশ্ব বাণিজ্য সুষ্ঠু ও সহজতর করতে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার চুক্তি বাস্তবায়নে অগ্রগতি হয়েছে, যাতে বালি মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে ধার্য ৩১শে জুলাই-এর সময়সীমার মধ্যে তা কার্যকর হয়৷ কিন্তু দুঃখের বিষয়, ভারত তথা বিকাশমুখী দেশগুলির উত্থাপিত খাদ্য নিরাপত্তা এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ইস্যুগুলিতে কোন অগ্রগতি হয়নি, যা ভারত দাবি করে আসছে৷

Bio-Lebensmittel in Bangladesch EINSCHRÄNKUNG
কয়েকটি দেশের তাগাদায় বিশ্ব বাণিজ্য সুষ্ঠু ও সহজতর করতে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার চুক্তি বাস্তবায়নে অগ্রগতি হয়েছেছবি: Abdus Salam

২০০৮ সালে বিশ্ব মন্দার কারণে সদস্য দেশগুলি দোহা চুক্তি ঐকমত্য থেকে সরে আসে৷ বলা হয়, চলতি কৃষি চুক্তিতে সরকার খাদ্য সুরক্ষার জন্য খাদ্য ভাণ্ডার গড়ে তুলতে পারে, কিন্তু তা কিনতে হবে বাজার দামে৷ ঃনঃসরকার নির্ধারিত দামে নয়৷ সরকার নির্ধারিত দামে হলে তা হবে ভরতুকির নামান্তর৷

উরুগুয়ে বৈঠকে অবশ্য কিছুটা নমনীয় প্রস্তাবে বলা হয় যে, সরকার নির্ধারিত সমর্থন মূল্য ১০ শতাংশের বেশি হতে পারবে না৷ ভারতের বক্তব্য, সমর্থন মূল্য ধার্য হয়েছিল ১৯৮৬-৮৮ সালের দামে৷ এর সঙ্গে মুদ্রাস্ফীতি যোগ করা হয়নি৷ তাই জি-৩৩ গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে ভারত বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার কৃষিপণ্য চুক্তিতে সংশোধনের দাবি জানায়৷ মুদ্রাস্ফীতি দিকটি বিবেচনা করতে অস্বীকার করে উন্নত দেশগুলি৷ ভারত কিন্তু এই দাবিতে অবিচল আছে৷ কারণ ভারত মনে করে এর সঙ্গে যেহেতু স্বল্পবিত্তদের জীবিকা, খাদ্য সুরক্ষা এবং গ্রামীণ উন্নয়নের প্রশ্ন জড়িত, তাই এই দাবি থেকে সরে আসা অসম্ভব৷

এই দাবি ২০০১ সালে দোহা সম্মেলনে বহুপাক্ষিক বাণিজ্য আলোচনার জন্য এক সর্বাত্মক উন্নয়ন অ্যাজেন্ডায় গৃহিত হয়েছিল৷ গত বছর অর্থাৎ ২০১৩ সালের ডিসেম্বর মাসে ইন্দোনেশিয়ার বালি সম্মেলনেও এই ইস্যুতে ভারতকে একঘরে করার চেষ্টা হয়েছিল৷ পরে শেষ মুহূর্তে এই প্রথম মোটামুটি একটা সহমতের ইঙ্গিত পাওয়া যায়৷ বলা হয় যতদিন না একটা স্থায়ী সমাধান খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে, ততদিন একটা অন্তর্বর্তী মেকানিজম বলবৎ থাকবে৷ বিকাশমুখী দেশগুলির প্রশ্ন, ধনী দেশগুলির অনমনীয় অবস্থান নিয়ে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য