1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

খাবার ‘সেলাই' করেন যে শিল্পী

১০ জুলাই ২০১৯

মেলায় গেলে মাটির তৈরি ফলমূল বা অন্যান্য খাদ্য বেশ পরিচিত দৃশ্য৷ব্রিটিশ শিল্পী শুধু সুতা ও উল দিয়ে প্রায় নিখুঁত কেক-পেস্ট্রি, পাঁউরুটি ইত্যাদি তৈরি করছেন৷ ইউরোপের গণ্ডী ছাড়িয়ে তাঁর শিল্পকর্ম বিভিন্ন দেশে পরিচিতি পাচ্ছে৷

https://p.dw.com/p/3LpYt
DW Sendung Euromaxx Häkelkünstlerin Kate Jenkins
ছবি: DW

বার্সেলোনা শহরে মিস্ত্রীদের এক শিল্পমেলায় কেট জেনকিন্স নিজের তৈরি রুটি-কেক-পেস্ট্রি তুলে ধরেন৷ রুচিশীল পরিবেশনা ও প্রায় নিখুঁত আকার-আয়তনের ফলে বোঝার উপায় নেই যে সেগুলি মোটেই আসল নয়৷ কুরুশশিল্পী হিসেবে কেট জেনকিন্স বলেন, ‘‘এখন আমি প্যাটিসারি কেক তৈরির কাজ শেষ করছি৷ এখানে কিশমিশ বসানো পাউরুটি রয়েছে৷ সঙ্গে চকোলেট রুটি ও ডেনিশ পেস্ট্রি৷ সেগুলি এমনভাবে রাখতে হবে যাতে দেখলে হুবহু আসল বলে মনে হবে৷''

তাঁর স্টলের নাম ‘কেটস বেক্স'৷ যেমন কথা তেমন কাজ৷ সেখানে ছোট বান রুটি থেকে শুরু করে বেগেল্স, ছোট কেক – কী না রয়েছে! প্রথমে কেট শুধু নানা ধরনের পাঁউরুটি বুনতে চেয়েছিলেন৷ সেখান থেকেই গোটা উদ্যোগের সূচনা৷ কেট বলেন, ‘‘আকর্ষণীয় দেখতে পাঁউরুটি তৈরি করা সত্যি কঠিন কাজ৷ শুধু রুটি তৈরি করাই আমার প্রাথমিক চ্যালেঞ্জ ছিল৷ তারপরবিভিন্ন ধারার বেকিংও কেক তৈরির শিল্প নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে আমি দু'টি ধারা একত্র করতে চেয়েছিলাম৷ পাঁউরুটির পাশাপাশি বেকিং কাউন্টার রেখে নিখুঁত মেলবন্ধন ঘটাতে চেয়েছিলাম৷''

কেট জেনকিন্স ব্রিটেনের ব্রাইটন শহরে বসবাস করেন৷ সেখানেই তাঁর কাজের জায়গা৷ বিভিন্ন খাদ্যকে শৈল্পিকভাবে ও কৌতূকের সঙ্গে তুলে ধরাই তাঁর বৈশিষ্ট্য৷

ব্রাইটন শহরের রুক্ষ সমুদ্রতট ও সুস্বাদু মাছ তাঁর বড়ই পছন্দ৷ এই দু'টি বিষয় থেকে প্রেরণা নিয়ে তিনি তাঁর সবচেয়ে সফল একক প্রদর্শনীর আয়োজন করেছিলেন৷ স্টলজুড়ে ছিল নানা ধরনের সিফুড বা সামুদ্রিক প্রাণী৷ কেট জেনকিন্স মনে করেন, ‘‘মনে হয় মাথায় আইডিয়া এলে সেটি কার্যকর করা পর্যন্ত সৃষ্টির কাজ চলতে থাকে৷ সামান্য একটি সুতাকে ত্রিমাত্রিক কোনো জাদুময় ও বাস্তবসম্মত বস্তুতে রূপান্তরিত করার প্রক্রিয়া আমাকে সচল রাখে৷''

তাঁর বর্তমান প্রকল্পেও কেট নিখুঁত সৃষ্টিকর্ম নিয়ে মেতে আছেন৷ বিশেষ একটি বেকারিতে তাঁর নিয়মিত যাতায়াত রয়েছে৷ পাউরুটি ও কেকের দোকানে সব রকম সম্ভাব্য পণ্যের খোঁজ চালিয়ে যান কেট৷

মাস চারেক আগে কেট জেনকিন্স এই প্রকল্পের কাজ শুরু করেন৷ তাঁর স্টুডিওতে প্রায় সব ধরনের, সব রঙের সুতা ও উল রয়েছে৷ প্রকল্পের রূপরেখা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘‘আমি নানারকম জিনিস নিয়ে পরীক্ষা চালাই৷ দেখলাম যে দু'টি সুতা একসঙ্গে বুনলে বেশ দ্রুত বাস্তবসম্মত প্রভাব সৃষ্টি করা যায়৷ সেলাই মেশিনে কোন কোন রঙের মিশ্রণ ঘটাবো, তা বেছে নিলে পাঁউরুটির জন্য সঠিক এফেক্ট সৃষ্টি করতে পারবো৷ বাদামি রঙের বিভিন্ন শেড বেছে নিয়ে ভুলত্রুটির মাধ্যমে উন্নতির কাজ চালিয়ে যেতে পারি৷''

গত শতাব্দীর ষাটের দশকের এক সেলাই মেশিন চালিয়ে তিনি তিন থেকে চার ঘণ্টার মধ্যে একটি পাঁউরুটি সৃষ্টি করতে পারেন৷ কেট বলেন, ‘‘আমি অত্যন্ত সূক্ষ্ম সূচ বেছে নিয়ে সঠিক স্টিচ করি৷ তারপর ছোট্ট এক ধরনের রাস্পবেরি তৈরি করে সেটি হাতে করে সেলাই করে কেকের উপর ঠিক জায়গায় বসিয়ে দেই৷''

বার্সেলোনা শহরের শিল্পমেলায় দর্শকরা তাঁর সৃষ্টিকর্ম দেখে মুগ্ধ৷ ‘কেটস বেক্স' অদূর ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক স্তরেও পরিচিত হতে চলেছে৷ সেলাই করে তৈরি কেক-পেস্ট্রি বা রুটি কখনো বাসি হয় না৷ একেবারে প্রথম দিনের মতোই তাজা থাকে৷

পিয়ের প্রেচ/এসবি