1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

খুনের ঘটনায় পাসপোর্ট জালের তীব্র নিন্দা করল ইইউ

২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১০

উঠে আসছে জেমস বন্ডের ছবির কথা৷ দুবাইতে হামাস নেতা খুনের ঘটনায় ইসরায়েলি গোয়েন্দাসংস্থা মোসাদের এজেন্টরা ইউরোপীয় জালি পাসপোর্ট নিয়ে সেদেশে ঢুকেছিল, দুবাইয়ের এই অভিযোগের জবাবে ইইউ পাল্টা নিন্দা করেছে পাসপোর্ট জাল করার৷

https://p.dw.com/p/M8jJ
মাহমুদ আল মাহবুর খুনিদের একজন৷ দুবাই পুলিশের দেওয়া ফোটো৷ছবি: picture-alliance/dpa

ব্রাসেলস তোলপাড় ছিল সোমবার৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা বিবৃতির পর বিবৃতি দিয়েছেন, কিন্তু একটাও সরাসরি অভিযোগ শোনা যায়নি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে৷ নিন্দা করেছেন হামাস নেতা হত্যার ঘটনার৷ নিন্দা শোনা গেছে পাসপোর্টের মত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জাল করার ঘটনারও৷ কিন্তু যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে হত্যাকান্ডের ঘটনাস্থল দুবাই, সেই ইসরায়েলের সরকারি গোয়েন্দাসংস্থা মোসাদের নামগন্ধও ছিল না এইসব নিন্দাবাদের কোথাও৷

প্রথমে অভিযোগের তির ছুঁড়েছিল দুবাই খোদ৷ হামাস নেতা মাহমুদ আল মাহবুকে জানুয়ারি মাসে দুবাইয়ের একটি হোটেলে সেদেশে হত্যা করে চলে যায় কয়েকজন বিদেশি৷ তদন্তে নেমে দুবাইয়ের পুলিশবাহিনী এবং গোয়েন্দারা জানান, এই হত্যাকান্ডের নেপথ্যে নাকি ছিল ইসরায়েলি গোয়েন্দাসংস্থা মোসাদের একটি দল৷ বলা হয়, ব্রিটেন, ফ্রান্স, আয়ারল্যান্ড আর জার্মানির জালি পাসপোর্ট, ক্রেডিট কার্ড এইসব প্রমাণপত্র নিয়ে তারা ঢুকেছিল দুবাইতে৷ খুন সেরে ফের ফিরে গেছে তারা ইসরায়েলে৷ এরপরই শুরু হয় তোলপাড়৷ সোমবার ইইউ-র পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা তড়িঘড়ি বসে যান বৈঠকে৷ সংক্ষিপ্ত বৈঠকের পর সংক্ষিপ্ততর বিবৃতিতে বলা হয়, ইইউ-র পাসপোর্ট জালি করার ঘটনার কড়া নিন্দা করছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা৷ নিন্দা করছেন হত্যার ঘটনারও৷ তাঁরা মনে করেন, ইউরোপীয় নাগরিকদের পরিচয়পত্র চুরি করার সামিল এই অপরাধ৷ পাসপোর্টই নয়, জাল করা হয়েছে ক্রেডিট কার্ডও৷ বলা হয়েছে, দুবাইয়ের তদন্তের সাফল্যে অভিনন্দন জানাচ্ছে ইইউ৷ তদন্তের প্রয়োজনে সব রকমের সহায়তা করতেও তারা রাজি৷

EU Israel Außenminister Avigdor Lieberman in Brüssel
ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আভিগডর লিবারমান হাসতে হাসতে জেমস বন্ডের ছবির প্রসঙ্গ তুললেন ব্রাসেলসে সোমবারছবি: AP

যাদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ, সেই মোসাদের তো কোন প্রশ্নই ওঠে না, মুখ খোলেনি ইসরায়েলও৷ ঘটনা প্রসঙ্গে ‘হ্যাঁ' অথবা ‘না', কোনটাই শোনা যায়নি তাদের কাছ থেকে৷ ব্রাসেলসে ঘটনাচক্রে হাজির থাকা ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আভিগডর লিবারমান সাংবাদিকদের কৌতূহলী প্রশ্নের জবাবে বলে দিয়েছেন, ‘‘আপনারা বোধহয় প্রচুর জেমস বন্ডের ছবি দেখেন৷ ছবি দেখলে দেখুন৷ কিন্তু আরও সিরিয়াস ছবি দেখুন৷''

এই মন্তব্যের অর্থ সাফ৷ গোয়েন্দা গল্পের মত কোন ঘটনাই ঘটায় নি ইসরায়েল৷ এ ধরণের খুনে জেরুসালেমের হাত রক্তাক্ত নয় মোটেই৷ কিন্তু, লিবারমানের এই উত্তরে খুশি নয় মিডিয়া৷ খুশি নয় অবশ্যই প্যালেস্টাইনি গোষ্ঠী হামাসও৷

হামাসের বরং এই পরিস্থিতিতে ইউরোপের কাছে আর্জি, ইসরায়েল যা কান্ড করেছে তাতে তাদের এখনই সন্ত্রাসবাদী রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করা উচিত ইউরোপীয় ইউনিয়নের৷ হামাসের এক প্রথম সারির মুখপাত্র সামি আবু জুহরি গাজা স্ট্রিপে সোমবার রয়টার্সকে বলেছেন, ইসরায়েলের এতবড় একটা হত্যাকান্ডের প্রতিক্রিয়ায় ইউরোপ যে বিবৃতি দিয়েছে, তাতে না আছে দাঁত না আছে নখ৷ ইউরোপীয় পাসপোর্ট জালি করার নিন্দাবাদ এই অপরাধের জন্য মোটেও যথেষ্ট নয়৷ আসল বিষয় নিয়ে কোন কথাই শোনা যায়নি ইউরোপের কাছে, বলেছেন হামাস মুখপাত্র আবু জহুরি৷

প্রতিবেদন : সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়

সম্পাদনা : আরাফাতুল ইসলাম