1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

গভীর সমুদ্রের তাপমাত্রা বাড়ছে

২৪ জুলাই ২০১০

অতি ধীরে, এবং তার তাৎপর্য যে কি, সে-বিষয়ে বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত নন৷ মাত্র কয়েক দশকের পর্যবেক্ষণে তা বলাও সম্ভব নয়৷ তবে আপাতদৃষ্টিতে মানুষের কার্যকলাপের সাথে তার কোনো সম্পর্ক নেই৷

https://p.dw.com/p/OTXu
Deep sea fish
গভীর সমুদ্রের মাছছবি: AP

গভীর সমুদ্র বলতে সাগরের দুই কিলোমিটার গভীরত্বে অথবা তারও নীচে৷ কিন্তু পৃথিবীর সমুদ্রাঞ্চলের প্রায় পঞ্চাশ ভাগই এই গভীরতায়৷ এবং আমাদের গ্রহের জলবায়ু নিয়ন্ত্রণে এই নীরব, হিমশীতল জলভাগের গুরুত্ব অসীম৷

অস্ট্রেলিয়ার সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ধন্য গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিএসআইআরও'র বিজ্ঞানীরা বলছেন, গভীর সমুদ্রে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে চলেছে, এবং তার মধ্যে সবচেয়ে লক্ষণীয় হল সমুদ্রের গভীরতম স্তরগুলির তাপমাত্রা বৃদ্ধি৷ এ'ধরণের সর্বাধিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে দক্ষিণ মেরু এবং উত্তর অতলান্তিকের কাছ থেকে৷

ঐ দু'টি এলাকাতেই অতি ঠাণ্ডা, লবণাক্ত জল ওপর থেকে নীচে নেমে আসে - যার ফলে ভূগোলক জুড়ে সামুদ্রিক প্রবাহগুলির সৃষ্টি হয়, এবং সেই সামুদ্রিক প্রবাহগুলিই আবার আমাদের জলবায়ু নির্ধারণ করে৷ যেমন ঐ সামুদ্রিক প্রবাহ ব্যতীত উত্তর ইউরোপে এরকম বাসযোগ্য পরিবেশ সম্ভব ছিল না৷

Coral Sea
গভীর সমুদ্রে ডুবুরিছবি: AP

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় সামুদ্রিক এবং বায়ুমণ্ডলীয় প্রশাসনের বিজ্ঞানীরা দেখেছেন যে, অস্ট্রেলিয়া এবং দক্ষিণ মেরুর মাঝে দক্ষিণ সমুদ্রের তাপমাত্রা প্রতি দশ বছরে এক ডিগ্রী সেলসিয়াসের একশো ভাগের তিন ভাগ করে বাড়ছে৷ প্রথমে তা খুব বেশী না মনে হতে পারে৷ কিন্তু অন্যভাবে ভাবতে গেলে, মানবজাতি যে হারে জ্বালানী ব্যবহার করে, তার প্রায় তিনগুণ পরিমাণ শক্তি সমুদ্রগুলি শুষে নিচ্ছে: ধরা যাক প্রতি পাঁচ সেকেন্ডে একটি করে হিরোশিমা বোমা! আসলে সমুদ্রগুলি হল এক ধরণের কার্বন ‘‘সিঙ্ক'', যেখানে প্রধানত কার্বন ডাইঅক্সাইড ধরা থাকে৷ মানুষের গতিবিধির ফলে যে কার্বন ডাইঅক্সাইড সৃষ্টি হয়, সাগর তার প্রায় এক-চতুর্থাংশ শুষে নেয়৷ আকাশে-বাতাসে যে কার্বন ডাইঅক্সাইড আছে, পৃথিবীর সমুদ্রগুলিতে তার প্রায় ৫০ গুণ ধরা আছে৷ মানুষ প্রতিবছর প্রায় ছয় বিলিয়ন টন কার্বন ছাড়ে৷ সে তুলনায় সাগরে ধরা আছে ৩৮ থেকে ৪০ ট্রিলিয়ন টন৷

সবচেয়ে বড় কথা, বর্তমানে পৃথিবীর সমুদ্রগুলি এখনও কার্বন শুষে চলেছে৷ কিন্তু তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে ঠিক সেটাই বদলাতে পারে৷ সেই সঙ্গে থাকবে সামুদ্রিক প্রবাহগুলির পরিবর্তন৷ প্রবাহের পরিবর্তনের ফলে সাগরের জলে পুষ্টিরও পরিবর্তন ঘটবে৷ কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে এই পরিবর্তন?

বিজ্ঞানীরা বলছেন, আরো পর্যবেক্ষণ চাই, আরো তথ্য চাই৷ আপাতত আমরা গভীর সমুদ্র সম্পর্কে যা জানি, তার চেয়ে মঙ্গলগ্রহ সম্পর্কে আমাদের ধারণা বেশী৷

প্রতিবেদন: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী

সম্পাদনা. রিয়াজুল ইসলাম