1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘গ্লোবাল করাপশন: ক্লাইমেট চেঞ্জ’

২০ মে ২০১১

জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়তে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে হবে এবং দুর্নীতির ঝুঁকি কমিয়ে আরো অনেক বেশি স্বচ্ছতা আনতে হবে৷ বলেছে, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল৷

https://p.dw.com/p/11K74
জলবায়ুর বহু ইস্যুকে ঘিরে নানা রকমের জটিলতা, অনিশ্চয়তা রয়েছেছবি: AP

সম্প্রতি ‘গ্লোবাল করাপশন: ক্লাইমেট চেঞ্জ' শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর ওপরে আরো তীক্ষ্ণভাবে নজর রাখতে হবে৷ বিভিন্ন নীতিও কার্যকর করা হবে৷ দুর্নীতির ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে এইরকম দেশগুলোর যে ব়্যাংকিং করেছে বার্লিন ভিত্তিক সংস্থাটি, তাতে দেখা যাচ্ছে, জিরো অর্থাৎ শূন্য রেটিং পাওয়া দেশ সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত৷ দশ রেটিংয়ের দেশ খুবই স্বচ্ছ অর্থাৎ দুর্নীতিমুক্ত৷

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বলছে, সবচেয়ে বেশি দুর্নীতির ঝুঁকিতে রয়েছে আফগানিস্তান৷ যার রেটিং ১.৪৷ অন্যদিকে থাইল্যান্ডের রেটিং ৩.৫৷ জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি আটকাতে বিশ্বব্যাপী বিনিয়োগের অঙ্ক ২০২০ সালের মধ্যে প্রায় ৭শ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে৷ প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, ‘‘যেখানে নতুন এবং অপরীক্ষিত অর্থবাজার আর কৌশলী ব্যবস্থার খাতে প্রচুর অর্থের ছড়াছড়ি, সেখানে সবসময়ই দুর্নীতির ঝুঁকি থাকে৷''

জলবায়ুর বহু ইস্যুকে ঘিরে নানা রকমের জটিলতা, অনিশ্চয়তা আর নতুনত্বের কারণে দুর্নীতির ঝুঁকিও খুব বেশি৷ জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলা করার প্রধান যে আর্থিক হাতিয়ার, তাকে বলা হয় কার্বন বাজার৷ এ হলো গিয়ে কার্বন নির্গমন হ্রাসের লক্ষ্যে অর্থনৈতিক প্রণোদনা দিয়ে দূষণ নিয়ন্ত্রণের এক বাজার কেন্দ্রিক ব্যবস্থা৷ কিন্তু প্রতারণামূলক কাজকর্মের জন্য ব্যবস্থার টালমাটাল অবস্থা৷

এদিকে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল জার্মানির সভাপতি এডা ম্যুলার বলেন, ‘‘আজকাল জলবায়ু সংরক্ষণের জন্যে প্রচুর অর্থ ব্যয় হচ্ছে৷ সরকারি, বেসরকারি সব খাতেই৷ এইজন্যে আমরা মনে করি, একদিকে জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলা করা অত্যন্ত প্রয়োজন, অন্যদিকে এক্ষেত্রে আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতি যাতে না ঘটে সেদিকেও নজর রাখা উচিৎ৷ অর্থাৎ এক্ষেত্রে সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা প্রয়োজন৷ জানতে হবে কোথা থেকে অর্থ আসছে, কী হচ্ছে৷''

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বলছে, বন সম্পদের ক্ষেত্রেও বড় রকমের দুর্নীতি রয়েছে৷ আর এর কারণ হচ্ছে আন্তর্জাতিকভাবে গাছের চাহিদা খুব বেশি৷ তার সঙ্গে রয়েছে জমির দুর্বল মালিকানা বা জমির ওপরে অধিকারের অভাব৷ দেশাত্ববোধ রয়েছে এইরকম মানুষের সংখ্যা স্বল্প ৷

বিশ্ব ব্যাংকের হিসেব অনুযায়ী প্রতি বছর অবৈধভাবে গাছ কাটা বা সন্দেহজনক উৎস থেকে আয় হয় ১০ বিলিয়ন থেকে ২৩ বিলিয়ন ডলার৷ ইন্টারন্যাশনাল এমিশন্স ট্রেডিং এ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক হেনরি ডার্ভেন্ট বলেছেন, ‘‘জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে শুধু যে পরিবেশ বা প্রকৃতির ক্ষতি হচ্ছে তাই নয়, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাড়ছে ক্ষুধা, রোগ বালাই৷ পরিবেশ ছাড়া অন্যান্য ক্ষেত্রেও জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ছে, এর ফলে প্রতিনিয়ত পৃথিবীব্যাপী ছড়াচ্ছে সংক্রামক ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগ৷''

তাপদাহ ও জলবায়ুর অন্যন্য বিরূপ প্রভাবের কারণে হাজার হাজার মানুষের মুত্যু হচ্ছে৷ তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে ম্যালেরিয়া, লাইম ডিজিজ ও কলেরাসহ প্রতিনিয়ত খাদ্য ঘাটতি ও পুষ্টিহীনতার ঝুঁকি বাড়ছে৷ তাপ এবং কার্বনডাই অক্সাইডের কারণে বেড়ে যাচ্ছে অ্যাজমা এবং এলার্জি৷

ড্যান ফার্বার ও ড পল ইপসটেইন ‘‘বদলাচ্ছে পৃথিবী, বদলাচ্ছে স্বাস্থ্য: জলবায়ু বিপর্যয় কিভাবে আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি এবং এ ব্যাপারে আমরা কী করতে পারি'' শিরোনামে সম্প্রতি প্রকাশিত একটি বইয়ে এসব তথ্য দিয়েছেন৷ ২০১১ সালের এপ্রিলে ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া প্রেস বইটি প্রকাশ করেছে৷

বইটিতে তারা বলেছেন, আমরা একটি সম্প্রদায় হিসেবে, জাতি হিসেবে এবং বিশ্বের বাসিন্দা হিসেবে ক্রমবর্ধমান জলবায়ু বিপর্যয়কে কিভাবে নিচ্ছি এর সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত আমাদের স্বাস্থ্য৷

ড্যান ফার্বার একজন বিজ্ঞানবিষয়ক সাংবাদিক ও ইপসটেইন হাভার্ড মেডিকেল স্কুলের সেন্টার ফর হেলথ ও গ্লোবাল এনভায়রনমেন্টের সহযোগী পরিচালক৷

প্রতিবেদন: ফাহমিদা সুলতানা

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক