1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইউরোপের নিজস্ব ইসলাম

লোয়াই মুডহুন/এসি১৩ জানুয়ারি ২০১৫

প্যারিসের হত্যাকাণ্ড যাবৎ ইসলামধর্ম সহিংসতাপ্রবণ কিনা, তা নিয়ে বিতর্ক চলেছে৷ এর ফলে ইসলাম যে সফলভাবে জার্মান সমাজের অন্তর্ভুক্ত হয়ে উঠেছে, সেই সত্যটাই উপেক্ষিত হচ্ছে বলে মনে করেন লোয়াই মুডহুন৷

https://p.dw.com/p/1EJYr
Symbolbild Islam in Deutschland
ছবি: picture-alliance/Frank Rumpenhorst

স্বভাবতই প্যারিসের হত্যাকাণ্ড থেকে আবার কতোগুলি পুরনো, বুনিয়াদি প্রশ্ন মাথা চাড়া দেয়: ইসলাম কি বস্তুত একটি মানববিদ্বেষি, সহিংসতাপ্রবণ ধর্ম? এই বিশ্বব্যাপী ধর্মের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাবলী থেকে কি জিহাদিদের মারণযজ্ঞের কোনো সাফাই পাওয়া যায়? অপরদিকে: মুসলিমদের জার্মান সমাজের অঙ্গ করে তোলার প্রচেষ্টা কি ব্যর্থ হয়েছে?

ন্যায্য প্রশ্ন বৈকি৷ তবুও তারা মূল সমস্যার ধারে-কাছে আসে না, কেননা আসল প্রশ্ন হল: আধুনিক সভ্যতার জীবনধারা এবং স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার সঙ্গে ইসলামধর্ম নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতে পারে কিনা৷

‘‘ইসলাম'' বলে যে কোনো অনড়, অপরিবর্তনীয় একক ধর্ম নেই, তা ইতিমধ্যে সকলেই আঁচ করেছেন৷ মুসলিমরাও সকলে এক নন – বিশ্বের কোনো কোণাতেই নয়৷

Verterter der islamischen Dachverbaende in Deutschland
জার্মানির বিভিন্ন মুসলিম সমিতির প্রতিনিধিরা চিন্তিতছবি: DW/Tuncay Yildirim

বস্তুত প্রতিটি ইসলাম অধ্যুষিত দেশে পৃথক এক ধরনের ইসলাম প্রচার ও পালন করা হয়৷ সৌদি আরবের ওয়াহাবি প্রভাবিত গোঁড়া ইসলামের সঙ্গে ইরানের শিয়া প্রভাবিত রাষ্ট্রীয় ধর্মের যেমন আকাশ-পাতাল ফারাক৷ অপরদিকে মালয়েশিয়া কিংবা তুরস্কের মতো অর্থনৈতিক বিচারে সফল মুসলিম দেশগুলিতে এক ধরনের বাস্তববাদী, রক্ষণশীল ইসলাম আজ বহুকাল হল বিরাজ করছে৷

এ থেকে বোঝা যায় যে, শেষমেষ মুসলিমরা নিজেরাই নির্ধারণ করেন, তারা ‘‘ইসলামি'' বলতে কী বোঝেন – সে ক্ষেত্রে তারা কবে কোথায় বাস করছেন, সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়৷ সংখ্যাগুরু সুন্নি ইসলামে আধিপত্যপরম্পরা নেই এবং ক্যাথলিক গির্জার পোপ-এর মতো কোনো চূড়ান্ত ধর্মগুরু নেই৷ যা আমাদের সেই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নটির মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেয়: ইউরোপ কোন ধরনের ইসলাম চায়?

সফল অন্তর্ভুক্তি

আবেগপূর্ণ বিতর্কের ফলে আমরা হয়তো বিগত কয়েক বছরের লক্ষণীয় সাফল্যের কথা ভুলে যাই৷ ২০০৫ সালে ‘জার্মান ইসলাম সম্মেলন' (ডিআইকে) প্রতিষ্ঠা যাবৎ জার্মানির স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র ভিত্তিক সমাজব্যবস্থায় ইসলামের অন্তর্ভুক্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে – যার ফলে জার্মান মানসিকতায় রাষ্ট্রের সংজ্ঞায় একটি বিপুল পরিবর্তন সাধিত হয়েছে৷

সব বিরোধ-প্রতিরোধ সত্ত্বেও রাষ্ট্র ও তার মুসলিম বাসিন্দাদের মধ্যে এই মুক্ত সংলাপ পারস্পরিক সমঝোতা এবং এ দেশে ইসলামের ভাবমূর্তিকে পুরোপুরি বদলে দিয়েছে৷ আজও ‘‘ইসলাম''-কে নানা অজানা ভীতি ও আশঙ্কা প্রকাশ করার কাজে অপব্যবহার করা হয়; তা সত্ত্বেও তথাকথিত ‘‘অন্তর্ভুক্তির রাজনীতি''-র সাফল্য অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই৷

ইতিমধ্যে জার্মানিতে রাজ্য পর্যায়েও সরকারি স্কুলগুলিতে ইসলাম শিক্ষার ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে৷ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামি ঈশ্বরতত্ত্ব একটি পাঠ্য বিষয়৷ এ ভাবেই জার্মানি এবং ইউরোপে একটি বাস্তবিক ইউরোপীয়, গণতন্ত্রের উপযোগী ইসলামের বিকাশ ঘটতে শুরু করেছে, যা বাইরে থেকে অন্যান্য গোত্রের ইসলাম আমদানি করার অপেক্ষা রাখে না৷

যেহেতু ইসলাম চিরকালই সময়ানুগ এবং ইসলামি ঈশ্বরতত্ত্ব প্রধানত রাজনৈতিক ক্ষমতা থেকে উদ্ভূত, রাষ্ট্র এবং সমাজকে সর্বসাধ্য প্রয়োগ করতে হবে, যাতে ইসলামের এই ইউরোপীয় সংস্করণ যথাশীঘ্র সম্ভব গড়ে ওঠে৷ তার যে কোনো বিকল্প নেই, প্যারিসের সর্বাধুনিক হত্যাকাণ্ডই তার প্রমাণ৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য