1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

চীনের ট্যালেন্ট শো জিতলেন বাহুহীন পিয়ানিস্ট লিউ উই

১৩ অক্টোবর ২০১০

মানুষের অসাধ্য কিছুই নেই৷ চেষ্টা আর ধীশক্তি থাকলে মানুষ অনেক অসম্ভবকেই সম্ভব করতে পারে৷ সম্প্রতি চীনের বাহুহীন এক তরুণ তেমনই একটি সাফল্যের স্বাক্ষর রেখেছেন৷

https://p.dw.com/p/Pczz
ছবি: AP

লিউ উই নামের ২৩ বছরের এই চীনা তরুণ সাংহাই স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ‘চায়না গট ট্যালেন্ট' নামের রিয়্যালিটি শো'টির চূড়ান্ত পর্বে স্রেফ পায়ের আঙুল দিয়ে পিয়ানো বাজিয়ে তার সুর মূর্চ্ছনায় প্লাবিত করেছেন সহস্র সংগীতপিপাসু দশর্ক-শ্রোতার চিত্ত৷

চীনের অন্যতম জনপ্রিয় এই রিয়্যালিটি শো'তে পায়ের আঙুলে পিয়ানোতে সুর তুলে ২৩ বছরের এই তরুণ পিয়ানিস্ট জিতেছেন সেরা'র পুরস্কারটিও৷ মেধাবী তরুণ লিউ উই পিয়ানোতে ‘ইউ আর বিউটিফুল' বাজিয়েছেন৷

ইতোমধ্যেই সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে তাঁর, তাঁকে কেউ কেউ স্কটিশ গায়িকা সুসান বয়েলের সঙ্গেও তুলনা করছেন৷ স্কটিশ গায়িকা সুসানও ব্রিটেন'স গট ট্যালেন্ট শোতে বিচারকদের রীতিমত তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন৷

লুকোচুরি খেলার বয়স ছিলো তখন৷ মাত্র দশ বছর বয়সের একটি দুর্ঘটনা, বালক লিউ উই খেলার সময় অকস্মাৎ হাই ভোল্টেজের বৈদ্যুতিক তারের ওপর গিয়ে পড়লে সে দূর্ঘটনায় তাঁর দুই বাহু হারিয়েছিলেন৷

Flash-Galerie China Liu Wei
লিউ উই পিয়ানোতে ‘ইউ আর বিউটিফুল' বাজিয়েছেনছবি: AP

সাংহাই স্টেডিয়ামের সেই অনুষ্ঠানে লিউ যখন বলছিলেন, ‘আমার হাত নেই তো কি! একজোড়া নিখুঁত সুন্দর পা তো রয়েছে!' তাঁর এই কথায় উপস্থিত হাজারো দর্শক শ্রোতা আবেগাক্রান্ত হয়ে পড়েছিলো৷ পায়ের আঙুলে পিয়ানো বাজিয়ে বেইজিং নিবাসী লিউ উই নিকটতম প্রতিদ্বন্দী ঝ্যাং ফেংজিকে হারিয়ে চীনের অন্যতম এই রিয়েলিটি শোর সেরা মনোনীত হয়েছেন৷

পিয়ানো শেখায় হাতেখড়ি তাঁর ১৯ বছর বয়সে৷ শৈশবে সঙ্গীতকার হওয়ার অধরা সেই স্বপ্নের চূড়াকে ছুঁতে লিউ শিখতে শুরু করেছিলেন পিয়ানো৷ বাহুহীন লিউ উই এর পায়ের আঙুল দিয়ে পিয়ানো শেখার এই ইচ্ছেটাকে স্রেফ পাগলামি ভেবেই তাঁর প্রথম পিয়ানো শিক্ষকটি চলে গিয়েছিলেন৷ কিন্তু তীব্র ইচ্ছাশক্তি আর সংগীতের প্রতি প্রেমের কারণেই লিউ উই ঠিকই পায়ের আঙুল দিয়ে পিয়ানো বাজানোর নিজস্ব রীতিটি আবিস্কার করে ফেলেছিলেন৷

‘চায়না গট ট্যালেন্ট' তাঁর সামনে পৃথিবীর দরজা খুলে দিয়েছে৷ নিভৃতে নিরন্তর সঙ্গীত সাধনায় লিউ নিজেকে তিলে তিলে যেভাবে পূর্ণ করেছেন৷ সাংহাইয়ের স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত সেই আয়োজনের সেরা নির্বাচিত হয়ে লিউ তাঁর প্রথম সাফল্যের ফিতেটিতে বুক স্পর্শ করলেন কেবল৷

এটি নিশ্চিৎ, সামনে এখনো অনেক সিঁড়িই বাকি যা তিন তাঁর অধ্যাবসায়, সংগীতপ্রেম আর মমতায় একে একে তিনি ডিঙিয়ে যাবেন৷ পায়ের আঙুলে পিয়ানোর রিডে বেজে উঠবে জীবনের জয়গান৷ জয়তু জীবন৷

প্রতিবেদন: হুমায়ূন রেজা

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক