1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

চীনের বিরুদ্ধে নতুন অভিযোগ অ্যামেরিকার

১৪ মে ২০২০

অ্যামেরিকার গবেষণা হ্যাক করছে চীন। নতুন অভিযোগ মার্কিন গোয়েন্দাদের। এ দিকে ব্রাজিলে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা।

https://p.dw.com/p/3cBmE
ছবি: picture-alliance/AP Photo/E. Peres

করোনা নিয়ে মার্কিন গবেষণা হ্যাক করার চেষ্টা করছে চীন। অভিযোগ অ্যামেরিকার ফেডারেল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন বা এফবিআই-এর। অ্যামেরিকার বিভিন্ন পরীক্ষাগার এবং গবেষকদের এ বিষয়ে সচেতন করা হয়েছে। এফবিআই-এর বক্তব্য, করোনা নিয়ে অ্যামেরিকা যা যা গবেষণা করছে, তার সমস্তটাই নজরে রাখতে চাইছে চীন। এবং সে কারণেই হ্যাকারের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে।

অ্যামেরিকার এই অভিযোগের এখনও পর্যন্ত কোনও উত্তর দেয়নি চীন। তবে অভিযোগটি যে গুরুতর, তা নিয়ে সন্দেহ নেই। করোনা সংক্রমণের একেবারে প্রথম পর্যায় থেকেই চীনের বিরুদ্ধে লাগাতার আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে অ্যামেরিকা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প একাধিকবার বলেছেন, চীনের উহান প্রদেশের একটি পরীক্ষাগার থেকেই করোনার সংক্রমণ ছড়িয়েছে। যদিও চীন এই অভিযোগ বার বার অস্বীকার করেছে। তবে এখনও পর্যন্ত ওই গবেষণাগারে বাইরের কাউকে ঢুকতে দেয়নি চীনের প্রশাসন। কিন্তু অ্যামেরিকার দাবি, ওই পরীক্ষাগারে কী ঘটেছিল, সে বিষয়ে তাদের কাছে তথ্য আছে। কী ভাবে অ্যামেরিকা সেই তথ্য পেলো, তা অবশ্য জানানো হয়নি। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, অ্যামেরিকার এই লাগাতার আক্রমণের জবাব দিতেই চীন এ বার নতুন পন্থা গ্রহণ করেছে। করোনা নিয়ে মার্কিন গবেষণা হ্যাক করে ট্রাম্প সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে চাইছে।

এ দিকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অ্যামেরিকার পাশাপাশি করোনার নতুন এপিসেন্টার বা উপকেন্দ্র হতে চলেছে ব্রাজিল। প্রতিদিনই রেকর্ড সংখ্যায় সেখানে করোনার সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। মৃত্যু হচ্ছে বহু মানুষের। বস্তুত, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মাসখানেক আগেই জানিয়েছিল, অ্যামেরিকার পরে দক্ষিণ অ্যামেরিকায় করোনার প্রকোপ বাড়বে। বাস্তবেও তাই ঘটছে। যদিও ব্রাজিল নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে দু'টি অভিমত আছে। একদলের বক্তব্য, এমনটাই হওয়ার ছিল। অন্য দলের বক্তব্য, চাইলে অনেক আগেই করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারতো ব্রাজিল। কিন্তু সরকারের গাফিলতির কারণেই আজ এই ভয়াবহ অবস্থা তৈরি হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রাজিলে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে ১১ হাজার ৩৮৫। মৃত্যু হয়েছে ৭৪৯ জনের। বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত ব্রাজিলে মোট আক্রান্তের সংখ্যা এক লাখ ৯০ হাজার। মৃত্যু হয়েছে ১৩ হাজার ২৪০ জনের।

এ দিকে করোনা সংক্রমণের মধ্যেই ধীরে ধীরে খুলতে শুরু করেছে অ্যামেরিকা। যা নিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে বিতর্কে জড়িয়েছেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা অ্যান্টনি ফওসি। ডনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন দ্রুত স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়া হবে। কিন্তু ফওসির বক্তব্য, যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন না করে এ ভাবে সব খুলে দিলে করোনা পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাবে। আরও লোকের মৃত্যু হবে। কিন্তু স্বাস্থ্য উপদেষ্টার কথা মানতে নারাজ ট্রাম্প। বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য করেছেন আগামী নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেনও। তাঁর বক্তব্য, স্বাস্থ্য উপদেষ্টার কথা না শোনা অন্যায় হবে।

এ দিকে জাপানের একটি ফার্মা কোম্পানি বুধবার জানিয়েছে, জুলাই মাস থেকে তাদের তৈরি করোনা প্রতিশেধকের ক্লিনিকাল ট্রায়াল শুরু হবে। আপাতত পরীক্ষামূলক ভাবে টিকাটি করোনা আক্রান্তদের উপর পরীক্ষা করা হবে বলে জানানো হয়েছে। বস্তুত, করোনা রোগীদের শরীর থেকে নেওয়া প্লাজমা থেকেই এই টিকা তৈরি হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে জানানো হয়েছে। তবে ক্লিনিকাল ট্রায়ালের পরে কবে এই টিকা বাজারে আসতে পারে, তা নিয়ে নিয়ে সংস্থাটি এখনও কিছু জানায়নি। প্লাজমা থেরাপি অবশ্য আগেই ভারতে শুরু হয়ে গিয়েছে। এই থেরাপির সাহায্যে বহু করোনা রোগীকে সুস্থও করা গিয়েছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। তবে জাপানের ফার্মা কোম্পানি প্লাজমা থেরাপির কথা বলেনি। প্লাজমা থেকে টিকা তৈরির কথা বলেছে।

মেক্সিকোতেও দ্রুত ছড়াচ্ছে করোনা। মৃতের সংখ্যা চার হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। অ্যামেরিকা জানিয়েছে, আপাতত কানাডা এবং মেক্সিকো সীমান্ত খোলা হবে না। শুধুমাত্র অত্যাবশকীয় জিনিসপত্রই যাতায়াত করতে পারবে। জার্মানি অবশ্য জানিয়েছে জুনের মাঝামাঝি সময় থেকে সমস্ত সীমান্ত খুলে দেওয়া হবে।

এ দিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ফের আশঙ্কার কথা বলেছে। তাদের বক্তব্য, পৃথিবী জুড়ে করোনার টিকা তৈরি হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু কোভিড-১৯ ভাইরাসটি আপাতত চলে যাওয়ার কোনও সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। শুধু তাই নয়, ভাইরাসটি রূপ বদলাচ্ছে বলেও বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন। ফলে কোন ভ্যাকসিন এই ভাইরাস নির্মূল করতে সব চেয়ে বেশি কার্যকরী হবে, তা এখনও বোঝা যাচ্ছে না। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেব অনুযায়ী বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত গোটা বিশ্বে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৪৪ লাখ ২৯ হাজার। মৃত্যু হয়েছে দুই লাখ ৯৮ হাজার জনের। সুস্থ হয়েছেন ১৬ লাখ ৫৯ হাজার মানুষ।

এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এপি, এএফপি)