1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

চুক্তিহীন ব্রেক্সিট এড়াতে ইউরোপ সফরে মে

৯ এপ্রিল ২০১৯

হয় সময়সীমা বাড়াতে হবে, নয়তো শুক্রবার কোনো চুক্তি ছাড়াই ব্রেক্সিট কার্যকর হবে৷ যা এড়াতে ইউরোপের নেতাদের কাছে ধর্ণা দিচ্ছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে৷

https://p.dw.com/p/3GV6m
Großbritannien Theresa May, Premierministerin vor Dowing Street 10 in London
ছবি: picture-alliance/NurPhoto/W. Szymanowicz

বুধবার ব্রাসেলসে ইইউর জরুরি সম্মেলন শুরুর আগে মঙ্গলবার দুপুরে বার্লিনে জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের সাথে তিনি বৈঠক করেছেন৷ এরপর সেখান থেকে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁর সঙ্গে দেখা করতে প্যারিসে গিয়েছেন৷ চার দশকের সম্পর্কের অবসান ঘটিয়ে ১২ এপ্রিল ইউরোপের সাথে বিচ্ছেদে যাচ্ছে ব্রিটেন৷ এটিই ব্রেক্সিট কার্যকরের এখন পর্যন্ত   নির্ধারিত সময়সীমা৷ কিন্তু বিচ্ছেদের পরে ইউরোপের সাথে সম্পর্ক কেমন হবে তা নিয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি ব্রিটেন৷ গত সপ্তাহে চারটি প্রস্তাব সংসদে তুলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে৷ কিন্তু একটিও পাস করাতে পারেননি তিনি৷ এমন অবস্থায় চুক্তিহীন ব্রেক্সিটের পথই এখন খোলা ব্রিটেনের সামনে৷ কিন্তু সেই বিপর্যয় এড়াতে চান মে৷ যে কারণে শেষ মুহূর্তে ইউরোপের নেতাদের কাছে ধর্ণা দিচ্ছেন তিনি৷ উদ্দেশ্য ব্রেক্সিট কার্যকরের সময়সীমা ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানো৷

একমত ম্যার্কেল-মে

মঙ্গলবার দুপুরে বারোটা নাগাদ বার্লিনে আঙ্গেলা ম্যার্কেলের সাথে বৈঠকে বসেন মে৷ সেখানে দুজনই নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে ব্রেক্সিট কার্যকরের মাধ্যমে ইউরোপ থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে যাবার বিষয়টি যে গুরুত্বপূর্ণ, সে বিষয়ে একমত হয়েছেন৷ এমনটাই জানানো হয়েছে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে৷ ব্রেক্সিট প্রক্রিয়া সফলভাবে সম্পন্ন করতে টেরেসা মে তাঁর নেয়া পদক্ষেপ এবং লেবার পার্টির সাথে তাঁর আলোচনার বিষয়গুলোও ম্যার্কেলের কাছে তুলে ধরেছেন বলেও রয়টার্সকে একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন৷ তবে বৈঠক শেষে মে কিংবা ম্যার্কেল দুজনের একজনও সাংবাদিকদের কাছে এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি৷ বাইরে অপেক্ষারত গাড়িতে উঠে চলে যান মে৷ এসময় তাঁকে হাত নেড়ে বিদায় জানান ম্যার্কেল৷ 

যে কারণে মের সফর

ব্রেক্সিট কার্যকরের প্রক্রিয়া নিয়ে বুধবার ব্রাসেলসে জরুরি এক সম্মেলনে বসছেন ইইউ’র সদস্যরা৷ সেখানেই মের আবেদন অনুযায়ী সময়সীমা বাড়ানো হবে কিনা সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে৷ ইইউর জরুরি এই সম্মেলন শুরুর আগে সমর্থন আদায়ে মে জার্মানি ও ফ্রান্স সফরে বেরিয়েছেন৷ শুরুতে বার্লিনে চ্যান্সেলর ম্যার্কেলের সাথে বৈঠকে বসেন তিনি৷ সময়সীমা বাড়ানোর বিষয়ে অবশ্য আগে থেকে ইতিবাচক মনোভাবই দেখিয়ে আসছেন ম্যার্কেল৷ তবে তার থেকে একটি ফলাফল যাতে আসে সে বিষয়ে জোর দিচ্ছেন দেশটির আইন প্রণেতারা৷ এ জন্য যুক্তরাজ্য এখনও প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ করেনি বলে মনে করেন জার্মানির ইউরোপ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মিশায়েল রোট৷ মঙ্গলবার তিনি বলেন, ‘‘যুক্তরাজ্যকে তার অচলাবস্থা দূর করতে বাস্তবানুগ পদক্ষেপ দেখাতে হবে৷ আমরা অবশ্যই সময়সীমা বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনা করছি এবং দীর্ঘ মেয়াদের জন্যই৷ কিন্তু এটি হতে হবে কঠিন শর্তের প্রেক্ষিতে৷'' তবে ব্রিটিশদের পক্ষ থেকে কোনো বাস্তবানুগ পদক্ষেপ ছাড়া একের পর এক সময় বাড়ানোর বিষয়টি চলতে পারে না বলেও উল্লেখ করেন তিনি৷ 

একই কথা বলছেন ফ্রান্সের অর্থমন্ত্রী ব্রুনো লে মায়ারও৷ ‘‘কেন সময় বাড়ানো হবে এবং তা কীভাবে একটি চুক্তির সুযোগ তৈরি করবে সে বিষয়ে পরিষ্কার ব্যাখ্যা থাকতে হবে,'' মঙ্গলবার ফ্রান্সের এক টেলিভিশনকে এমন কথা বলেন তিনি৷ মায়ারও চুক্তির অধীনে ব্রেক্সিট কার্যকরের পক্ষে ফ্রান্সের অগ্রাধিকারের কথা উল্লেখ করেন৷ বলেন, ‘‘আমি চুক্তির পক্ষে৷ কিন্তু সময়সীমা কেন বাড়াতে চান সে বিষয়ে টেরেসা মেকে কারণ দেখাতে হবে এবং সেটি অবশ্যই বিশ্বাসযোগ্য হতে হবে৷

ম্যার্কেলের সাথে বৈঠকের পর মঙ্গলবারই মে বার্লিন থেকে প্যারিসের পথে পাড়ি জমাবেন৷ সেখানে সন্ধ্যায় তিনি এমানুয়েল মাক্রোঁর সাথে বৈঠক করবেন৷

বিরোধের জায়গা

 ব্রেক্সিট কার্যকর  ১২ এপ্রিলের থেকে বাড়িয়ে ৩০ জুন করার জন্য মে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছে আবেদন করবেন৷ ইইউ সেটি এক বছরের জন্যও বাড়াতে পারে বলে আভাস মিলছে৷ তবে সমস্যা হলো ব্রেক্সিট কার্যকর ২২ মের পরে গেলে যুক্তরাজ্যকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নির্বাচনে অংশ নিতে হবে, যা এড়াতে চান টেরেসা মে৷ এর মধ্যে ব্রিটেনের রাজনৈতিক দলগুলো আর নেতাদের নিজেদের মধ্যেও বিভিন্ন ইস্যুতে মতৈক্যে পৌঁছাতে হবে৷ যার মধ্যে প্রধান সমস্যা ‘আইরিশ ব্যাকস্টপ' ইস্যুটি৷

ব্রিটেনে অচলাবস্থা

কীভাবে ব্রেক্সিট বাস্তবায়ন হবে তা নিয়ে রাজনীতিবিদ আর দলগুলোর মধ্যে মতবিরোধের জের ধরে চরম সঙ্কটে পড়েছেন টেরেসা মে৷ এই বিষয়ে মে নিজ দলের সদস্যদের কাছ থেকেও প্রয়োজনীয় সমর্থন পাচ্ছেন না৷ এমন অবস্থায় চুক্তি পাসের জন্য মে প্রধান বিরোধী দল লেবার পার্টির সাথে আলোচনা শুরু করেছেন৷ দলটির প্রধান জেরেমি কর্বিন বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী এখনও ‘রেড লাইন' অতিক্রম করেননি তাই তাঁর সাথে একটি সমঝোতায় পৌঁছানো যেতে পারে৷ তবে ‘কাস্টমস ইউনিয়ন' প্রশ্নে নিজের অবস্থানে বড় ধরণের ছাড় দিতে হবে মেকে৷

এফএস/জেডএইচ (রয়টার্স, এএফপি, ডিপিএ, এপি)