1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ছোট-মাঝারি শিল্পের প্যাকেজ নিয়ে বিপাকে সরকার

১ মে ২০২০

লকডাউনের রাশ ধীরে ধীরে আলগা করা হচ্ছে। আগামী রোববার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জানাবেন, ৪ মে থেকে দেশে লকডাউন কোথায় কতটা থাকবে।

https://p.dw.com/p/3bdwZ
ছবি: picture-alliance/ZUMAPRESS/P. Kumar

যদিও গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যায় রেকর্ড বৃদ্ধি হয়েছে, কিন্তু দক্ষিণ ভারত এবং উত্তর পূর্বের রাজ্যগুলিতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য ভাবে কমছে। এই অবস্থায় দেশের সবুজ তালিকাভুক্ত এলাকা বা যেখানে গত ২৮ দিনে করোনায় কেউ আক্রান্ত হননি, সেখানে কড়াকড়ি অনেকটাই কম করে কল-কারখানা খোলার অনুমতি দিচ্ছে সরকার। আর তখনই চিন্তা শুরু হয়েছে, ছোট ও মাঝারি শিল্পগুলিকে সাহায্য করতে প্যাকেজ ঘোষণার। করোনার ধাক্কায় প্রতিটি শিল্পের হাল শোচনীয়। বড় শিল্পের কাছে তবু পুঁজি রয়েছে। ছোট ও মাঝারি শিল্পের কাছে তাও নেই। সরকারি সাহায্য ছাড়া তাদের ঘুরে দাঁড়ানোটা কঠিন। তাই ছোট ও মাঝারি শিল্পগুলিকে কীভাবে সাহায্য করা যায় তা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর অফিসে সম্প্রতি ছয়টি বৈঠক হয়েছে। সেখানে প্যাকেজ দেওয়ার ব্যাপারে বিস্তারিত কথা হয়েছে।  কিন্তু কীভাবে তা দেওয়া হবে, তা নিয়ে রীতিমতো জেরবার তারা।

সূত্র জানাচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী এমন প্যাকেজ চান না, যার সুবিধা নিয়ে কিছু শিল্প-মালিক লাভবান হবেন এবং ব্যাঙ্কের অনাদায়ী ঋণের পরিমাণ বাড়বে। ছেট ও মাঝারি শিল্পমন্ত্রী নীতিন গডকরি নিজে একটা তবহবিল করতে চান। সেই তহবিল থেকে ছোট ও মাঝারি শিল্পগুলিকে ঋণ দেওয়া হবে এবং সরকার তাতে গ্যারেন্টার হিসাবে থাকবে। প্রধানমন্ত্রী প্রতিটি প্রস্তাব নিয়ে নানা ধরনের প্রশ্ন করছেন। তিনি নিশ্চিত হতে চান যে, সরকারি প্যাকেজের সুবিধা  নিয়ে ছোট ও মাঝারি শিল্পঘুরে দাঁড়াতে পারবে। তিনি নির্দিষ্টভাবে গরিব ও আর্থিক দিক থেকে একেবারে পিছনের সারিতে থাকা মানুষেরা যাতে লাভবান হতে পারেন, এমন প্যাকেজ চান। তাঁর ইচ্ছে, প্রথমে ছোট ও মাঝারি শিল্প ও স্বাস্থ্য পরিষেবার জন্য প্যাকেজ ঘোষণা করার। আবার সেটা লোক দেখানো প্যাকেজ হলেও চলবে না। এর আগে মোদী সরকার যে প্যাকেজের কথা ঘোষণা করেছিল, তা নিয়ে প্রধান অভিযোগই হলো, তাতে হিসাবের কারিকুরি বেশি। লোকের পাওনা অর্থকে আগাম দেওয়া ছাড়া নতুন ঘোষণা কম। 

তাই বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামানের প্যাকেজ বা রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নেওয়া ব্যবস্থায় ছোট ও মাঝরি শিল্পের খুব বেশি লাভ হয়নি। বৃহস্পতিবারও নির্মলা ও ভারি শিল্প ও বানিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল দীর্ঘ বৈঠক করেছেন। সরকার চাইছে, ছোট ও মাঝারি শিল্প সহজ শর্তে ঋণ পাক। তাদের হাতে টাকা আসুক। আর তারা উৎপাদন শুরু করে সেই টাকা শোধ করার মতো জায়গায় আসুক। কিন্তু তার জন্য অর্থনৈতিক কাজকর্ম পুরোদমে চালু করতে হবে। নীতি আয়োগের চেয়ারম্যান অমিতাভ কান্ত জানিয়েছেন, শুধু লাল তালিকাভুক্ত এলাকায় অন্তত নির্মমভাবে করোনার মোকাবিলা করা হোক। অর্থনৈতিক কাজ পুরোদমে চালু হোক, বিশেষ করে জিনিসের সরবরাহ পুরোদমে শুরু হোক।

এটা করতে গেলে লাল এলাকাভুক্ত জেলা বা জায়গা ছাড়া বাকি এলাকায় কড়াকড়িএকেবারেই শিথিল করে দিতে হবে। যাতায়াত ব্যবস্থা চালু করে দিতে হবে। গত ২৪ ঘণ্টায় প্রায় দুই হাজার জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, মারা গিয়েছেন ৭৩ জন। মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৩৫ হাজার ছাড়িয়েছে। মহারাষ্ট্র, গুজরাট, দিল্লির মতো রাজ্যগুলিতে করোনা নিয়ন্ত্রণে আসেনি। দক্ষিণ ভারতে কেরল, তেলেঙ্গানার মতো রাজ্যে পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে। উত্তর পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলিতেও পরিস্থিতি ভালো। উত্তর ভারতের মধ্যে হরিয়ানায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা খুবই কম। তারপরেও একদিনে এতজনের করোনায় আক্রান্ত হওয়া মানে, অনেক রাজ্যেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। তাই পুরো দেশ থেকে লকডাউন তুলে দেওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি বলেই বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।

জিএইচ/এসজি(পিটিআই, এএনআই)