1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘সতর্ক বার্তা’ পেয়ে তৎপর ভারত

রাজীব চক্রবর্তী নতুন দিল্লি
২৩ মার্চ ২০১৭

ভারতে জঙ্গি অনুপ্রবেশ বাড়ছে৷ আন্তর্জাতিক সীমা পার হয়ে জঙ্গিরা ঢুকে পড়েছে দেশটিতে৷ ঠিক এই মর্মেই ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রককে সতর্ক করেছে বাংলাদেশ৷ প্রতিবেশী দেশের সতর্কবার্তায় জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে ভারতেও৷

https://p.dw.com/p/2Zn30
Bangladesch Polizeieinsatz gegen Täter des Anschlags auf ein Cafe in Dhaka
গত আগস্টে নারায়ণগঞ্জে জঙ্গি ধরতে নিরাপত্তা বাহিনীর চালানো একটি অভিযানের ছবিছবি: Getty Images/AFP

নতুন দিল্লির নর্থ ব্লকে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে শুরু হয়েছে তোড়জোড়৷ অবশ্য সারা বছরই এমনটা হয়৷ কিন্তু এবার মন্ত্রকের আমলাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশের পাঠানো ঐ বার্তা৷ যাকে বলে একেবারে ‘‌সতর্ক বার্তা’৷ সোমবার দিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রে এমনটাই জানা গেছে৷

বাংলাদেশ সরকারের সেই বার্তায় বলা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ, অসম, ত্রিপুরা সীমান্ত দিয়ে ভারতের মাটিতে ঘাঁটি গেড়েছে ‘হরকত-উল-জিহাদি-আল-ইসলামি’ বা হরকাতুল জিহাদ (হুজি) এবং ‘‌জামাত-উল-মুজাহিদিন বাংলাদেশ’ (জেএমবি)-এর বেশ কিছু জঙ্গি৷ কিন্তু একাধিক নিরাপত্তা সংস্থার চোখে ধূলো দিয়ে ভারতে জঙ্গি অনুপ্রবেশের ঘটনা যদি সত্যিই ঘটে থাকে, তাহলে তার ফল কতটা মারাত্মক হতে পারে তা ভেবেই জঙ্গিদের সন্ধানে জোরদার তৎপরতা শুরু হয়ে গেছে ভারতে৷

এই বিষয়ে ‌ভারতের ‘‌জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা’ বা এনআইএ-র কাছেও তথ্য রয়েছে৷ তাতে দেখা যাচ্ছে, ২০১৪ সালে বর্ধমানের খাগড়াগড় বিস্ফোরণে জেএমবি-র সরাসরি যোগ ছিল৷ সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে হত্যা করার মতো পরিকল্পনার কথাও সামনে উঠে এসেছে৷ এখন বাংলাদেশের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ভারতের সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলি দিয়ে ২০১৫ সালের তুলনায় ২০১৬ সালে ভারতে জঙ্গি অনুপ্রবেশ বেড়েছে তিনগুণ৷

এ বিষয়ে বাংলাদেশ একটি রিপোর্ট পাঠিয়েছে৷ তাতে বলা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ, আসাম ও ত্রিপুরা – এই তিন রাজ্যে বাংলাদেশ হয়ে প্রায় ২ হাজার ১০ জন হুজি ও জেএমবি জঙ্গি ঢুকে পড়েছে৷ এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ সীমান্ত দিয়ে ভারতে ঢুকেছে ৭২০ জঙ্গি ও বাকি ১২৯০ জন জঙ্গি ঢুকেছে আসাম ও ত্রিপুরা হয়ে৷ ভারতকে বাংলাদেশ সরকার লিখিতভাবে জানায় যে, আসাম ও পশ্চিমবঙ্গের কয়েকজনকে কাজে লাগিয়ে নকল পাসপোর্ট ব্যবহার করে গত ১২ জানুয়ারি ভারতে ঢুকেছে জঙ্গি সংগঠন জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ বা জেএমবি সেক্রেটারি ইফতাদুর রহমান৷ ঐ জঙ্গি নেতা ইতিমধ্যে দিল্লি পৌঁছে গেছেন বলেও খবর আছে গোয়েন্দাদের কাছে৷

এ বিষয়ে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক কর্মকর্তা ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‌‘‌বাংলাদেশের দেওয়া রিপোর্ট নিয়ে তথ্য জোগাড় করা হচ্ছে৷ ‌পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার খাগড়াগড়ে বিস্ফোরণের পর জানা গিয়েছিল যে, সেখানে বসে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আক্রমণের ছক কষা হচ্ছিল৷ এখন আবার বেশ কিছু জঙ্গি যদি পশ্চিমবঙ্গ-‌সহ আশেপাশের রাজ্যগুলিতে ঘাঁটি গাড়ে, তবে তা বড় চিন্তার কারণ৷’’

এদিকে আসাম পুলিশের অ্যাডিশনাল ডিরেক্টর জেনারেল পল্লব ভট্টাচার্য ইংরেজি দৈনিক টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে জানিয়েছেন, ‘‘গত ছ'মাসে ৫৪ জন জেএমবি জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করার জেরেই সম্প্রতি জঙ্গি কার্যকলাপ বেড়েছে৷ বেআইনি অনুপ্রবেশের বিষয়ে নজর দারি চালাতে শীর্ষ পুলিশকর্তা ও বিধায়কদের নিয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটিও গঠন করা হয়েছে৷ তাঁরা প্রতিদিন সীমান্ত এলাকাগুলি ঘুরে দেখছেন৷’’

বাংলাদেশের এই ‘সতর্ক বার্তা’ পেয়ে ভারত সরকারের নিরাপত্তার সঙ্গে যুক্ত আমলা ও কর্তাদের রাতের ঘুম ছুটেছে৷ তবে একটু নড়েচড়ে বসতেই হাতে হাতে ফল পেয়েছেন তাঁরা৷ মঙ্গলবার দিল্লি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এক খালিস্তান কম্যান্ডোকে৷ ‘খালিস্তান কম্যান্ডো ফোর্স’ (কেসিএফ)-এর এক সক্রিয় সদস্যকে মঙ্গলবার গ্রেপ্তার করেছে দিল্লি পুলিশের অপরাধ দমন শাখা৷ দিল্লি পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, ‘‘ধৃতের নাম গুরসেবক সিং ওরফে বাবলা৷ গুরসেবকের বিরুদ্ধে জঙ্গি কার্যকলাপ, খুন, লুঠপাট-সহ মোট ৭৫টি মামলা ঝুলে রয়েছে৷’’

‌দিল্লি পুলিশ আরও জানিয়েছে, গ্রেপ্তারের সময় ধৃতের কাছ থেকে একটি দেশি পিস্তল পাওয়া গেছে৷ দক্ষিণ দিল্লির রাজকরিতে, ৮নং জাতীয় সড়কের পাশে একটি ধাবা থেকে খালিস্তান কম্যান্ডো ফোর্সের এই সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ দিল্লি পুলিশের দাবি, ‘‌‘‌বড় ধরনের অপরাধ সংগঠিত করতেই দিল্লিতে ঢুকেছিল এই কেসিএফ সদস্য৷’’ এখন তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে৷

প্রিয় পাঠক, এই বিষয়ে আপনার মতামত জানাতে পারেন নীচে মন্তব্যের ঘরে...

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য