1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জনসন না কর্বিন, কে হবেন ব্রেক্সিটের কাণ্ডারি?

৩১ অক্টোবর ২০১৯

৩১শে অক্টোবর ব্রেক্সিট সম্ভব হলো না৷ এবার নির্বাচনের ময়দানে ভোটাররা আগামী সংসদ ও সরকারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন৷ প্রধানমন্ত্রী জনসন ও বিরোধী নেতা কর্বিন জনসমর্থন আদায়ে আসরে নামছেন৷

https://p.dw.com/p/3SFNA
লেবার নেতা জেরেমি কর্বিন ও ব্রিটিশ প্রঘানমন্ত্রী বরিস জনসন
ছবি: picture-alliance/Photoshot

ব্রিটিশ সংসদে ব্রেক্সিট নিয়ে তর্কবিতর্কের পালা শেষ৷ এবার ব্যালট বাক্সে সমর্থনের লড়াইয়ে নামছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ও লেবার নেতা জেরেমি কর্বিন৷ কিন্তু দলমত নির্বিশেষে ব্রিটেনে ব্রেক্সিটকে কেন্দ্র করে যে বিভাজন দেখা যাচ্ছে, তার ফলে দুই নেতার পক্ষে ঘর গুছিয়ে ভোটারদের মন জয় করা কঠিন হবে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷ ব্রেক্সিট প্রক্রিয়ার মারাত্মক প্রভাব নিয়েও হিসেব-নিকেশ চলছে৷

১২ই ডিসেম্বর আগাম নির্বাচনে বরিস জনসন নিজের এক জোরালো ভাবমূর্তি তুলে ধরতে চান৷ তাঁর মতে, নির্বাচনে বিপুল জয়ের মাধ্যমে একমাত্র তিনিই জানুয়ারি মাসে ব্রেক্সিটের প্রশ্নে জনগণের রায় কার্যকর করতে পারেন৷ যাবতীয় বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে তিনিই ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছ থেকে নতুন ব্রেক্সিট চুক্তি আদায় করেছেন৷ ৩১শে অক্টোবর ব্রেক্সিট কার্যকর করার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়েও সংসদে জেরেমি কর্বিনের বাধার কারণে ব্যর্থ হয়েছেন বলে দাবি করছেন জনসন৷ ফলে দেশের মানুষ ও ব্যবসা বাণিজ্য জগত আরও অনিশ্চয়তার মধ্যে ডুবে গেল৷ ব্রেক্সিট পর্ব সেরে অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাজে মন দিতে হবে, বলেন জনসন৷

অন্যদিকে লেবার নেতা কর্বিন টোরি দলের দীর্ঘ শাসনকালের পর ব্রিটেনে প্রকৃত পরিবর্তনের ডাক দিচ্ছেন৷ সমাজতান্ত্রিক পরিকল্পনার আওতায় তিনি রেল, ডাক ও পানি সরবরাহ পরিষেবাকে আবার সরকারি মালিকানায় আনতে চান৷ কর্বিনের অভিযোগ, টোরি দল দীর্ঘদিন ধরে শুধু ধনীদের স্বার্থরক্ষা করতে গুরুত্বপূর্ণ খাতে সরকারি ব্যয় কমিয়ে এসেছে৷ সাধারণ মানুষকে সেই নীতির কুফল ভোগ করতে হয়েছে৷ তাঁর মতে, এক প্রজন্মের মধ্যে সমাজের এমন রূপান্তরের সুযোগ আর পাওয়া যাবে না৷ জনসন নির্বাচনে জিতলে ব্রিটেনের স্বাস্থ্য পরিষেবা মার্কিন কোম্পানির হাতে চলে যাবে বলে কর্বিন সতর্ক করে দিয়েছেন

বর্তমানে জনমত সমীক্ষায় নেতা হিসেবে জনসন ও দল হিসেবে টোরি এগিয়ে থাকলেও সেই হিসেব এলোমেলো হবার একাধিক সম্ভাবনা রয়েছে৷ প্রথমত, জনসন ব্রেক্সিট কার্যকর করতে ব্যর্থ হওয়ায় নাইজেল ফারাজ-এর ব্রেক্সিট পার্টি ব্রেক্সিটপন্থি ভোটারদের আরও সমর্থন পেতে পারে৷ দুই দলের মধ্যে সমঝোতা না হলে ব্রেক্সিটপন্থিদের ভোটে বিভাজনের ফলে অন্য প্রার্থীরা লাভবান হবেন৷ টোরি ও লেবার দলের মধ্যে ‘বিদ্রোহী'-দের সংখ্যাও কম নয়৷ তাঁরা আদৌ প্রার্থী হতে পারবেন কিনা, তার উপর দলের ঐক্য নির্ভর করবে৷

নেতা হিসেবে কর্বিন নিজের লেবার দলের মধ্যেও যথেষ্ট সমর্থন পাচ্ছেন না৷ ব্রেক্সিট সম্পর্কেও তাঁর কোনো স্পষ্ট অবস্থান নেই৷ কখনো বলেছেন, তিনি আবার নতুন করে ইইউ-র সঙ্গে আলোচনা করে ব্রেক্সিট চুক্তির মধ্যে পরিবর্তন আনতে চান৷ দ্বিতীয় গণভোটের মাধ্যমে সে বিষয়ে চূড়ান্ত রায়ের কথাও বলেছেন তিনি৷ তাঁর ঘোষিত রাষ্ট্রীয়করণের নীতির ফলে ব্রিটেনের অর্থনীতির ক্ষতি হবে বলে টোরি দল সাবধান করে দিচ্ছে৷

ইইউ-পন্থি ভোটাররা মূলত উদারপন্থি লিবডেম দলের প্রতি সমর্থন জানাতে পারবেন৷ স্কটল্যান্ডের এসএনপি দলও সেখানকার ইউরোপপন্থি ভোটারদের মন জয় করতে পারে৷ ইউরোপ-বিরোধী ও ইউরোপপন্থি ভোটারদের ঘিরে জনসমর্থনের প্রতিফলন দেখা দিলে ত্রিশঙ্কু সংসদের আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না৷ সে ক্ষেত্রে ব্রেক্সিট প্রক্রিয়ার ভবিষ্যৎ আরও অনিশ্চয়তার মধ্যে ডুবে যেতে পারে৷

এসবি/কেএম (রয়টার্স, এএফপি)