1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ভারতের বিশেষ ক্ষতি হচ্ছে

২ ডিসেম্বর ২০১০

লাখ লাখ মানুষকে দারিদ্র্যের হাত থেকে রক্ষা করে তাদের জীবনমান উন্নয়ন করার জন্য সংগ্রাম করে যাচ্ছে যে দেশটি, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে, সেই ভারতের দ্রুত বিকাশমান অর্থনীতি হুমকির মুখে পড়েছে৷

https://p.dw.com/p/QO25
উষ্ণায়নের ফলে ক্ষতি হচ্ছেছবি: PA/dpa

মেক্সিকোর কানকুনে চলছে জাতিসংঘের বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন৷ প্রায় দু'সপ্তাহব্যাপী সেই সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন ভারতসহ বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা৷ জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ২০৩০ সালে ভারতের অবস্থা কী হবে সমীক্ষামূলক এই রিপোর্টটির মাধ্যমে সেই বিষয়ে সুনির্দিষ্ট ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়৷ এবং এর ভিত্তিতে এখুনি আগামী দুই দশকের জন্য গৃহীত নীতির পর্যালোচনার কথা উল্লেখ করা হয়৷ বলা হয়েছে, বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে যে সব দেশ ভারত তার অন্যতম৷

রিপোর্টে বলা হয়েছে, বিশ্বের উষ্ণায়নের ফলে আগামী বিশ বছরের মধ্যে ভারতের তাপমাত্রা ১৯৭০ সালের চেয়ে দুই ডিগ্রি বেড়ে যাবে৷ যা দেশটির বৃষ্টিপাতের ধরণে পরিবর্তন নিয়ে আসবে৷ এবং এর প্রভাব গিয়ে পড়বে সুপেয় পানি সরবরাহ ও কৃষির উপর, যার উপর নির্ভর করে ভারতের এক বিলিয়নেরও বেশি মানুষের জীবিকা৷

জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ভারতের যে অঞ্চলগুলো সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে সেই অঞ্চলগুলোর কৃষি, পানি, স্বাস্থ্য, প্রাকৃতিক ইকো সিস্টেম এবং জীববৈচিত্র্যের উপর সমীক্ষা চালিয়ে ‘জলবায়ু পরিবর্তন ও ভারত' শিরোনামের রিপোর্টটি প্রস্তুত করা হয়েছে৷ সারা দেশের ১২০ টি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের ২২০ জন বিজ্ঞানীকে নিয়ে এই রিপোর্টটি প্রস্তুত করেছে ‘ইন্ডিয়ান নেটওয়ার্ক ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যাসেসমেন্ট' বা আইএনসিসিএ৷ সেখানে বলা হয়েছে, ভারতে আরও বন্যা এবং খরা দেখা দেবে, যার ফলে ম্যালেরিয়ার মতো রোগগুলো আরও বিস্তার লাভ করবে৷

Trockenheit in Indien
তাপমাত্রা বেড়েই চলেছেছবি: AP

ভারতের পরিবেশ মন্ত্রী জয়রাম রমেশ বলেন, ‘‘পৃথিবীর আর কোনো দেশ নেই যে দেশ ভারতের মত জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এতোদিক থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হবে৷'' তিনি বলেন,‘‘ ভারতের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলো কার্বন নি:সরণ কমানোর জন্য এমন কোন আইনি বাধ্যবাধকতা মানবে না,যা কিনা তাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ব্যাহত করবে৷''

পরিবেশ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ভারতে গ্যাস নির্গমনের মাত্রা ১৯৯০ থেকে ২০০৫ সালের মধ্যে ১৭ দশমিক ৬ শতাংশ কমে এসেছে এবং এখনও সেই মাত্রা একই রয়েছে৷ পরিবেশমন্ত্রী ইতোমধ্যে বলেছেন, ধনী এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোতে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের মধ্যে যে পার্থক্য রয়েছে তা কমিয়ে আনার জন্য ভারত কানকুনের সম্মেলনে সেতুবন্ধ তৈরির চেষ্টা চালাবে৷

কার্বন নি:সরণ কমানোর জন্য মনিটর করা এবং যাচাই করার যে প্রস্তাব জলবায়ু সম্মেলনে ভারত দিয়েছে সেটাকে একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে স্বাগত জানিয়েছেন পরিবেশবিদরা৷ পরিবেশ বিশেষজ্ঞ জয়দীপ গুপ্ত বলছেন, ভারত সরকার কাগজ কলমে অনেক কিছুই করে যাচ্ছে৷ কিন্তু ধনী দেশগুলো যদি এ ব্যাপারে তাদের কথা না রাখে তাহলে বাস্তবে খুব কমই কাজ হবে৷ তিনি বলেন, তৃতীয় বৃহত্তম গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গমনকারী দেশ ভারত নিজেই এতোদিন যে পরিমাণে কার্বন নি:সরণ করে আসছে, এখন তারই সমাধানের চেষ্টা চালাচ্ছে ভারত৷

প্রতিবেদন: জান্নাতুল ফেরদৌস
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক