1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

প্রথম বিশ্বযুদ্ধ সমাপ্তির শতবর্ষ পালন

১২ নভেম্বর ২০১৮

আজকের বিশ্বে উগ্র জাতীয়তাবাদের বিপদ সম্পর্কে সতর্ক করে দিলেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট মাক্রোঁ৷ প্রথম বিশ্বযুদ্ধ সমাপ্তির শতবর্ষ উপলক্ষ্যে তিনি বিশ্বনেতাদের সামনে নৈতিক মূল্যবোধ রক্ষার ডাক দেন৷

https://p.dw.com/p/3855N
ছবি: Reuters/B. Tessier

প্রথম বিশ্বযুদ্ধ সমাপ্তির শতবর্ষ পালন করতে সপ্তাহান্তে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে মিলিত হয়েছিলেন একাধিক বিশ্বনেতা৷ ১৯১৮ সালের ১১ই নভেম্বর এক চুক্তির মাধ্যমে এই যুদ্ধ সমাপ্ত হয়েছিল৷ সংঘাতের অবসান সংক্রান্ত সেই চুক্তি ‘আর্মিস্টিস’ নামে পরিচিত৷ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন, জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল-সহ শীর্ষ নেতারা প্রথম বিশ্বযুদ্ধে নিহত লক্ষ লক্ষ অজ্ঞাতপরিচয় সেনাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান৷ তাঁদের মধ্যে অনেকে একসঙ্গে প্যারিসের শঁজেলিজে সড়ক থেকে বিজয় তোরণ পর্যন্ত পদযাত্রায় অংশ নেন৷

এক'শ বছর আগের পরিস্থিতি আজও কতটা প্রাসঙ্গিক, তা মনে করিয়ে দিলেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ৷ বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে উগ্র জাতীয়তাবাদের উত্থান আবার মানবজাতির জন্য বিপদ ডেকে আনতে পারে বলে মনে করেন তিনি৷ মাক্রোঁ বলেন, ‘‘জাতীয়তাবাদ দেশাত্মবোধের একেবারে বিপরীত৷ জাতীয়তাবাদ আসলে দেশাত্মবোধের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা৷ যখন আমরা বলি, ‘সবার আগে আমাদের স্বার্থ দেখতে হবে, বাকিদের নিয়ে আমাদের কোনো মাথাব্যথা নেই’, সেই মুহূর্তে আমরা জাতির সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ – অর্থাৎ নৈতিক মূল্যবোধ মুছে দেই৷’’ রাজনৈতিক মতাদর্শ, ধর্ম ও তথ্য উপেক্ষা করার প্রবণতার ফায়দা তোলার প্রচেষ্টা সম্পর্কেও সতর্ক করে দেন মাক্রোঁ৷ তাঁর মতে, প্রায়ই ইতিহাসের পুনরাবৃত্তির আশঙ্কা দেখা যায়৷ 

‘অ্যামেরিকা ফার্স্ট’ নীতির প্রবক্তা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অত্যন্ত গম্ভীর মুখে সেই ভাষণ শুনছিলেন৷ সম্প্রতি মিডটার্ম নির্বাচনের প্রচারে তিনি গর্বের সঙ্গে নিজেকে ‘জাতীয়তাবাদী’ হিসেবে তুলে ধরেছেন৷ সরাসরি তাঁকে উদ্দেশ্য করে মাক্রোঁ এমন বক্তব্য না রাখলেও উপস্থিত নেতাদের মধ্যে তিনিই যে উগ্র জাতীয়তাবাদের উত্থানের সবচেয়ে বড় দৃষ্টান্ত, তা নিয়ে কারো মনে সন্দেহ ছিল না৷ গোটা সফর জুড়ে ট্রাম্প মাক্রোঁ-সহ বাকি নেতাদের যতটা সম্ভব এড়িয়ে গেলেন৷ শীর্ষ নেতাদের পদযাত্রায়ও তিনি অংশ নেননি৷ অতীতে প্রেসিডেন্ট মাক্রোঁ-র সঙ্গে ব্যক্তিগত উষ্ণতার যে সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল, এবারের সফরে তার কোনো চিহ্ন দেখা যায়নি৷ বাকি নেতারাও ট্রাম্প-এর প্রতি কোনো বিশেষ উষ্ণতা দেখাননি৷

প্যারিসের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হবার পর বিমান থেকেই এক টুইট বার্তায় ট্রাম্প মাক্রোঁ-র একটি প্রস্তাবের তীব্র সমালোচনা করেন৷ ইউরোপীয় স্তরে এস যৌথ সেনাবাহিনী গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তার উদ্যোগ নস্যাৎ করে ট্রাম্প আবার সামরিক জোট ন্যাটোয় ইউরোপীয় দেশগুলির যথেষ্ট আর্থিক অবদানের অভাবের সমালোচনা করেন৷

মাক্রোঁ-র সুরে সুর মিলিয়ে জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল পারস্পরিক সহযোগিতার উপর জোর দেন৷ তাঁর মতে, কোনো দেশের পক্ষে একা বড় সমস্যাগুলির সমাধান করা সম্ভব নয়৷

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন অবশ্য এক সাক্ষাৎকারে ইউরোপীয় স্তরে সামরিক বাহিনীর প্রস্তাবের প্রতি নরম মনোভাব দেখিয়েছেন৷ তাঁর মতে, রাজনৈতিক ঐক্যের পর পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে ঐক্যের উদ্যোগের প্রচেষ্টা ইউরোপীয় ইউনিয়নের জন্য অত্যন্ত স্বাভাবিক পদক্ষেপ৷

এসবি/ডিজি (রয়টার্স, এএফপি)

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর যা ঘটেছিল