1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মান বিশ্ববিদ্যালয়ে দলীয় রাজনীতি

৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

জার্মানির বড় রাজনৈতিক দলগুলির যুব সংগঠনগুলি কম-বেশি সক্রিয়৷ বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে অবশ্য দলীয় রাজনীতি নিষিদ্ধ৷ জার্মানির তরুণ প্রজন্ম তাদের বিষয়গুলি নিয়ে নানা মঞ্চে সোচ্চার হবার সুযোগ পায়৷

https://p.dw.com/p/2s4LH
Studenten der Universität Bonn
ছবি: DW/A.Islam

দক্ষিণ এশিয়ায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রে রাজনীতি মানেই দলীয় রাজনীতি৷ অর্থাৎ, কোনো রাজনৈতিক ভাবধারায় উদ্বুদ্ধ হয়ে সমমনা মানুষের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে কোনো লক্ষ্য পূরণ করার দৃষ্টান্ত খুবই বিরল ঘটনা৷ বরং প্রতিষ্ঠিত কোনো রাজনৈতিক দল বা তার যুব, ছাত্র, কৃষক, নারী বা অন্য কোনো সংগঠনের ছত্রছায়ায় থাকাটাই অনেক সহজ৷ সেক্ষেত্রে সর্বোচ্চ নেতৃত্বই সাধারণত উপর থেকে নির্দেশ দিয়ে থাকে৷ নীচের স্তর থেকে উপরে দলের গতি নির্ধারণের ঘটনার কথা কেউ শুনেছে কি? 

সম্প্রতি জার্মানিতে সরকার গঠনের প্রচেষ্টার সময় একটি বিষয় সবার নজর কেড়েছিল৷ সামাজিক গণতন্ত্রী এসপিডি দল গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মহাজোট সরকারে যোগ দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে চেয়েছে৷ দলের বিশেষ করে যুব সংগঠন সেই প্রস্তাবের তুমুল বিরোধিতা করেছে৷ দলের শীর্ষ ও অন্যান্য নেতার সামনে দাঁড়িয়ে চাঁচাছোলা ভাষায় সমালোচনা করেছেন যুব সংগঠনের নেতা৷ এমন ঘটনা বাংলাদেশ বা ভারতে কল্পনাও করা যায় না৷ এই প্রেক্ষাপটে জার্মানিতে যুব সংগঠনগুলির ভূমিকা নিয়ে আগ্রহ দেখা দিয়েছে৷

জার্মানিতে বিশ্ববিদ্যালয় স্তরে ছাত্রদের সংগঠন বা কমিটি থাকলেও সেখানে দলীয় রাজনীতি নিষিদ্ধ৷ তবে সব বড় রাজনৈতিক দলেরই যুব সংগঠন রয়েছে৷ একদিকে তারুণ্যের হাওয়া, নতুন আইডিয়া নিয়ে আলোচনার মঞ্চ – অন্যদিকে ভবিষ্যৎ নেতা তৈরি করার আঁতুড়ঘর হিসেবেও কাজ করে থাকে এই সব সংগঠন৷ যেমন, প্রাক্তন চ্যান্সেলর গেয়ারহার্ড শ্র্যোডার এসপিডি যুব সংগঠনের সভাপতি ছিলেন৷ তারপর সংসদ সদস্য এবং শেষ পর্যন্ত চ্যান্সেলর হন৷ অনেকে আবার মনে করেন, একবার যুব সংগঠনে স্থান পেলে দলের শীর্ষ নেতৃত্বে পৌঁছাতে বরং সমস্যা হতে পারে৷ তবে সম্প্রতি এসপিডি দলের যুব সংগঠনকে যতটা খোলামেলাভাবে শীর্ষ নেতৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করতে দেখা গেছে, সব দলে সব ক্ষেত্রে সে রকম পরিবেশ দেখা যায় না৷ 

সার্বিকভাবে জার্মানিতে দলীয় রাজনীতি সংকটের মুখে পড়েছে৷ আদর্শের ভিত্তিতে প্রধান দলগুলি গঠিত হলেও একবিংশ শতাব্দীতে তাদের সেই নির্দিষ্ট চরিত্র অনেকটা ফিকে হয়ে গেছে৷ ফলে কোন বিষয়ের ভিত্তিতে কোন দলকে সমর্থন করা উচিত, তা নিয়ে ভোটারদের মনে সংশয় বাড়ছে৷ দলগুলির সক্রিয় সদস্যদের সংখ্যাও কমে চলেছে৷ বর্তমান কর্মব্যস্ত জীবনযাত্রায় দলীয় রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করার সময়ও অনেকেরই আর নেই৷ যুব সংগঠনগুলিও একই সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে৷

জার্মানির যুব সমাজের মধ্যে রাজনৈতিক সচেতনতার মাত্রা অতীতের তুলনায় অনেক কমে গেছে বলেও সমালোচনা শোনা যায়৷ উচ্চশিক্ষা ও পেশাগত প্রশিক্ষণের বেড়ে চলা চাপও তার অন্যতম কারণ৷ অনেক গবেষকের মতে, দল বা আদর্শের বদলে নির্দিষ্ট কিছু বিষয় নিয়ে তরুণ-তরুণীরা অনেক বেশি আবেগপ্রবণ৷ ফলে তাঁদের প্রতিবাদ-বিক্ষোভ বা নাগরিক উদ্যোগে বেশি অংশ নিতে দেখা যায়৷ রাজনৈতিক দলের বদলে পরিবেশবাদী সংগঠন গ্রিনপিস অথবা বিশ্বায়ন-বিরোধী সংগঠন ‘অ্যাটাক'-এর ছত্রছায়ায় তাঁরা প্রায়ই বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন৷

আজকের এই ডিজিটাল যুগে রাজনৈতিক কার্যকলাপের মঞ্চও বদলে যাচ্ছে৷ ফেসবুক, টুইটার, বা হোয়াটসঅ্যাপে লাগামহীন আদানপ্রদানের সুযোগের পূর্ণ সুযোগ নেয় তরুণ প্রজন্ম৷ দলীয় কাঠামো ও রীতিনীতির বেড়া ভেঙে যুব সংগঠনের ‘ভার্চুয়াল মঞ্চ'-গুলি নির্ভেজাল আদানপ্রদানের পরিবেশ সৃষ্টি করেছে৷ এসপিডি দলের যুব সংগঠনের ফেসবুক পাতায় তার স্বাদ পাওয়া যায়৷

এসবি/ডিজি

আপনার কি কিছু বলার আছে? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷