1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানিতে ভুয়া খবরের ছড়াছড়ি

৭ সেপ্টেম্বর ২০২১

নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে, জার্মানিতে ততই বড় হয়ে উঠছে প্রচারণায় ভুয়া খবরের প্রভাব নিয়ে শঙ্কা৷ এক সমীক্ষা বলছে, অপপ্রচারের সবচেয়ে বড় শিকার একজন প্রার্থী এবং তিনি নারী৷

https://p.dw.com/p/401hU
Impulse by the Chairwoman of the Green Party of Germany Annalena Baerbock | DW Global Media Forum 2021
ছবি: Philipp Böll/DW

আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর নতুন সংসদ এবং চ্যান্সেলর নির্বাচন করবে জার্মানি৷ আভাজ নামের এক বেসরকারি সংস্থার সমীক্ষা বলছে, নির্বাচনের প্রচারণাকে ঘিরে ভুল তথ্য বা ভুয়া খবর ছড়ানো হচ্ছে ব্যাপক হারে৷ সবচেয়ে বেশি ভুয়া খবরের শিকার সবুজ দলের চ্যান্সেলর প্রার্থী আনালেনা বেয়ারবক৷

আভাজ-এর গবেষকরা অসংখ্য ভুয়া খবর বিশ্লেষণ করে দেখেছেন, রক্ষণশীল প্রার্থী আরমিন লাশেট, সামাজিক গণতান্ত্রিক দলের প্রার্থী ওলাফ শলৎস-সহ অন্য সব প্রার্থীর চেয়ে ৭০ শতাংশেরও বেশি ভুয়া তথ্য ছড়ানো হচ্ছে ৪০ বছর বয়সি বেয়ারবকের বিরুদ্ধে৷

আভাজ-এর ক্যাম্পেইন ডিরেক্টর ক্রিস্টফ শট জানান, আনালেনা বেয়ারবক নির্বাচনি প্রচারণায় অনেক দেরিতে নেমেছেন, তারপরও তার বিরুদ্ধে অপপ্রচারই সবচেয়ে বেশি৷ এর সম্ভাব্য কারণ জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘‘তিনি নারী- এ কারণে তা হতে পারে, বা এমনও হতে পারে যে তিনি বেশ কিছু ‘কঠিন' ধারণা এবং বার্তা নিয়ে এগিয়ে এসেছেন বলেই তাকে সহজে এসবের শিকার করা যাচ্ছে৷''

ভুয়া খবরের উদাহরণ

চ্যান্সেলর প্রার্থী হিসেবে আনালেনা বেয়ারবকের নাম ঘোষণার পরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া হয় তিনি নাকি শিশুদের জন্য ঘরে সব ধরনের প্রাণী পোষা নিষিদ্ধ করতে চেয়েছেন৷ ভুয়া খবরটি চোখে পড়া মাত্রই সবুজ দলের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ জানানো হয়৷ পরিষ্কার ভাষায় বলা হয়, খবরটি সর্বৈব মিথ্যা৷ কিন্তু অপপ্রচার তাতে থামেনি৷ নতুন নতুন ভুয়া খবর আসতে থাকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম-প্রাভাবিত মূলধারার গণমাধ্যমে৷

ভুয়া খবরের আশঙ্কাজনক বিস্তার

ভুয়া খবরের বিরুদ্ধে সবুজ বা অন্য দলগুলোর পদক্ষেপ দৃশ্যত খুব বেশি কাজে আসছে না৷ আভাজ-এর সমীক্ষা বলছে, আসন্ন নির্বাচন নিয়ে প্রচার করা ভুয়া খবর খুব দ্রুতই কোনো-না-কোনোভাবে পৌঁছে যাচ্ছে বেশির ভাগ ভোটারের কাছে৷ অর্ধেকেরও বেশি ভোটার একটা ভুয়া খবর অন্তত পড়ছেন, শুনছেন বা দেখছেন- এমনটিও জানাচ্ছেন গবেষকরা৷

ভুয়া খবরের মূল উৎস

উৎস মূলত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম৷ ফেসবুক, টুইটার, ইন্সটাগ্রাম, - বলতে গেলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সব প্ল্যাটফর্ম থেকেই ছড়ানো হচ্ছে ভুয়া খবর৷ গবেষকরা বলছেন, আজকাল যে কেউ ঘরে বসে যে কারো ছবি এডিট করে যা খুশি লিখে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করতে পারেন এবং নির্বাচনকে সামনে রেখে তা-ই করা হচ্ছে৷

মূলধারার গণমাধ্যমের ভূমিকা

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সূতিকাগার হলেও ভুয়া খবর প্রচারে খুব বড় ভূমিকা রাখছে মূল ধারার গণমাধ্যম৷

আভাজ-এর গবেষকরা জানিয়েছেন, সমীক্ষায় অংশ নেয়া প্রায় এক তৃতীয়াংশ মানুষ মনে করেন, মূল ধারার গণমাধ্যম যাচাই-বাছাই করে খবর প্রচার করলে ভুয়া খবরের দৌরাত্ম নিয়ন্ত্রণ করা যেতো৷ কারণ, তাদের দাবি, তাদের কাছে যেসব ভুয়া খবর এসেছে সেগুলো তারা মূল ধারার গণমাধ্যমেই আগে দেখেছেন, শুনেছেন বা পড়েছেন৷

আভাজ-এর ক্যাম্পেই ডিরেক্টর ক্রিস্টফ শট মনে করেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে কোনো আলোচিত বা বিখ্যাত ব্যক্তির বিষয়ে যে কোনো খবর এলেই তা প্রচার করে দেয়া মূলধারার গণমাধ্যমের কাজ হতে পারে না৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প যে প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠেই নানা বিষয়ে টুইট করতেন আর গণমাধ্যম তা প্রচার করতো, তাতেও মার্কিন গণমাধ্যম যথাযথভাবে গণমাধ্যমের দায়িত্ব পালন করেছে বলে তিনি মনে করেন না৷ তার মতে, সোশাল মিডিয়ার কোনো খবর গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে গণমাধ্যমের উচিত তা যাচাই করে ‘‘দায়িত্ব নিয়ে বৃহত্তর আঙ্গিক এবং বিশ্লেষণে ভুল তথ্য কিভাবে ছড়িয়ে পড়ে তা সবাইকে ব্যাখ্যা করে বোঝানো৷''

ইয়ানোশ ডেলকার/ এসিবি