1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মার্কিন সৈন্যচালনার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ

৩১ মে ২০১৮

পূর্ব জার্মানির ব্রান্ডেনবুর্গ রাজ্যের একটি ঘাঁটি থেকে মার্কিন সেনারা দুই হাজারেরও বেশি সামরিক যান পোল্যান্ডে নিয়ে যাচ্ছে৷ সোমবার এর বিরুদ্ধে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছিল বাম দল, কমিউনিস্ট পার্টি ও শান্তি কর্মীরা৷

https://p.dw.com/p/2yhok
ছবি: DW/B. Knight

‘আটলান্টিক রিজল্ভ’ নামে ন্যাটোর এক অভিযানের অংশ হিসেবে মার্কিন সেনাদের এই স্থান পরিবর্তন৷ পূর্ব ইউরোপে ন্যাটো জোটের দেশগুলোর সীমান্ত সুরক্ষার উদ্দেশ্যে এই অভিযান৷ যদিও সমালোচকরা বলছেন, এসব সীমান্তে রুশ বাহিনীর ব্যাপক উপস্থিতি রয়েছে৷ সেই তুলনায় ন্যাটোর যত সদস্য মোতায়েন করা হচ্ছে, তা খুবই কম৷ তবে ছোট সদস্যরাষ্ট্রগুলোর কথাও যে ন্যাটো গুরুত্ব দিয়ে ভাবে, সেটি দেখানোই আটলান্টিক রিজল্ভ অপারেশনের অন্যতম উদ্দেশ্য৷ ২০১৪ সালে রাশিয়ার ইউক্রেনের ক্রাইমিয়া দখল ও ডনবাস যুদ্ধের প্রতিক্রিয়ায় এই অপারেশন শুরু হয়৷

এই অভিযানের আওতায় জার্মানি থেকে পোল্যান্ডে মার্কিন সামরিক যানের স্থান পরিবর্তনের কাজ চলবে জুনের মাঝামাঝি পর্যন্ত৷

পূর্ব জার্মানির বাসিন্দাদের একটি অংশের কাছে ঐ অঞ্চলে মার্কিন সেনাদের উপস্থিতির বিষয়টি এখনও স্পর্শকাতর৷ ফলে একসঙ্গে এত মার্কিন সামরিক যান চলাচলের বিষয়টি একটু কঠিন হবে বলে ধরে নিয়েছিল মার্কিন সেনাবাহিনী৷ তাই মে'র মাঝামাঝি জার্মান সেনাবাহিনীর সঙ্গে মিলে একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল৷ সেই সময় যুক্তরাষ্ট্রের কর্নেল উইলিয়াম গলব্রেইথ বলেছিলেন, ‘‘আমরা পরীক্ষা করে দেখছি, জরুরি অবস্থায় কীভাবে সৈন্যচালনা করা যায়৷ আমাদের এই অভিযান পুরোপুরি স্বচ্ছ৷ এখানে কোনো কিছু লুকানোর নেই৷’’

এরপরও সোমবার বিক্ষোভের ডাক দিয়েছিল বাম দল, জার্মান কমিউনিস্ট পার্টি ও শান্তি কর্মীরা৷ অংশগ্রহণকারী ছিলেন প্রায় ৫০ জন৷ ব্রান্ডেনবুর্গ রাজ্য সরকারের শ্রমমন্ত্রী ও বাম দলের রাজনীতিক ডিয়ানা গোলৎসে এর মধ্যে একজন৷ ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, ‘‘আমরা বিক্ষোভের ডাক দিয়েছি, কারণ, আমরা ব্রান্ডেনবুর্গে এমন মহড়ার সঙ্গে পরিচিত নই৷ আমরা তাদের কোনোরকম বিরোধিতা ছাড়াই চলে যেতে দিতে চাইনি৷ আমরা মনে করি, পোল্যান্ড ও রাশিয়া সীমান্তে সেনা মোতায়েনের এটা ঠিক সময় নয়৷ আমাদের ভেবে দেখতে হবে, কীভাবে সহিংসতার চক্র থেকে বেরিয়ে আসা যায়৷ এরজন্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টা প্রয়োজন৷’’

ভালট্রড প্লারে নামের এক বিজ্ঞানী ‘আমি গো হোম’ লেখা একটি ব্যানার নিয়ে উপস্থিত হয়েছিলেন৷ উল্লেখ্য, জার্মানরা নিন্দনীয় অর্থে অ্যামেরিকানদের ‘আমি’ বলে ডাকেন৷ প্লারে বলেন, রাশিয়া সম্পর্কে জার্মানদের অনুভূতিতে পার্থক্য আছে৷ কমিউনিস্ট জিডিআর শাসনামলে বেড়ে ওঠা অনেকে মনে করেন, ইউএসএসআর জার্মানিকে নাৎসিদের কাছ থেকে মুক্ত করেছে৷ তিনি বলেন, ‘‘পশ্চিমের (জার্মানির) অনেকে জানেন না যে, পূর্বের মানুষজন বলেন, রুশরা আমাদের কখনও কোনো ক্ষতি করেনি৷ আমরা কখনও রাশিয়ার খারাপ অভিসন্ধির শিকার হইনি৷ আর এখন আমাদের সবাইকে উত্তেজিত করে তোলার চেষ্টা পশ্চিম কিংবা পূর্ব জার্মানির মানুষের স্বার্থে নয়৷ এর পেছনে অন্য শক্তি কাজ করছে, যারা চায় আমরা একে অপরের সঙ্গে লড়ি৷’’

Anti-NATO Demo in Brück, Brandenburg
জার্মানরা নিন্দনীয় অর্থে অ্যামেরিকানদের ‘আমি’ বলে ডাকেনছবি: DW/B. Knight

তবে প্লারের এই বক্তব্যের সঙ্গে সবাই একমত নন৷ বিক্ষোভ যেখানে অনুষ্ঠিত হয়েছে তার কাছের ভবনগুলোতে বাস করা অনেকে সৈন্যচালনা দেখতে প্লাস্টিকের চেয়ার নিয়ে বাইরে বের হয়েছিলেন৷ তাদের মধ্যে এক নারী বললেন, ‘‘সত্যি করে বললে, আমি বিক্ষোভের কারণে বেশি বিরক্ত৷’’ বিক্ষোভ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘‘এসবের উদ্দেশ্য কী? আমার মনে হয়, পুটিন একটা হুমকি৷ তিনি যদি এত ভালো মানুষই হন, তাহলে কেজিবিতে ছিলেন কেন?’’

বেন নাইট/জেডএইচ