1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানির মিউজিয়ামে অভিজ্ঞতা

১০ অক্টোবর ২০১৬

শুধু নামি-দামি বস্তু থাকলেই কোনো মিউজিয়াম দর্শকদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে না৷ প্রদর্শনীর মানও একটা বড় বিষয়৷ বিজ্ঞানের অনেক জটিল বিষয়কে রোমাঞ্চকর করে তুলছে জার্মানির এক মিউজিয়াম৷

https://p.dw.com/p/2R3zl
Internationaler Museumstag 2013
ছবি: picture-alliance/dpa

হালে শহরে প্রাগৈতিহাসিক যুগের মিউজিয়ামে জার্মানির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সংগ্রহ শোভা পাচ্ছে৷ প্রদর্শনীর মান চোখে পড়ার মতো৷ মিউজিয়মের কিউরেটর যে সিনেমা ও থিয়েটার ভালোবাসেন, তা বুঝতে অসুবিধা হয় না৷ দর্শকরা মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে এই অমূল্য সম্পদ ও তা তুলে ধরার অভিনব কায়দা উপভোগ করছেন৷ তবে কোনো বস্তু দর্শকদের সামনে আনার আগে সেটি ভালো করে পরীক্ষা করে প্রস্তুত করে তোলা হয়৷ যেমন আদি মানবের শরীরের অবশিষ্ট অংশ তার চারিপাশের মাটি সহ উদ্ধার করা হয়েছে৷

মিউজিয়ামের ওয়ার্কশপে বিশেষজ্ঞ অত্যন্ত যত্ন করে সংরক্ষণের কাজ করেন৷ জার্মানির অন্যতম রক্তাক্ত সংগ্রামের শিকার হয়েছিল একটি মানুষ৷ শুধু প্রাচীন যুদ্ধক্ষেত্র নয়, সে যুগের আবর্জনা মানুষের জীবনযাত্রা সম্পর্কেও আশ্চর্য তথ্য দিতে পারে৷ যেমন প্রায় ৫০০ বছর পুরানো এক বাড়ির সেলারে কাচের পাত্রের টুকরো পাওয়া গিয়েছিল৷ আবার আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার পর দেখা গেলো, সেগুলি আসলে এক অ্যালকেমিস্ট-এর গবেষণাগারের পাত্র ছিল৷ হাইনরিশ ভুন্ডারলিশ আর লোভ সামলাতে পারলেন না৷

রসায়নবিদ হাইনরিশ ভুন্ডারলিশ বলেন, ‘‘সম্পূর্ণ কাচের তৈরি এক রিটর্ট আছে৷ আমরা বেশ কিছু পদার্থের চিহ্ন পেয়েছি৷ অনেক কাচের পাত্রে অ্যান্টিমনি কম্পাউন্ড ছিল৷ ষোড়শ শতাব্দীতে অ্যালকেমিস্টদের কাছে সেটা ছিল অত্যন্ত প্রিয় রাসায়নিক দ্রব্য৷ কারণ ততদিনে মানুষ জেনে গিয়েছিল, যে তরল অ্যান্টিমনি গলানোর পাত্রে সোনা শোধন করতে পারে৷''

আধুনিক চিকিৎসাশাস্ত্রের পথিকৃৎ হিসেবে অ্যালকেমিস্ট ও ডাক্তার প্যারাসেলাস কীভাবে প্রতিষেধক উদ্ভাবন করেছিলেন, মিউজিয়ামের গবেষণাগারে ভুন্ডারলিশ তা পরীক্ষা করছেন৷ হাইনরিশ ভুন্ডারলিশ বলেন, ‘‘প্যারাসেলাস ভেবেছিলেন, কম পরিমাণ নিলে বিষাক্ত হবে না, নিরাময়ও হবে৷ বিখ্যাত যে উক্তির মাধ্যমে আধুনিক ওষুধবিদ্যার ভিত্তি বোঝানো হয়, সেই ‘ডোজ বা পরিমাণ ভুল হলে বিষ হয়ে উঠতে পারে' – সেটি আসলে প্যারাসেলাস-এরই৷ তিনি মানুষের উপর অ্যান্টিমনি হেভি মেটাল প্রয়োগ করে যে বিফল পরীক্ষা চালিয়েছিলেন, তার পরই তাঁর এই উপলব্ধি হয়৷''

ভুন্ডারলিশ-এর জন্য বিজ্ঞান শুধু পেশা নয় – এতে অনেক আনন্দ ও রোমাঞ্চ পাওয়া যায়৷ এর ফলে মিউজিয়ামের কিউরেটর হারাল্ড মেলার-এর কাছে অসংখ্য প্রাচীন বস্তু জমা হয়েছে৷ তবে একটি প্রাগৈতিহাসিক বস্তু চোখে পড়ার মতো৷ কমপক্ষে ৩,৬০০ বছর পুরানো ব্রোঞ্জ ও সোনা দিয়ে তৈরি একটি চাকতি৷ প্রো. হারাল্ড মেলার বলেন, ‘‘এই ‘স্বর্গীয় চাকতি' অবশ্যই বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের মধ্যে পড়ে৷''

এই চাকতি আবিষ্কারের কাহিনি থ্রিলার কাহিনির মতো৷ কবর-ডাকাতরা মেটাল ডিটেক্টর ব্যবহার করে এটি পেয়েছিল৷ ডাকাতরা অবশ্য বস্তুটির প্রকৃত মূল্য বুঝতে না পেরে কালোবাজারে বেচে দেয়৷ ‘‘২০০২ সালে বাসেল শহরে এক পুলিশ অভিযানে ক্রেতাদের বামাল সমেত আটক করা হয়৷''

এ ভাবেই ‘স্কাই ডিস্ক' হালে শহরের মিউজিয়ামের জিম্মায় আসে৷ এমন বিরল আবিষ্কারের উৎস আজও রহস্যের মোড়কে রয়ে গেছে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান