1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিদেশি মুখ

নাওমি কনরাড/এসবি২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৩

জার্মানির নির্বাচনের পর সরকার গঠনে বিলম্ব হচ্ছে বটে, কিন্তু সংসদে দেখা যাচ্ছে পুরানো-নতুন নানা মুখ৷ তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েকজন বিদেশি বংশোদ্ভূত৷ এবার মন্ত্রী সহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পদেও তাঁদের কয়েকজনকে দেখা যেতে পারে৷

https://p.dw.com/p/19puO
Der Direktkandidat des Bündnis 90/Die Grünen für Mitte, Özcan Mutlu, hängt am 04.08.2013 in Berlin Wahlplakate auf. Foto: Britta Pedersen/dpa
ও্যজচান মুটলুছবি: picture-alliance/dpa

৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে জার্মানিতে বসবাস করছেন তুর্কি বংশোদ্ভূত নারী আজিজে টাংক৷ জার্মান সংসদের নিম্ন কক্ষ বুন্ডেসটাগ-এ বামপন্থি দল ‘ডি লিংকে'-র সদস্য তিনি৷ সাংবাদিকরা না ভেবেই প্রায়ই তাঁকে প্রশ্ন করেন, ‘‘আচ্ছা, আমাদের এখানে আপনার কেমন লাগে?'' এমন প্রশ্ন শুনলে মনে হয়, তিনি যেন সুটকেস নিয়ে কিছুদিনের জন্য জার্মানিতে বেড়াতে এসেছেন৷

আজিজে মনে করেন, ‘আসল' জার্মানরা সবাইকেই নির্দিষ্ট ছাঁচে ফেলতে চায়৷ তিনি যেমন অভিবাসীদের ছাঁচে পড়েন৷ জেনেশুনেই জার্মান ভাষা বলেন কিছুটা বিদেশি উচ্চারণ বা ‘অ্যাকসেন্ট'-এর ছোঁয়া রেখে৷ ব্যাকারণেও সামান্য ভুল থেকে যায়৷ আজিজের আশা, একটা সময় আসবে যখন আর কেউ প্রশ্ন করবে না যে তিনি কোন দেশ থেকে এসেছেন৷

২০০৯ সালে চাকুরি জীবন থেকে অবসর নেয়া পর্যন্ত আজিজে টাংক প্রায় ২০ বছর ধরে বার্লিন শহরে বিদেশিদের ইন্টিগ্রেশন দপ্তরের প্রধান হিসেবে কাজ করেছেন৷ দলীয় রাজনীতিতে কোনোদিন যুক্ত ছিলেন না, শুধু নারী আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন৷ বামপন্থি দল যখন সংসদ নির্বাচনে তাদের প্রার্থী হওয়ার প্রস্তাব নিয়ে এলো, তিনি সঙ্গে সঙ্গে রাজি হয়ে যান৷ অভিবাসীদের সমানাধিকারের পক্ষে, বর্ণবাদের বিরুদ্ধে তিনি বরাবরই সোচ্চার ছিলেন, ভবিষ্যতেও থাকতে চান৷ তাছাড়া বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের সামনে আদর্শ ব্যক্তির প্রয়োজন আছে বলে তিনি মনে করেন৷ নির্বাচনি প্রচারের সময় তিনি তুর্কি ও ইরানি বংশোদ্ভূত কয়েকজন স্কুল-পড়ুয়াকে বলেছিলেন, ‘‘আজ পোস্টারে আমার ছবি দেখছো, ভবিষ্যতে তোমাদের মধ্যে একজনের ছবির পোস্টার দেখতে চাই৷''

এবারের বুন্ডেসটাগ-এ মোট ৩৫ জন বিদেশি বংশোদ্ভূত সাংসদ উপস্থিত থাকছেন৷ ২০০৯ সালের নির্বাচনে সংখ্যাটি ছিল ১১৷ তুর্কি বংশোদ্ভূত সাংসদদের সংখ্যা ৫ থেকে বেড়ে ১১-য় পৌঁছেছে৷ সংখ্যাটা বেশি নয়৷ কারণ জার্মানির জনসংখ্যার বিচারে প্রায় ২০ শতাংশ মানুষই বিদেশি বংশোদ্ভূত৷ সংসদেও তাদের আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব থাকা উচিত বলে অনেকে মনে করেন৷ তাতে আধুনিক জার্মান সমাজে বহু জাতি-ধর্ম-বর্ণের বৈচিত্র্যের প্রতিফলন ঘটবে৷ অভিবাসীরাও উৎসাহ পাবেন৷ তাঁদের দেখে ভোট দেবেন, নিজেরাও হয়ত প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেবেন৷

জার্মানির রাজনৈতিক দলগুলিও অভিবাসী ভোটারদের আকর্ষণ করতে নির্বাচনে আরও অভিবাসী প্রার্থীর খোঁজ করছে৷ এবারের নির্বাচনেই তাঁদের সংখ্যা ছিল উল্লেখযোগ্য৷ তাঁদেরই একজন ও্যজচান মুটলু সবুজ দলের সাংসদ নির্বাচিত হয়েছেন৷ তিনি অবশ্য আজিজে টাংক-এর মতো এত সহনশীল নন৷ বার বার নিজের পূর্বপুরুষের দেশ সম্পর্কে প্রশ্ন করলে বিরক্ত হন৷ তিনি সবুজ দলের শিক্ষা নীতি বিষয়ক মুখপাত্র হওয়া সত্ত্বেও সাংবাদিকরা তাঁকে বার বার বিদেশি বা বিদেশি বংশোদ্ভূত মানুষের সমাজে সম্পৃক্ত করার বিষয়ে প্রশ্ন করেন৷ অন্যান্য অনেক সাংসদও তাঁকে ‘তুর্কি এমপি' বলে থাকেন৷ ও্যজচান আগামী সরকারে মন্ত্রী অথবা প্রতিমন্ত্রী পদে বিদেশি বংশোদ্ভূত রাজনীতিকদের দেখতে চান৷ তবে তাঁর মতে, জার্মানি এখনো তাঁদের এর থেকে বড় ভূমিকায় দেখার জন্য প্রস্তুত হয়নি৷

গতবারের সংসদে তিনজন ভারতীয় বংশোদ্ভূত সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন৷ বামপন্থি দলের রাজু শর্মা ও সবুজ দলের ইয়োসেফ ভিংকলার এবার সাংসদ হতে পারেন নি৷ কিন্তু সামাজিক গণতন্ত্রী দলের স্বরাষ্ট্র নীতি বিষয়ক মুখপাত্র সেবাস্টিয়ান এডাটি আবার বুন্ডেসটাগ-এ ফিরেছেন৷ গত সরকারের কার্যকালে তিনি বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বও পালন করেছেন৷ ভবিষ্যতে তাঁকে মন্ত্রী হিসেবেও দেখা যেতে পারে – এমন সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যায় না৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য