1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

গ্রামীণ ব্যাংক রক্ষার শপথ

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা২৫ জুন ২০১৩

গ্রামীণ ব্যাংক নিয়ে কমিশনের রিপোর্ট এবং সুপারিশ প্রত্যাখ্যান করেছে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ৷ পর্ষদ সদস্যরা মনে করেন, সরকার ব্যাংকটি দখলে নেয়ার জন্য গ্রামীণ ব্যাংক কমিশনের মাধ্যমে নানা সুপারিশ করিয়েছে৷

https://p.dw.com/p/18vEr
ছবি: picture-alliance / Godong

তাঁরা বলছেন, জীবন দিয়ে হলেও তাঁরা তাঁদের ব্যাংক রক্ষা করবেন৷

পরিচালনা পর্যদের নয়জন নারী সদস্য এবং সাবেক তিনজন সদস্য সোমবার ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন যে, তাঁরা কোনোভাবেই গ্রামীণ ব্যাংক ভাঙতে দেবেন না৷ তাঁদের ব্যাংকে সরকারের আধিপত্য প্রতিষ্ঠার কোনো ষড়যন্ত্রও সফল হবে না৷ গ্রামীণ ব্যাংক নিয়ে কমিশনের রিপোর্টের তথ্য সংবাদমাধ্যমে প্রকাশের কয়েকদিনের মাথায় পরিচালকরা সংবাদ সম্মেলন করে তাঁদের অবস্থান ব্যাখ্যা করলেন৷ কমিশনের সুপারিশে গ্রামীণ ব্যাংককে ভেঙে আঞ্চলিকভাবে ১৯ বা তারও বেশি স্বাধীন গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠার কথা বলা হয়েছে৷ সেক্ষেত্রে গ্রামীণ ব্যাংকের কেন্দ্রীয় কার্যালয় শুধু নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ হিসেবে কাজ করবে৷ এছাড়া, সরকারের নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য সরকারের শেয়ার ৩ ভাগ থেকে ৫১ ভাগে উন্নীত করার সুপারিশ করা হয়৷

গ্রামীণ ব্যাংকের এই নয়জন নারী পরিচালক ভোটের মাধ্যমে তিন বছরের জন্য নির্বাচিত৷ তাঁরা গ্রামীণ ব্যাংকের গ্রাহক ও শেয়ার হোল্ডার৷ তৃনমূল থেকে উঠে আসা এই পরিচালকদের একজন তাহসিনা খাতুন৷ সংবাদ সম্মেলনে তিনিই লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন৷ সোমবার রাতে তিনি ডয়চে ভেলেকে জানান, গ্রামীণ ব্যাংক কেন্দ্রীয়ভাবে পরিচালিত একটি প্রতিষ্ঠান৷ ৪০টি জোনে ভাগ করে এর কার্যক্রম পরিচালিত হয়৷ এর অধীনে আছে সাব জোন এবং শাখা৷ এর পরিচালকরা দরিদ্র সঞ্চয়ী নারী গ্রাহকদের মধ্য থেকে নির্বাচিত হন৷ ব্যাংকের সব ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা এই পরিচালকদের৷ তার ওপর এ পদ্ধতিতে কাজ করেই গ্রামীণ ব্যাংক সফল হয়েছে৷ গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে যৌথভাবে নেবেল জয়ী এই প্রতিষ্ঠানটি সারা দুনিয়ায় এখন একটি মডেল৷ সেই প্রতিষ্ঠানের কর্মপদ্ধতি পরিবর্তন করার একটিই উদ্দেশ্য থাকতে পারে৷ আর তা হলো গ্রামীণ ব্যাংককে ধ্বংস করা ৷ তিনি বলেন, জীবন থাকতে গ্রামীণ ব্যাংকের ৮৪ লাখ নারী সদস্য ব্যাংকের কোনো ক্ষতি হতে দেবে না৷

তিনি বলেন, সরকার ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদ থেকে সরিয়ে দেয়ার পরও ব্যাংকটি তার আপন গতিতে চলছে৷ কারণ তিনি এমন এক শক্ত কাঠামো ও পদ্ধতির ওপর ব্যাংকটি দাড় করিয়েছেন, যা ব্যাংকটিকে একক কোনো ব্যক্তির ওপর নির্ভরশীল করেনি৷ তারপরও সরকার ব্যাংকটিকে কুক্ষিগত করতে চাইছে৷ আর এজন্যই সরকারের শেয়ার ৫১ ভাগে উন্নীত করার সুপারিশ করেছে কমিশন৷ তিনি প্রশ্ন করেন, প্রায় এক কেটি গরীব নারী কেন তাঁদের ব্যাংক সরকারকে দেবে? সরকারই বা কেন তাঁদের প্রতিষ্ঠান কেড়ে নেবে? তিনি বলেন, এখন সরকারে শেয়ার মাত্র ৩ শতাংশ৷ তাতেই সরকারের খবরদারিতে তাঁরা অতিষ্ঠ৷ সরকারের ৫১ ভাগ শেয়ার হলে সরকার ব্যাংকের মূল মালিক ৮৪ লাখ নারীর মালিকানাই আর স্বীকার করবে না৷ কিন্তু এই অবস্থা নারীরা কোনোভাবেই মেনে নেবেন না৷ তাঁর মতে, শুধু বাংলাদেশ নয় সারা বিশ্বের নারীরা তাঁদের সঙ্গে থাকবেন ৷

তাহসিনা খাতুন বলেন, গ্রামীণ ব্যাংক থেকে ক্ষুদ্র ঋণ নিয়ে তাঁরা শুধু ব্যবসা-বাণিজ্যই করছেন না৷ তাঁরা তাঁদের সন্তানদের পড়াশুনা, আবাসন, স্বাস্থ্য সেবারও ব্যবস্থা করছেন৷ গ্রামীণ ব্যাংকের কারণে নিম্নবিত্ত নারীদের ক্ষমতায়ন হয়েছে৷ তাঁদের জাগিয়ে তুলেছে এই গ্রামীণ ব্যাংক৷ তাই ব্যাংক রক্ষায় তাঁরা প্রয়োজনে আন্দোলন গড়ে তুলবেন৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য