1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জীবিত থাকলে ২৩শে অগাস্ট শতবর্ষে পা রাখতেন দেবব্রত বিশ্বাস

২১ সেপ্টেম্বর ২০১০

রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী দেবব্রত বিশ্বাস৷ ডয়চে ভেলে বাংলা বিভাগের কলকাতা প্রতিনিধি শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায় কথা বলেছেন এমন দুজনের সঙ্গে, যাঁরা খুব কাছ থেকে দেবব্রত বিশ্বাস-কে দেখেছেন৷

https://p.dw.com/p/PHxm
রবীন্দ্রসংগীতের জনপ্রিয় শিল্পী ছিলেন দেবব্রত বিশ্বাসছবি: tagoreweb.in

জন্ম শতবর্ষে তাঁরা স্মরণ করলেন প্রিয় মানুষটিকে৷

দেবব্রত বিশ্বাসের কণ্ঠে রবীন্দ্রনাথের অতি পরিচিত গান ‘তোমার হল শুরু আমার হল সারা'-র জার্মান অনুবাদ৷ অথবা ‘হ্যারা আমারে গান গাইতে দিল না, আমি গাইতাম পারলাম না' এরকম বেশ কিছু বিরল গানের সংগ্রহ আছে কলকাতার দেবব্রত বিশ্বাস অ্যাকাদেমির কাছে৷ দেবব্রত বিশ্বাসের দীর্ঘদিনের প্রতিবেশী, সুখ-দুঃখের সঙ্গী কানু সাহা এই অ্যাকাদেমির মূল সংগঠক৷ তিনি ডয়চে ভেলে-কে জানালেন, এই আকাদেমির পরিকল্পনা প্রথম করেছিলেন তাঁর প্রিয় জর্জদার জীবদ্দশাতেই৷ তাঁর মৃত্যুর কয়েকবছর আগে একদিন দুপুরবেলা এমনি কথা বলতে বলতে বলেছিলেন, ভাবতাছি আপনার নামে একটা অ্যাকাদেমি করুম৷ জর্জদা হুঃ করে একটা আওয়াজ করে হেসে উড়িয়ে দিয়েছিলেন৷ তারপর অনেকদিন কেটে গেছে৷ তারপর ওঁরা ভাবলেন যে দেবব্রত বিশ্বাস তো তাহলে একদিন হারিয়েই যাবেন৷ তাঁর থেকে রেকর্ড-সিডির বাইরেও তিনি লোকের মধ্যে থাকুন৷ সেই চেষ্টাই ওরা করছেন৷ যদিও এখনও পুরোটা পেরে ওঠেননি৷ তবে চেষ্টাটা প্রায় সফল হওয়ার মুখে৷ যে জর্জদার ভাবধারায় ওঁরা গান শেখাতে পারবেন নবীন প্রজন্মকে৷

দেবব্রত বিশ্বাসের কাছে টানা ১০ বছর গান শিখেছেন, এক অনুষ্ঠানে একসঙ্গে গানও গেয়েছেন পূরবী মুখোপাধ্যায়৷ শুধু সংগীত শিক্ষক নন, দেবব্রত বিশ্বাস যাঁর কাছে ছিলেন জর্জ মামা৷ আকাশবাণী-তে পুরবী দেবী যেবার প্রথম গান গাইবেন, পাছে ছাত্রীটি ঘাবড়ে যায়, পাশে গীতবিতান নিয়ে ঠায় বসে ছিলেন, আঙুল দিয়ে প্রতিটি লাইন ধরিয়ে দেওয়ার জন্য৷ এক অনুষ্ঠানে ১৩ বছরের পূরবী-র গান শুনে দেবব্রত বিশ্বাস নিজেই এসে গান শেখাবার প্রস্তাব দিয়েছিলেন৷ কথা ছিল সপ্তাহে একদিন শেখাতে আসবেন, আসতেন পাঁচ দিন৷ প্রথম যেদিন ছাত্রীকে নিয়ে বসেছিলেন, রবীন্দ্রনাথের একটি গান পড়তে দিয়েছিলেন৷ পড়া শেষ করার পর পূরবী দেবী মুখের দিকে তাকাতে প্রশ্ন করেছিলেন, কিছু বোঝলা?

পেটে বিদ্যে না থাকলে রবীন্দ্রনাথের গান গাওয়া যায় না৷ সুর তাল নয়, গানটাকে বুঝতে হয়, ছাত্রীকে বলতেন তাঁর জর্জ মামা৷

দেবব্রত বিশ্বাস আজীবন মগ্ন থেকেছেন নিজের গানে৷ তাঁর বিরোধিতা হয়েছে, তাঁকে ভাঙিয়ে ব্যবসা হয়েছে, কিন্তু সেই দীনতা তাঁকে স্পর্শ করতে পারেনি৷ তাই আজও তিনি অমলীন, ভাস্বর, এই গানের ভুবনে৷

প্রতিবেদন: শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ