1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জয়ের আশায় নির্বাচনেই থাকলো ঐক্যফ্রন্ট

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
২৭ ডিসেম্বর ২০১৮

সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে নির্বাচনে থাকছে বিএনপির প্রাধান্যে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট৷ ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, ‘‘১৬ ডিসেম্বরের মতো ৩০ ডিসেম্বরও আমাদের বিজয় হবে৷''

https://p.dw.com/p/3AgfG
Bangladesch Kamal Hossain and BNP Secretary General Mirza Fakhrul Islam Alamgir
ছবি: bdnews24

বৃহস্পতিবার বিকেলে ঐক্যফ্রন্টের  সংবাদ সম্মেলনটি ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি করেছিল নানা কারণে৷  বিএনপি, তথা ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচন বর্জন করতে পারে, এমন কথা শোনাযাচ্ছিল কয়েকদিন ধরে৷ বিশেষ করে মঙ্গলবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদার সঙ্গে ড. কামাল হোসেনের উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের পর এই আলোচনা আরো জেরালো হয়৷ বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের কেউ কেউ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন৷ কিন্তু বৃহস্পতিবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলনের আগে জরুরি বৈঠকে নির্বাচনে থাকার পক্ষেই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়৷ এরপর সংবাদ সম্মেলনে আসেন ফ্রন্ট নেতারা৷

সংবাদ সম্মেলনে ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘‘জনগণই দেশের মালিক৷ তাঁরা প্রজা নয়৷ জনগণের মালিকানা প্রতিষ্ঠা করা হবে৷ বঙ্গবন্ধু, তাজউদ্দীন জীবন দিয়েছেন৷ তাঁদেরকে আমরা স্মরণ করি শ্রদ্ধার সঙ্গে৷ ১৪ ডিসেম্বর, ১৬ ডিসেম্বর তাঁদের আমরা শ্রদ্ধা জানাই৷ আজকের এই নির্বাচন হলো তাঁদের স্বপ্নকে বাস্তবয়ানের নির্বাচন৷ আজকে আমাদের ঐক্যের ভিত হলো, স্বাধীনতার শহীদদের স্বপ্ন৷ সংবিধানে শহিদদের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেয়ার জন্য এই নির্বাচন৷ ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর আমরা যেমন বিজয় অর্জন করেছি, তেমনি ৩০ ডিসেম্বরও আমাদের বিজয় হবে৷''

‘জনগণই দেশের মালিক, জনগণের মালিকানা প্রতিষ্ঠা করা হবে’

তিনি আরো বলেন, ‘‘জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত না হলে উন্নয়ন অর্থবহ হয় না৷ আমরা সবাই মিলে ভোটের বিপ্লব ঘটাবো৷ যারা অহংকারের সুরে কথা বলেন এবং যদি মনে করেন তারা দেশের মালিক, এটা ভুল হবে৷ দেশের মালিক কেউ না, দেশের মালিক দেশের ১৬ কোটি মানুষ৷ দেশে গণতন্ত্র না থাকলে উন্নয়ন অর্থবহ হয় না৷ ১০ পার্সেন্ট প্রবৃদ্ধি দিয়ে উন্নয়ন হয় না৷ এই ধরনের উন্নয়নের কথা আইউব খান বলতেন৷ উন্নয়ন হলো সবার জন্য৷ কাদের উন্নয়ন হয়েছে তা আপনারা জানেন৷'' তিনি যে-কোনো পরিস্থিতিতে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোটারদের ভোট দেয়ার আহ্বান জানান৷

সংবাদ সম্মেলনে ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র এবং বিএনপি'র মহসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘‘সরকারের ইতোমধ্যে নৈতিক পরাজয় হয়েছে৷  আওয়ামী লীগকে প্রশাসনের সহযোগিতা নিতে হচ্ছে৷ পাপের কাছে নতি শিকার না করে, ৩০ ডিসেম্বর জনগণকে তাঁদের মুক্তির জন্য, নিজেদের মালিকানা প্রতিষ্ঠা জন্য এবং গণতন্ত্রের মুক্তির জন্য ধানের শীষে ভোট দিন৷'' তিনি গণমাধ্যমকে কারো কাছে নতি শিকার না করে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালনেরও  আহ্বান জানান৷

‘আন্দোলনের অংশ হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ, ৩০ তারিখে জয় নিয়েই ঘরে ফিরব’

সংবাদ সম্মেলনে আরো ছিলেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরীসহ আরো অনেকে৷

 বিএনপি'র স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘অব্যাহত নিপীড়ন এবং হামলার কারণে বিএনপির নেতা-কর্মী এবং প্রার্থীরা ভোটের মাঠে দাঁড়াতে পারছিলেন না৷ প্রার্থীদের জীবন হুমকির মুখে পড়ে৷ কেউ তো আর জীবন শেষ করে নির্বাচন করতে চান না৷ তাই নির্বাচন থেকে সরে আসার মত আসছিল বিভিন্ন প্রার্থী ও নেতাদের কাছ থেকে৷ কিন্তু আমরা দেখলাম, জনগণ যে-কোনো পরিস্থিতিতে ভোট দিতে চায়৷ তাঁরা ভোট দেবেন৷ তাই আমরা নির্বাচনেই থেকে গেলাম৷''

তিনি বলেন, ‘‘এই সরকারের সঙ্গে জনগণ নেই৷ তাই তারা সরকারি বাহিনীকে মাঠে নামিয়ে অত্যাচার, নির্যাতন ও গ্রেপ্তার চালাচ্ছে৷ আর এতে প্রমাণিত হয় সরকার ভয় পেয়েছে৷ ৩০ ডিসেম্বর আমরা জয়ী হবো৷ সাধারণ মানুষ যেভাবে হোক আমাদের ভোট দেবে৷''

তিনি আরো বলেন, ‘‘আন্দোলনের অংশ হিসেবে এই নির্বাচনে আমাদের অংশগ্রহণ৷ তবে আমরা ৩০ তারিখে জয় নিয়েই ঘরে ফিরবো৷''

‘ নির্যাতন এবং ধরপাকড় অব্যাহত আছে, নির্বাচনের পরিবেশ নেই’

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী ডয়চে ভেলেকে বলেন,  ‘‘এখনো নির্যাতন এবং ধরপাকড় অব্যাহত আছে৷ আমাদের ৫ হাজার পোলিং এজেন্টকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ কেন্দ্রে আমাদের পোলিং এজেন্ট থাকবে না৷ কিন্তু আশার জায়গা হলো, জনগণ এবার ভোট দিতে যাবে৷ তাঁদের ঠোকানো যাবে না৷ আর তাঁরা ভোটকেন্দ্রে গেলেই আমরা জয়ী হবো৷''

তিনি আরো বলেন, ‘‘তারা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবহার করছে৷ একের পর এক প্রার্থীর ওপর হামলা করছে, যা পরিবেশকে ভীতিকর করে তোলে৷ নির্বাচনের পরিবেশ নেই৷ কিন্তু আমাদের আশা, এই পরিস্থিতিতেও জনগণ ভোট কেন্দ্রে যাবে৷''