1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ট্যাটু বা উল্কি কতটুকু ক্ষতিকর

১৬ মে ২০১১

গবেষক এবং বিজ্ঞানীরা প্রশ্ন তুলেছেন রঙ-বেরঙের উল্কি আঁকা কী শরীরের জন্য ক্ষতিকর? এর উত্তরটা কিন্তু ভয় পাইয়ে দেয়ার মত৷

https://p.dw.com/p/11Gbu
steisstribal - arschgeweih_1181665_Haramis Kalfar - Fotolia 2004
ট্যাটু বা উল্কিছবি: Fotolia/Haramis Kalfar

ট্যাটু বা উল্কি – বেশ কয়েক বছর ধরে গায়ে উল্কি আঁকা ফ্যাশনে দাঁড়িয়ে গেছে৷ ছাত্র-ছাত্রী, গায়ক-গায়িকা থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের দেহও উল্কির নানা রঙে রঙিন হয়েছে৷ জার্মানিতে চালিত একটি জরিপে জানানো হয়েছে, ৩৫ বছরের নীচে যাদের বয়স তাদের পাঁচজনের মধ্যে একজনের গায়ে উল্কি আঁকা রয়েছে৷
কার্লসরুয়েতে অবস্থিত ট্যাটু বা উল্কি স্টুডিওর নাম ‘হেল ইয়াহ'৷ মালিকের নাম ভিক্টর৷ ভিক্টর একজন কাস্টমার নিয়ে খুবই ব্যস্ত৷ কাস্টমারটি তাঁর হাতের কনুইয়ে একটি কুকুরের উল্কি আঁকিয়ে নিচ্ছেন৷ উল্কি আঁকার এই রঙ বা কালি কীভাবে তৈরি হয়? ভিক্টর জানাল,‘‘যে রঙ ব্যবহার করা হোক না কেন সেটা যেন নিঁখুতভাবে চামড়ার বসে যায় তার দিকে খেয়াল রাখতে হবে৷ রঙটি ভাল না খারাপ তা বোঝার একমাত্র উপায় হচ্ছে ট্যাটু যখন শুকিয়ে যায় তখন৷''

আপনি যতদিন বেঁচে থাকবেন ততদিন এই উল্কি আপনার সঙ্গে থাকবে

কীভাবে ট্যাটু আঁকা হয়? বিদ্যুৎচালিত একটি যন্ত্রের সাহায্যে তা করা হয়৷ দেখতে তা অনেকটা ডেনটিস্টের ড্রিল মেশিনের মত যা দিয়ে দাঁতের চিকিৎসা করানো হয়৷ মেশিনের মাথায় রয়েছে অত্যন্ত সূক্ষ্ম একটি সুঁই৷ এই সুঁইটির মাথায় রঙ লাগনো থাকে৷ প্রতিবার সুঁইটি যখন চামড়ার ভেতরে প্রবেশ করানো হয় সেই সঙ্গে রঙও ভেতরে প্রবেশ করে৷ রঙের পরিমাণ এক মিলিলিটারেরও কম৷ চামড়ার যে স্তরে রঙটি লাগানো হয় তার নাম ডের্মিস৷ এই স্তরে যে কোন রঙ ঢোকাতে পারলে তা সারাজীবন দেখা যাবে৷ ভিক্টর আরো বলল,‘‘এটা বিশেষ এক পদ্ধতি৷ সারাজীবনই থাকবে৷ আপনি যতদিন বেঁচে থাকবেন ততদিন এই উল্কি আপনার গায়ে থাকবে৷ বিষয়টি দারুণ উত্তেজনার৷''

তবে অনেক কাস্টমারই জানেন না যে রঙ ব্যবহার করা হয় তার সঙ্গে মেশানো হয় মারাত্মক একটি রসায়নিক পদার্থ৷ এই রসায়নিক পদার্থ চামড়ার একেবারে ভিতর থেকে শরীরের ভিতরে প্রবেশ করে৷ আর যেহেতু এই উল্কি সারাজীবন শরীরে থাকবে তাই এই রসায়নিক পর্দাথও সারাজীবন দেহে থেকে যাবে৷ এর ফলে বিভিন্ন ধরণের অসুখ এমনকি ক্যান্সারও হতে পারে৷

Jose Daniel Galindo, 22, a Mara gang member who identifies himself as "Criminal," poses for his portrait in prison in Chimaltenango, Guatemala, in this Oct. 30, 2007 file photo. After anti-gang laws were approved in Honduras and El Salvador, and a string of killings in Guatemala that were committed by angry neighbors and security forces, gang members have stopped tattooing themselves and have resorted to more subtle, low profile ways of identifying themselves as members of those criminal organizations. Today, gang members with tattooed faces, are either dead, in prison or hiding. (AP Photo/Rodrigo Abd, file) ** GUATEMALA OUT **
বেশ কয়েক বছর ধরে গায়ে উল্কি আঁকা ফ্যাশনে দাঁড়িয়ে গেছেছবি: AP

ভয়ঙ্কর রাসায়নিক পদার্থ থেকে তৈরি করা হয় রঙ

একটি গবেষণাগারে রঙ তৈরি করা হয়৷ এফা মারিয়া কাটস সেখানে কাজ করছেন৷ কোন রাসায়নিক পদার্থ কতটা ক্ষতিকারক তা নিয়ে তিনি কাজ করেন, গবেষণা করেন৷ এফা মারিয়া বললেন,‘‘আমরা বিভিন্ন ধরণের প্রসাধনী থেকে শুরু করে উল্কি আঁকার কালি নিয়ে গবেষণা করি৷ ২০১০ সালে আমরা বেশ কিছু ট্যাটু পার্লার থেকে কালি সংগ্রহ করেছি৷ প্রায় ৩৮ ধরণের কালি আমাদের সংগ্রহে আসে৷ এর মধ্যে লাল, হলুদ এবং কমলা রঙ ছিল সবচেয়ে বেশি৷''

পরীক্ষায় কী পাওয়া গেছে? যা পাওয়া গেছে তা ভয় পাওয়ার মত৷ অনেক রঙ বা কালি তৈরি করা হয় এমন কিছু রায়াসনিক পদার্থ দিয়ে যা কোন প্রাণীর ওপর ব্যবহার পুরোপুরি নিষিদ্ধ৷ এর মধ্যে একটি পদার্থের নাম এজো ডাই৷ রঙটি এমনিতে কোন ক্ষতি করবে না কিন্তু অন্য কোন কিছুর সংস্পর্শে আসলে তা হবে অত্যন্ত ক্ষতিকারক৷ এর মধ্যে আরো অনেক রাসায়নিক পদার্থ আছে যা ব্যবহারে কোন নিষেধ নেই কিন্তু কোন অবস্থাতেই তা মানবদেহে ব্যবহার করা যাবে না৷ এফা মারিয়া আরো জানালেন,‘‘এই পদার্থগুলো বাজার পাওয়া যায় কারণ এগুলো প্লাস্টিক বা কঠিন পদার্থের ওপর প্রয়োগ করা যায়৷ গাড়ির রঙ বা দেয়ালের রঙে তা ব্যবহার করা যায়৷ আর সমস্যা এখানেই৷ এই পদার্থগুলো মানবদেহে ঢুকে কী কী ক্ষতি করতে পারে তা নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি৷''

কোন কিছুই নিয়ন্ত্রণ করা হয় না

ইউরোপের যে সব দেশে হাজার হাজার ট্যাটু পার্লার রয়েছে তার মধ্যে শুধু জার্মানিতেই রঙের ব্যবহার নিয়ে স্পষ্ট বিধিনিষেধ বহাল৷ তবে এফা মারিয়া জানান এই বিধিনিষেধ যথেষ্ঠ নয়৷ ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি বললেন,‘‘কোন কিছুই ঠিকমত নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে না৷ কোন কোন পদার্থ মানবদেহের জন্য ক্ষতিকারক তার নির্দিষ্ট কোন তালিকা আমাদের কাছে নেই৷ কোনগুলো ব্যবহার করা যাবে তাও আমরা জানি না৷ কোন কোন পদার্থ ব্যবহার পুরোপুরি নিষিদ্ধ শুধু সেই তালিকার কথা আমরা জানি, এর বেশি কিছু নয়৷''

তবে যারা নিয়মিত এসব পার্লারে আসেন তারা এসব নিয়ে চিন্তিত নন৷ কৃত্রিম রঙ দিয়ে নিজেকে রঙিন করতে হবে এই চিন্তায় বিভোর তারা৷ এসব রাসায়নিক পদার্থ তাদের কোন ক্ষতি করবে কিনা তা তারা জানতেও চান না৷ সবাই বিশ্বাস করেন সব কিছুই ঠিক আছে৷ পার্লারের মালিকরা দাম দিয়ে ভাল রঙ বা কালি কিনতে চাননা৷ যেভাবেই হোক অল্প বিনিয়োগে চাই বিশাল মুনাফা৷

প্রতিবেদন: মারিনা জোয়ারদার

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক