1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ডাঙার স্বপ্ন দেখছিল জেসিকা

১৬ মে ২০১০

অস্ট্রেলিয়ান কিশোরী জেসিকা ওয়াটসন সবে একটি ইয়টে করে একা সাগরপথে পৃথিবী পরিক্রমা করে এসেছে৷ স্বদেশে সে এখন হিরো৷ কিন্তু তার মনের অবস্থা?

https://p.dw.com/p/NPS6
জেসিকা ওয়াটসনছবি: picture alliance / dpa

আগামী মঙ্গলবার জেসিকার বয়স হবে ১৭ বছর৷ অথচ এই সদ্য সে তার ৩৩ ফুট লম্বা উজ্জ্বল গোলাপি নৌকায় চড়ে ২১০ দিনে ৩৮,০০০ কিলোমিটার সমুদ্রপথ পাড়ি দিয়ে এসেছে৷ শনিবার সে তার ইয়ট নিয়ে যখন সিডনি বন্দরে ঢোকে, তখন তাকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য দাঁড়িয়ে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী কেভিন রাড এবং সেই সঙ্গে হাজার হাজার মানুষ ও মিডিয়া৷ জেসিকার জন্য পাতা সুদীর্ঘ গালিচা'টার রং বদলে করা হয়েছিল লালের বদলে গোলাপি৷ রাড তাকে বলেছেন ‘‘আমাদের সর্বাধুনিক অস্ট্রেলিয়ান হিরো''৷ সানডে টেলিগ্রাফ'এর শীর্ষক হল: ‘‘তুমি ছোট্ট সুন্দরী''৷ সান-হেরাল্ড বলেছে ‘‘প্রেরণার ঢেউ''-এর কথা৷

দুনিয়াটা একেবারেই বদলে যাবে

আর জেসিকা স্বয়ং কি বলেছে? তার দু'টি উৎস হল, সে তার আগমনের পর প্রকাশ্যে কি বলেছে, এবং দ্বিতীয়ত, সে এক পর্যায় অতি সযত্নে আয়োজিত মিডিয়া সাক্ষাতকারে কি বলেছে৷ কেননা জেসিকার ম্যানেজার এ্যান্ড্রু ফ্রেজার ইতিমধ্যেই ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন যে, দুনিয়াটা এবার জেসিকার জন্য একেবারেই বদলে যাবে৷ সে খুবই ব্যস্ত থাকবে৷ যেমন তাকে মাস দুয়েকের মধ্যে একটা বই লিখতে হবে তার সমুদ্রযাত্রার বিষয়ে৷ তার পরে থাকবে ‘‘ট্রু স্পিরিট'' নামের একটি টেলিভিশন তথ্যচিত্র৷

(অ)সাধারণ মেয়ে

ফেরা যাক সেই কিশোরীটির কথায়৷ প্রধানমন্ত্রী তাকে হিরো বলার পর জেসিকা বলেছে, সে নিজেকে হিরো বলে মনে করে না৷ তার মতে সে একটি সাধারণ মেয়ে৷ বড় একটা কিছু করার জন্য বিরাট কিছু হবার প্রয়োজন নেই৷ শুধু একটা স্বপ্ন আর সেই স্বপ্নে বিশ্বাস থাকলেই চলে৷ অপরদিকে তার নাকি গোটা অভিযানটা সম্পর্কেই সন্দেহ ছিল, কেননা সে কখনো একা নৌকাযাত্রা করেনি৷ আর এ'তো একা, একবারও না থেমে, কোনোরকম সাহায্য ছাড়া সারা পৃথিবী পরিক্রমা৷

সাগরদোলায়

মাসের পর মাস সাগরবক্ষে একা, জেসিকা মানুষ তো দূরের কথা, ক'টা নৌকো কি জাহাজ দেখেছে তা বলা শক্ত৷ আর নিজের সঙ্গে কথা বলার অভ্যেস নাকি তার চিরকালের, সমুদ্রে শেষের দিকে সেই অভ্যেস নাকি কিছুটা বেড়ে থাকতে পারে৷ সাগরে ঝড় নয়, যখন বাতাস বইতো না, সাগরের জল আয়নার মতো স্থির হয়ে থাকতে, তখনই নাকি সবচেয়ে বেশী গা ছম ছম করতো৷ সাগরবক্ষে জেসিকা স্বপ্ন দেখতো টাটকা ফলমূল আর শাকপাতার৷ রাত্রে সে নৌকায় ঘুমতো না, ঘুমতো সকালের দিকে৷ আর তাকে সবচেয়ে কষ্ট দিয়েছে নৌকা চালানোর কাজটা নয়, বরং একটানা ঢেউ'এর দোলা৷ কোনো কিছু আঁকড়ে না ধরে থেকেই পায়ে হাঁটা, শোয়া, বসা - ভাবা যায়?

তাই ডাঙার স্বপ্ন দেখছিল জেসিকা৷

প্রতিবেদন: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী

সম্পাদনা: জাহিদুল হক