1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ট্রাম্পের হুমকি ছিল অশোভন!

২২ ডিসেম্বর ২০১৭

জেরুসালেম নিয়ে জাতিসংঘে ভোটের মতোই এ বিষয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতিক্রিয়াও গুরুত্বপূর্ণ৷ এ থেকে বোঝা যায়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট তাঁর অভ্যন্তরীণ নীতি আন্তর্জাতিক পর্যায়েও চালু করতে আগ্রহী, মনে করেন ডিডাব্লিউর মিশায়েল ক্নিগে৷

https://p.dw.com/p/2poXl
ডোনাল্ড ট্রাম্প
ছবি: Getty Images/AFP/S. Loeb

দীর্ঘদিনের মার্কিন নীতি থেকে সরে এসে এবং ইউরোপীয় ও আরব বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর সতর্কতা উপেক্ষা করে জেরুসালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে একতরফাভাবে স্বীকৃতি দেয়ার অধিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আছে৷

তেমনি যুক্তরাষ্ট্র ও মার্কিন প্রেসিডেন্টের নাম সরাসরি উল্লেখ না করে ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করার অধিকার জাতিসংঘের সদস্যরাষ্ট্রগুলোর আছে৷ ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের সমালোচনার পাশাপাশি জাতিসংঘের প্রস্তাবে সমর্থন দেয়া রাষ্ট্রগুলো বলছে, মধ্যপ্রাচ্য সংশ্লিষ্ট জাতিসংঘের বিভিন্ন নীতির ভিত্তিতে আলোচনার মাধ্যমে জেরুসালেম বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে৷ এখানে মনে রাখা জরুরি যে, জাতিসংঘে পাস হওয়া প্রস্তাব মানতে কোনো আইনগত বাধ্যবাধকতা নেই৷ এটি একটি প্রতীকী বিষয় মাত্র৷

মিশায়েল ক্নিগে
মিশায়েল ক্নিগে, ডয়চে ভেলে

বিশ্রি ব্যবস্থাপনা

গত কয়েক দশক ধরে যারা মধ্যপ্রাচ্য সংকটের খবর রাখছে তারা ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যে জাতিসংঘ যাবে তাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই৷ এই বিষয়টি এবং প্রস্তাবটি যে একটি প্রতীকী সমালোচনা – এ সব জানার পর ট্রাম্প প্রশাসনের উচিত ছিল একটি বিবৃতি প্রকাশ করা, যেখানে তারা জাতিসংঘের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে বলতে পারতেন, যুক্তরাষ্ট্র তার সিদ্ধান্তে অটল থাকবে৷

কিন্তু যেমনটা আশা করা হয়েছিল, ট্রাম্প প্রশাসন তা করেননি৷ বরং তারা একেবারে মুখোমুখি সংঘর্ষের দিকে গেছে৷

স্বৈরাচারির মতো শোনায়

জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের দূত নিকি হ্যালি বিভিন্ন দেশকে হুমকি দিয়ে যে টুইট করেছেন তা শুনতে অনেকটা স্বৈরাচারি শাসকের মতো মনে হয়েছে৷ হ্যালির বক্তব্য গণতন্ত্রের বাতিঘর বলে নিজেদের দাবি করা একটি দেশের প্রতিনিধির মতো শোনায়নি৷

জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে ভোট দিলে সাহায্য বন্ধ করে দেয়ার ট্রাম্পের হুমকি এবং ভোটের আগে সতর্ক করে দিয়ে বিভিন্ন সাহায্য বন্ধ করে দেয়ার ট্রাম্পের হুমকি এবং দেশের কাছে পাঠানো হ্যালির চিঠির বিষয়টি আরও বেশি উদ্বেগের৷ সাহায্য বন্ধ করলে শুধু সেই দেশেরই যে ক্ষতি হবে তা নয়, এতে যুক্তরাষ্ট্রও ক্ষতিগ্রস্ত হবে৷ কেননা সহায়তা দেয়ার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ঐসব দেশের উপর প্রভাব বিস্তার করতে পারে৷

আর হ্যালির চিঠিতে লেখা ছিল, ‘‘প্রেসিডেন্ট নিবিড়ভাবে এই ভোটের দিকে নজর রাখবেন৷ আর যারা যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে ভোট দেবে তাদের নাম তাঁকে (ট্রাম্পকে) জানাতে আমাকে অনুরোধ করেছেন৷'' বক্তব্য শুনে মনে হচ্ছে যেন প্রাথমিক স্কুলের একজন শিক্ষক দুষ্টু শিক্ষার্থীদের স্কুল প্রধানের ভয় দেখাচ্ছেন৷

তিনটি বিষয়

প্রথমত, আন্তর্জাতিক কূটনীতি বিষয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের পদক্ষেপ দেখলে মনে হয় যেন তারা ‘হয় গ্রহণ কর, নয় ছেড়ে দাও' এই নীতিতে চলতে চাইছেন৷ নির্বাচনি প্রচারণার সময় ট্রাম্প এই নীতির উপর ভর করেই জয় পেয়েছেন৷ অর্থাৎ দেশের ভেতর যেভাবে ট্রাম্প সফল হয়েছেন সেই একই কৌশল তিনি আন্তর্জাতিক পর্যায়েও অবলম্বন করতে চাইছেন৷ দ্বিতীয়ত, ট্রাম্প প্রশাসন মনে করেছেন, হুমকির মাধ্যমে সার্বভৌম দেশগুলোর উপর প্রভাব খাটানো যাবে৷ জাতিসংঘে ভোটের ফলাফলে এই বিষয়টি কিছুটা সত্য বলে প্রমাণিতও হয়েছে, কেননা ৩৫টি দেশ ভোটে অংশ নেয়া থেকে বিরত থেকেছে৷ তৃতীয়ত, নিজ দেশে ভিত্তি শক্ত করতে ট্রাম্প প্রশাসন গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী দেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরও খারাপ করতে আগ্রহী৷

মিশায়েল ক্নিগে/জেডএইচ

বন্ধুরা, মিশায়েল ক্নিগের লেখা আপনাদের কেমন লাগলো? লিখুন নীচের ঘরে৷