1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

তাজিয়া মিছিল: রক্ত অস্ত্র লাঠি বাজি নিষেধ

৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯

নিরাপত্তার স্বার্থে শিয়া সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুষ্ঠান তাজিয়া মিছিলে অস্ত্র ও লাঠি বহন এবং আতশবাজি নিষিদ্ধ করা হয়েছে৷ এই মিছিলকে কেন্দ্র কেউ যাতে নিজের শরীর রক্তাক্ত করতে না পারেন তাও নজরদারি করবে পুলিশ৷

https://p.dw.com/p/3PHaz
Bangladesch Tajia-Prozession in Dhaka City
ছবি: bdnews24.com

তাজিয়া মিছিলে কি করা যাবে আর কি করা যাবে না ঢাকা মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে সেই নির্দেশনা জারি করা হয়েছে৷ ২০১৫ সালে এই মিছিল শুরুর প্রস্তুতিকালে তিনটি বোমা বিস্ফোরণে অর্ধশত মানুষ আহত হন, চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান দুইজন৷

ওই বোমা হামলার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে পুলিশের লালবাগ বিভাগের উপ-কমিশনার মুনতাসিরুল ইসলাম সোমবার ডয়চে ভেলেকে বলেন, বোমা হামলার আগে এই মিছিলকে অন্য উৎসবের মতই দেখা হত, ওই ঘটনার পর থেকে নিরাপত্তা নিয়ে আমাদের উদ্বেগ শুরু হয়৷

‘‘হোসেনী দালন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বেশ কয়েকটি সভা করি৷ তাদের সঙ্গে নিয়েই ঠিক করা হয় তাজিয়া মিছিলে কি করা যাবে আর কি করা যাবে না, তারাও সর্বসম্মতভাবে তা মেনে নেন এবং আশ্বাস দেন প্রতিপালন করবেন৷

‘‘আমরা চাই এই উৎসবের আনন্দে যেন ঘাটতি না হয় এবং ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যও যেন বজায় থাকে৷ মিছিলে ধারালো অস্ত্র বহন করা যাবে না৷ ধারালো অস্ত্র বহন করা না গেলে শরীর রক্তাক্ত করার সুযোগ থাকবে না৷ ঘিঞ্জি পুরান ঢাকায় অনেক বৈদ্যুতিক লাইন রয়েছে, তাই বলা হয়েছে লম্বা বাঁশে করে বিভিন্ন জিনিসপত্র নিয়ে মিছিলে অংশ নেওয়া যাবে না৷ কারণ বৈদ্যুতিক তারে লেগে যায়৷ আগে সন্ধ্যায় যে মিছিল হত এখন তা দিনে করতে হবে৷''

Bangladesch Tajia-Prozession in Dhaka City
ছবি: bdnews24.com

হিজরি মাস মহররমের ১০ মুসলিম বিশ্বে ত্যাগ ও শোকের দিন৷ ১৩৩৯ বছর আগে এই দিনে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স.)-এর দৌহিত্র হযরত ইমাম হোসাইন (রা.) ফোরাত নদীর তীরে কারবালা প্রান্তরে যুদ্ধে শহীদ হন৷

দশকে আরবিতে আশারা বলা হয়, সেটা কিছুটা বিকৃত হয়ে মহররমের এ দিনটি উপমহাদেশ আশুরা হিসেবে উচ্চারিত হয়৷ শিয়ারা দিনটিকে ধর্মীয় অনুশাসনের মধ্য দিয়ে পালন করে৷ এ দিন বাংলাদেশে নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটি থাকে৷ বাংলাদেশের মসুলমানরা এবার ১০ সেপ্টেম্বর আশুরা পালন করবেন৷

ঢাকা মহানগর পুলিশের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, তাজিয়া মিছিলে কোন পাইক (শোকের মাতম প্রকাশে আঘাত করে নিজের শরীর রক্তাক্ত করেন যারা) যাতে অংশগ্রহণ করতে না পারে সে বিষয়টি আয়োজক সংস্থাকে নিশ্চিত করতে হবে৷ অংশগ্রহণকারীদের নিশানের উচ্চতা ১২ ফুট এর বেশি হবে না৷

‘‘শোক মিছিলে সকল প্রকার ধারালো অস্ত্র, ধাতব পদার্থ, দাহ্য পদার্থ, ব্যাগ, পোটলা, লাঠি, ছোঁড়া, চাকু, তলোয়ার, বর্শা, বল্লব এবং আতশবাজির ব্যবহার নিষিদ্ধ৷ পোশাকের সাথেও এগুলো ব্যবহার করা যাবে না৷ মিছিল চলাকালীন রাস্তার মাঝে বিভিন্ন অলি-গলি থেকে আগত লোকদের মিছিলে প্রবেশ করতে দেওয়া যাবে না, মিছিলে অংশগ্রহণ করতে হলে মিছিল শুরুর স্থানে যেতে হবে৷''

Bangladesch Tajia-Prozession in Dhaka City
ছবি: bdnews24.com

পুলিশের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মিছিল শুরুর স্থানে প্রবেশের আগে সকলকে আর্চওয়ে, মেটাল ডিটেক্টর ও হাত দিয়ে দেহ তল্লাশি করে ঢুকতে দিতে হবে৷ তল্লাশি ছাড়া কাউকে মিছিলে ঢুকতে দেওয়া যাবে না৷ সেক্ষেত্রে পর্যাপ্ত সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবী রাখতে হবে৷ শিয়া সম্প্রদায়ের প্রতিটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ইমামবাড়া ও শোক মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের সমবেত স্থান ও এর আশপাশের সমস্ত এলাকায় পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা রাখতে হবে৷ সন্ধ্যার মধ্যে অনুষ্ঠান শেষ করতে হবে৷

‘‘মিছিলে উচ্চমাত্রার শব্দ তৈরি করার ঢাক-ঢোল, বাদ্যযন্ত্র, পিএ সেট ব্যবহার করা যাবে না৷ মিছিল চলাকালীন মিছিলের মধ্যে কোনো গ্যাপ সৃষ্টি না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে৷ তাজিয়া মিছিলে পাঞ্জা মেলানোর সময় শক্তি প্রয়োগ করে ভীতিকর পরিস্থিতি ও অনাকাঙ্খিত ঘটনা তৈরি করা যাবে না৷ কেউ চাদর গায়ে দিয়ে মিছিল ও আশুরা কেন্দ্রিক অনুষ্ঠানে প্রবেশ করতে পারবেন না৷''

তাজিয়া মিছিলকে শান্তিপূর্ণ করতেই এসব নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে জানিয়ে পুলিশের উপকমিশনার মুনতাসিরুল বলেন, ‘‘উৎসবে কোনো কিছুর যেন ঘাটতি না হয় সেটা মাথায় রেখে ঝুঁকিপূর্ণ জিনিসগুলো পরিহার করতে বলেছি৷ শিয়া ধর্মের অনুসারী ৩০ শতাংশের মত মানুষ এই মিছিলে অংশ নেন, অন্যরা সুন্নী সম্প্রদায়ের৷ শিয়া-সুন্নীরা সম্মিলতভাবে এই উৎসব পালন করেন, আমরাও এটাকে গুরুত্বপূর্ণ উৎসব হিসেবে দেখি৷

‘‘তাজিয়া মিছিলে যারা অংশ নেবেন পুলিশের নিরাপত্তা চৌকি পার হয়েই তাদের মিছিলে যোগ দিতে হবে৷ মিছিলটি নির্বিঘ্ন করতে সম্মিলিতভাবে সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে৷ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ইতোমধ্যে হোসনী দালাল পরিদর্শন করেছেন৷ পাড়া-মহল্লায় বিক্ষিপ্তভাবে কেউ যাতে শরীর রক্তাক্ত করতে না পারে সে বিষয়েও পুলিশের নজরদারি থাকবে৷''

এসআই/ (বিডিনিউজ টোয়েন্টোফোর ডটকম)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য