1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
সমাজস্পেন

দমবন্ধ করা মাস্ক সম্পর্কে সচেতন করছে অ্যাপ

২৮ জুন ২০২২

করোনা মহামারি গোটা বিশ্বে ফেস মাস্কের ব্যবহার নিশ্চিত করেছে৷ কিন্তু ঘণ্টার পর ঘণ্টা সেই মাস্ক পরে থাকলে দম বন্ধ হবার উপক্রম হয়৷ স্পেনের এক গবেষক দল ‘বুদ্ধিমান' মাস্কের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে চাইছেন৷

https://p.dw.com/p/4DKzQ
Masken der Firma Cliu
ছবি: Cliu

২০২০ সালের শুরুতে করোনা মহামারির সূচনা পর্ব থেকেই ফেস মাস্ক জীবনযাত্রার অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হয়ে উঠেছে৷ ভাইরাস থেকে সুরক্ষা দিচ্ছে এই বস্তুটি৷ সেটির কার্যকারিতা নিয়ে সংশয় না থাকলেও অনেক ঘণ্টা ধরে এমন মাস্ক পরে থাকার অসুবিধা সম্পর্কেও সবাই একমত৷ যেমন সুপারমার্কেটের ক্যাশিয়ার মিগেল রামোন রডরিগেস নিজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে বলেন, ‘‘মহামারির শুরুতে বেশ কয়েক দিন আমার মাথায় ব্যথা হচ্ছিল, অতিরিক্ত ক্লান্ত হয়ে পড়ছিলাম৷ সারা দিন মাস্ক পরে থাকলে নিঃশ্বাস নিতে অসুবিধা হয়৷ ফলে বেশি ক্লান্তি আসে৷''

এফএফপি-২ মাস্ক ব্যবহার করলে মুখ ও মাস্কের মাঝের অংশে নিঃশ্বাসের মাধ্যমে বেরিয়ে আসা কার্বন-ডাই-অক্সাইডের ঘনত্ব অনেক বেশি থাকে৷ সেই গ্যাস আবার শরীরে প্রবেশ করলে মাথা ব্যথা বা ক্লান্তির মতো স্বাস্থ্যগত সমস্যা দেখা যায়৷ রেস্তোরাঁর পরিচারিকা এনকার্না উরিয়েনিয়া বলেন, ‘‘আমি অনেকক্ষণ মাস্ক পরে থাকলে ও বেশি মানুষের কারণে মানসিক চাপের মধ্যে থাকলে কখনো কখনো প্রচণ্ড ক্লান্ত হয়ে পড়ি৷ তখন নাক ও গলা পুরো শুকিয়ে যায়৷ কিচেনে গিয়ে একটু পানি খেয়ে নিজেকে চাঙ্গা করার চেষ্টা করি৷ বুক ভরে নিঃশ্বাস নিয়ে আবার কাজে ফিরে যাই৷''

মাস্ক ব্যবহারকারীদের এমন শারীরিক প্রভাব এড়াতে সহায়তা করতে গ্রানাদা বিশ্ববিদ্যালয়ের নয় জন ইঞ্জিনিয়ার ও রসায়নবিদ নিয়ে বিশেষজ্ঞের এক দল ‘ইন্টেলিজেন্ট মাস্ক' তৈরি করেছে৷ নির্ধারিত সিওটু-মাত্রা অতিক্রম করলেই সেই মাস্ক মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সতর্ক করে দেয়৷ ইসিসেন্স প্রকল্পের সমন্বয়ক আলব্যার্তো জে পালমা জানান, ‘‘এই ইন্টেলিজেন্ট মাস্কের মধ্যে এক সেন্সর রয়েছে, যেটি মুখ ও মাস্কের মাঝের অংশের বাতাস পরীক্ষা করতে পারে৷ সেই সিওটু সেন্সরের মধ্যে প্রয়োজনীয় ইলেকট্রনিক উপাদান ভরা রয়েছে, যা সেন্সরে রংয়ের পরিবর্তন ঘটলেই স্মার্টফোনে সংকেত পাঠিয়ে দেয়৷''

যে মাস্ক ‘বুদ্ধিমান’

সাধারণ এফএফপি-টু মাস্ককে ইন্টেলিজেন্ট মাস্কে রূপান্তরিত করতে হলে মাস্কের মধ্যে বিশেষ ইলেকট্রনিক স্টিকার বসাতে হয়৷ গবেষক পাবলো এস্কোবেদো বিষয়টি বিস্তারিতভাবে বুঝিয়ে বলেন, ‘‘মাস্কের মধ্যে বসানো স্টিকার এমন এক প্রণালী, যার দুটি অংশ রয়েছে৷ একদিকে তথাকথিত ‘রিডআউট ইলেকট্রনিক্স' রয়েছে, যেটি পরিবাহী কালির মাধ্যমে নমনীয় ও স্বচ্ছ প্লাস্টিকের মাধ্যমের উপর প্রিন্ট করে৷ যেমনটা এখানে দেখতে পাচ্ছেন৷ অন্যদিকে সেন্সরের রাসায়নিক অংশ রয়েছে, যেটি সিওটুর ঘনত্ব অনুযায়ী নিজস্ব রং বদলায়৷''

প্রস্তাবিত সিওটুর মাত্রা পেরিয়ে গেলে মাস্ক-ব্যবহারকারীকে সতর্ক করতে গবেষক দল এক বিশেষ মোবাইল অ্যাপ তৈরি করেছেন৷ এস্কোবেদো বলেন, ‘‘ব্যবহারকারীর কাছে এমন এক মোবাইল অ্যাপ থাকে, যা দিয়ে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের ঘনত্ব জানা যায়৷ মোবাইল পেমেন্টের জন্য যে এনএফসি প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়, সেটির সাহায্যেই মাস্কের কাছে থাকা স্মার্টফোন সজাগ হয়ে ওঠে৷ স্মার্টফোন তখন স্টিকার চিনতে পারে এবং সিওটু-র ঘনত্ব পড়ে নেয়৷ সেই অ্যাপ লাল বা সবুজ রংয়ের মাধ্যমে ব্যবহারকারীকে জানিয়ে দেয়, কখন তাজা বাতাস নেওয়া উচিত৷''

অনেক দেশেই মাস্ক পরা আর বাধ্যতামূলক না হলেও গবেষকরা নিশ্চিত যে, ইন্টেলিজেন্ট মাস্কের প্রয়োজন মোটেই ফুরিয়ে যায়নি৷ কারণ অনেক মানুষকে এখনো কর্মস্থলে মাস্ক পরতে হচ্ছে৷ সে কারণে এই টিম তাদের প্রযুক্তি যে কোনো ক্ষেত্রের জন্য উপযুক্ত করে তুলতে প্রস্তুত৷

রেই/মাসা/এসবি