1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

দল-জোটের আসন চূড়ান্ত

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
৯ ডিসেম্বর ২০১৮

বাংলাদেশে একাদশ সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনে স্পষ্ট হয়ে গেছে দু'টি বড় দল ও তাদের জোটের প্রার্থিতা৷ সোমবার প্রতীক বরাদ্দের পরই শুরু হবে নির্বাচনি প্রচারণা৷

https://p.dw.com/p/39lil
ছবি: AFP/Getty Images

বিএনপি'র মনোনয়ন না পাওয়া ক্ষুব্ধ প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা গুলশানে বিএনপি'র চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার কার্যালয় ভাঙচুর করেছে৷ তারা নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়েও কয়েকবার তালা ঝুলিয়ে দেয়৷ আর আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে দলের মনোনীত প্রার্থীর জন্য কাজ করার জন্য চিঠি দিয়ে নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা৷

এখন পর্যন্ত যা চিত্র তাতে ৩০০ আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ নৌকা প্রতীক নিয়ে ২৫৮ টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে৷ বাকি আসনগুলো ১৪ দলের শরীক ও মহাজোটকে দেয়া হয়েছে৷ ১৪ দলের জাসদ (ইনু) ৩টি আসনে, জাসদ (আম্বিয়া) ১টি আসনে, ওয়ার্কার্স পার্টি ৫টি আসনে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করবে৷

মহাজোটের তরিকত ফেডারেশন ২টি আসনে নৌকা প্রতীকে, বাংলাদেশের জাতীয় পার্টি (জেপি) ২টি আসনের একটিতে নৌকা এবং একটিতে সাইকেল প্রতীক নিয়ে এবং জাতীয় পার্টি ২৬ আসনে লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে মহাজোটের হয়ে নির্বাচন করবে৷ নৌকা প্রতীক নিয়ে বিকল্পধারা বাংলাদেশ ৩টি নির্বাচন করবে৷

তবে জোট মনোনীত প্রার্থীদের বাইরেও শতাধিক আসনে জোট প্রার্থীর বিপক্ষে দলীয় প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বীতা করবেন বলে জানিয়েছে এরশাদের জাতীয় পার্টি৷

এদিকে বিএনপি এবং ঐক্যফ্রন্টও প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে৷ ২৪২টি আসন দলের প্রার্থীদের রেখে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলীয় জোটের শরিকদের জন্য ৫৮টি আসনে ছাড় দিয়েছে বিএনপি৷ এর মধ্যে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিকরা পেয়েছে ১৯টি আসন৷  আর ২০ দলীয় জোটের শরিকরা পেয়েছে ৩৯টি আসন৷

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিকদের মধ্যে গণফোরাম ৭টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডি ৪টি, নাগরিক ঐক্য ৪টি ও কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ পেয়েছে ৪টি আসন৷

অন্যদিকে, ২০ দলীয় জোটের শরিকদের মধ্যে এলডিপি ৫টি, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ ৩টি, খেলাফত মজলিসের ২টি, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি ১টি,  বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি ১টি,  এনপিপি ১টি, পিপিবি ১টি, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) ২টি এবং লেবার পার্টি ১টি আসন পেয়েছে৷ এই জোটের অন্যতম শরিক জামায়াতে ইসলামের নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন বাতিল হলেও ধানের শীষ নিয়ে ২২টি আসনে দলটির প্রার্থীদের মনোনয়ন দিয়েছে বিএনপি৷

এলডিপি'র অলি আহমেদ ছাড়া জোট মনোনীত সবাই ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করবেন বলেও জানা গেছে৷

সোমবার প্রতীক বরাদ্দের মধ্য দিয়ে প্রার্থীর বিষয়টি পুরোপুরি স্পষ্ট হবে৷ দল ও জোট থেকে যারা মনোনয়ন পেয়েছেন তাঁদের প্রতীক এবং মনোনয়নের চূড়ান্ত চিঠি রবিবার রিটার্নিং অফিসারের কাছে জমা দেয়া হয়েছে৷ এর ভিত্তিতেই সোমবার প্রতীক বরাদ্দ দেবেন রিটার্নিং অফিসারার৷ দলের বাইরে যাঁরা স্বতন্ত্র প্রার্থী, তাঁরা স্বতন্ত্র প্রতীক পাবেন৷

আগে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি থেকে এক আসনে একাধিক প্রার্থীকে দলীয় মনোনয়নের চিঠি দেয়া হলেও রোববার যারা দলের বা জোটের চিঠি পেয়ে নির্বাচন কমিশনে জমা দিয়েছেন তাঁদেরই চূড়ান্ত প্রার্থী হিসেবে গণ্য করবে কমিশন৷ আইন অনুযায়ী, বাকিদের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে যাবে, তাঁরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবেও লড়তে পারবেন না৷

ড. শান্তনু মজুমদার

কিন্তু বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এখন দু'টি বড় দলই বিদ্রোহীদের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে৷ আর এই চ্যালেঞ্জ তারা কতটা সক্ষমতার সঙ্গে মোকাবেলা করতে পারেন, তার ওপরই ভোটের ফলাফল অনেকটা নির্ভর করতে পারে৷ অতীতে নির্বাচনের ফলাফলের ওপর অভ্যন্তরীণ কোন্দলের প্রভাব দেখা গেছে৷

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক ড. শান্তনু মজুমদার ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘শাসক দল আওয়ামী লীগ বিদ্রোহীদের নিস্ক্রিয়তার শিকার হতে পারে৷ কেউ হয়তো কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ করবেনা৷ কিন্তু তারা নির্লিপ্ত ভূমিকা বা গোপনে বিরোধী প্রার্থীর হয়ে কাজ করতে পারেন৷ জোট মহাজোটের কারণে আওয়ামী লীগের যারা মনোনয়ন পাননি তারা হয়তো বিরোধিতায় বেশি সক্রিয় হতে পারেন৷''

তিনি বলেন, ‘‘বিএনপি'র বিষয়টি স্পষ্ট হতে আরো সময় লাগবে৷ কারণ তাদের মনোনয়ন নিয়ে নানা ধরণের হিসেবের কথা শোনা যাচ্ছে৷  সিন্ডিকেটেড মনোনয়নের অভিযোগও উঠেছে৷ আরো কয়েকদিন গেলে স্পষ্ট হবে যে বিএনপির বিদ্রোহীরা কোন ভূমিকায় যাবেন৷ বিএনপিতে নানামুখী প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হতে পারে৷''

শেখ হাফিজুর রহমান কার্জন

এদিকে, নির্বাচন কমিশনের সামনে এখন বড় চ্যালেঞ্জ কী জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করাই নির্বাচন কমিশনের সামনে এখন বড় চ্যালেঞ্জ৷ এরইমধ্যে অভিযোগ আছে যে কমিশন একটি দলের প্রতি পক্ষপাত করেছে৷ পর্যবেক্ষকদের ভূমিকা কী হবে তাও স্পষ্ট নয়৷ আর একটি দলের নেতা-কর্মীরা গ্রেপ্তারের শিকার হচ্ছেন৷ একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য এখনো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে পারেনি৷

তিনি আরো বলেন, ‘‘আমাদের প্রত্যাশা জনগণ যেন তাঁদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেন৷ তাহলেই কেবল প্রতিনিধিত্বমূলক সরকার পাওয়া সম্ভব৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য