1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

দা ভিঞ্চি যদি ডিজিটাল শিল্পী হতেন!

৭ মার্চ ২০১৯

লিওনার্দো দা ভিঞ্চির মতো বহুমুখী ও দূরদর্শী প্রতিভা যদি আজকের ডিজিটাল যুগে বেঁচে থাকতেন, তাহলে কেমন হতো? একদল শিল্পী এমন সব পথিকৃতের সৃষ্টিকর্ম ডিজিটাল প্রযুক্তির কল্যাণে নতুন রূপে তুলে ধরছেন৷

https://p.dw.com/p/3EaBr
ছবি: DW

ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে বিখ্যাত শিল্পকর্ম উপস্থাপন

রেনেসাঁস যুগের সেরা শিল্পীদের মধ্যে রাফায়েল, মিকেলাঞ্জেলো ও লিওনার্দো দা ভিঞ্চি  অন্যতম৷ এবার ডিজিটাল প্রযুক্তি, অ্যানিমেশন ও আবহসংগীতসহ তাঁদের শিল্পকর্মগুলি নতুন আঙ্গিকে তুলে ধরা হচ্ছে৷

জার্মানির লাইপসিশ শহরের এক শিল্পকেন্দ্র ইটালির বিশ্ববিখ্যাত ভিডিও শিল্পী জানফ্রাংকো ইয়ানুৎসির সঙ্গে এক প্রকল্প শুরু করেছে৷ তিনি বলেন, ‘‘রেনেসাঁস সে যুগে অত্যন্ত আধুনিক এক দিশা দেখিয়েছিল, যা তারুণ্যের বাতাস এনে শিল্পের জগতে পরিবর্তন ঘটিয়েছিল৷ এই ধারা ধর্মীয় বিষয় ছেড়ে শিল্পকে বৈশ্বিক মোটিফের দিকে নিয়ে গিয়েছিল৷ তাই ফ্রেস্কো পেইন্টিং সে সময়ে স্থাপত্যের মধ্যে স্থান পেয়েছিল, যা তার আগে সম্ভব ছিল না৷ শিল্পের ক্ষেত্রে এত বড় পরিবর্তনের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতেই আমরা এই ইনস্টলেশন সৃষ্টি করেছি৷'' 

এই মাল্টিমিডিয়া শো আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে তিনি ‘ইমারসিভ আর্ট'-কে সম্বল করেছেন৷ এর আওতায় দর্শক ২৪টি বিমারের কল্যাণে ৮ মিটার উঁচু ভিডিও প্রজেকশনে ডুব দিতে পারেন৷ ফলে তুলির প্রত্যেকটি টান আলাদা করে চেনা যায়৷ জানফ্রাংকো ইয়ানুৎসি বলেন, ‘‘ভিডিও ও ধ্বনির এই মেলবন্ধনের মধ্যে এখনো নতুনত্ব রয়েছে বলে আমি মনে করি৷ এককালে ফটোগ্রাফি ও সিনেমার ক্ষেত্রেও এমনটা ঘটেছিল৷ এই দুই ক্ষেত্রেরও বিকাশ ঘটেছে এবং আমাদের উপলব্ধিরও পরিবর্তন ঘটেছে৷ এখন আর শুধু দেখলেই চলে না, সেই সঙ্গে ভারচুয়াল ও ধ্বনিগত উপলব্ধিও জরুরি৷''

শুরু থেকে সংগীতও কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করে আসছে৷ সাউন্ড আর্টিস্ট বা ধ্বনিশিল্পী লুকা লংগোবার্ডি সংগীত বেছে নিয়ে নতুন করে সাজান৷ লুকা বলেন, ‘‘আমি ডিজিটাল কাঠামো, অর্থাৎ কম্পিউটারেই বেশি কাজ করি৷ সেই শিল্পীদের সঙ্গে কাজ করি, যাঁরা মঞ্চে সংগীত পরিবেশন করেন৷ এই প্রদর্শনীতে আমার এক সংগীতসৃষ্টি রয়েছে, যা আসলে অর্কেস্ট্রার জন্য ভেবে করেছিলাম৷ ইনস্টলেশনে অবশ্য শুধু এক স্ট্রিং কোয়ার্টেট ও এক ডিজিটাল অর্কেস্ট্রা সংগীত পরিবেশনা করে৷ শুনলে মনে হবে আসল এক অর্কেস্ট্রা যেন গির্জার মধ্যে সংগীত পরিবেশন করছে৷''

পঞ্চদশ ও ষোড়শ শতাব্দীতে রেনেসাঁস ছিল এক যুগান্তকারী ঘটনা, যা নিজের ও জগত সম্পর্কে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি পুরোপুরি বদলে দিয়েছে৷ রাফায়েল, মিকেলাঞ্জেলো ও বিশেষ করে লিওনার্দো দা ভিঞ্চির সৃষ্টিকর্ম সেই পরিবর্তনে বিশেষ অবদান রেখেছে৷ দা ভিঞ্চি-কে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বিদ্বজনদের অন্যতম হিসেবে গণ্য করা হয়৷ লুকা লংগোবার্ডি মনে করেন, ‘‘লিওনার্দো চিরকালই দূরদর্শী ছিলেন৷ তিনি এমন সব স্বপ্ন দেখেছিলেন, যা তাঁর বিদায়ের পর আবিষ্কৃত হয়েছে৷ আজকের যুগে তিনি বেঁচে থাকলে ডিজিটাল পদ্ধতিতে অনেক কিছু সৃষ্টি করতেন বলে আমার বিশ্বাস৷ হয়তো তিনি এখানে নতুন হলোগ্রাফিক উড়োজাহাজ প্রোজেক্ট করতেন৷''

এই প্রদর্শনী সবার আগে ফ্রান্সে দেখানো হয়৷ লাইপসিশ শহরের জন্য তার পরিবেশ নতুন করে সাজানো হয়েছে৷ লাইপসিশ বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. মার্কুস ল্যোফলার বলেন, ‘‘রেনেসাঁস যুগের সেরা ব্যক্তিত্বদের দিয়ে এই কর্মকাণ্ড সত্যি আমাকে নাড়া দিয়েছে৷ কিছু ক্ষেত্রে আবেগে চোখে পানি এসে গিয়েছিল৷ সেটাই শিল্পীদের লক্ষ্য ছিল৷ মানুষ শুধু ছবি দেখবেন, তাঁরা এমনটা আর চান না, বরং শিল্পকর্ম ও দর্শকের মধ্যে এক সাক্ষাতের অভিজ্ঞতাই কাম্য৷''

দর্শকরা ২০১৯ সালের শেষ পর্যন্ত ‘ইমার্সিভ আর্ট' দেখার এই অভিজ্ঞতার স্বাদ পেতে পারেন, শিল্পকর্মের মধ্যে ডুব দিতে পারেন৷

ইয়োসেফিন গ্যুন্টার/এসবি