দুই আবিষ্কারক ইউটিউবারের কাণ্ড!
৩১ অক্টোবর ২০১৯উড়ন্ত বাথটাবে চড়ে রুটি আনতে যান ফিলিপ মিকেনবেকার! বিষয়টি নিয়ে এরই মধ্যে বেশ সারা ফেলেছেন তিনি৷ শুধু তাই নয়, ভাই ইয়োহানেস মিকেনবেকারকে নিয়ে এমন সব মজার আবিষ্কার করে বেড়ান তিনি৷ ছেড়ে দেন ইউটিউবে৷ দুই ভাইয়ের ইউটিউব চ্যানেলের নাম ‘দ্য রিয়েল লাইফ গাইজ'৷
উড়ন্ত বাথটাবের মতো দ্য রিয়েল লাইফ গাইজের গোটা বিশেক এমন অদ্ভুত আবিষ্কার আছে৷ এরা দুই ভাই যমজ৷
ফিলিপ ও ইয়োহানেসের নতুন চ্যালেঞ্জ হলো বাচ্চাদের খেলনা গাড়ি দিয়ে সত্যিকারের গাড়ির সঙ্গে পাল্লা দেয়া৷ তাই খেলনাটির একটি ইঞ্জিন চাই৷ বরাবরের মতো ২২ বছর বয়সী দুই ছোকরা পুরো কাজটি নিজেরাই করছিলেন৷
‘‘আমরা কিছুই শিখে আসিনি৷ ইউটিউব টিউটোরিয়াল ও গুগল করে সব শিখেছি৷ শুরুতে বাবা কিছুটা সাহায্য করেছেন বাইসাইকেল ও আরো অনেক কিছু তৈরি করতে,'' বলেন ইয়োহানেস৷
ফ্রাঙ্কফুর্ট আম মাইনে পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া গ্যারেজটিই এই যমজের ওয়ার্কশপ৷ প্যাডেল চাপা গাড়িটি যেন একজন প্রাপ্তবয়স্কের ওজন নিতে পারে, তাই একে স্টিলের কাঠামো দিয়ে মুড়িয়ে দিলেন তারা৷ যুক্ত করা হলো ব্যাটারি চালিত একটি ইঞ্জিন৷
‘‘আগেরবার এতটাই বিদ্যুৎ প্রবাহ বেড়ে গিয়েছিল যে কন্ট্রোলারটি বিস্ফোরিত হয়ে গিয়েছিল৷ তাই এবার এ পরিমাণ বিদ্যুৎ প্রবাহ সামলাতে পারে অনেক খুঁজে এমন মোটর ও রেগুলেটর বসিয়েছি৷ এবার যখন পরীক্ষা করব, আশা করছি তেমনটি আর হবে না,'' ইয়োহানেস যোগ করলেন৷
২০১৬ সাল থেকে নিজেদের এমন নানা আবিষ্কারের ভিডিও ইউটিউবে পোস্ট করতে শুরু করেন এরা৷
ইতিমধ্যেই তারা তাদের বেশিরভাগ কাজের জন্য পৃষ্ঠপোষকতা পাওয়া শুরু করেছেন৷ এসব প্রকল্প দিয়ে রিয়েল লাইফ গাইজ চায় অন্যদেরও উদ্যোক্তা হতে অনুপ্রাণিত করতে৷
ইয়োহানেস বলেন, ‘‘অনেকেই কম্পিউটারের সামনে এমনিই সময় কাটান৷ ফলদায়ক কিছু করেন না৷ আমার কাছে ভার্চুয়াল জগতের সেসব অভিজ্ঞতার চেয়ে নিজে নিজে কিছু করা অনেক বেশি আনন্দের৷''
লাখ লাখ মানুষ তাদের ইউটিউব চ্যানেলটি দেখেন৷ এখন তাই জীবন চালাতে এখানেই পুরোটা সময় দিতে পারেন তারা৷ দু'জনই ছেড়েছেন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়াশোনা৷ ব্যবহারিক শিক্ষা তাদের কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ৷
তাদের আবিষ্কারের মধ্যে অ্যাডভেঞ্চারের বিষয়টি থাকে৷ কিছুদিন আগে ৩৬০ ডিগ্রি মোটরাইজড রকিং চেয়ার বানালেন তারা৷ এই যন্ত্রটিও বেশ সাড়া ফেলছিল৷
বানিয়েছেন সাবমেরিন৷ ফিলিপ বললেন, ‘‘সাবমেরিনটি আমাদের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও বিপদজনক আবিষ্কার৷'' যোগ করেন, ‘‘এখানে একটি ছিদ্র আছে, কারণ পানি হুড়মুড়িয়ে ঢুকে পড়তে পারে৷ আমি একে ধরে রাখি, তবে কাজ খুব একটা হয়না৷''
ফিলিপ আরো বলেরন, ‘‘আমরা কখনো কখনো বিপদজনক কাজ করি৷ তবে খেয়াল রাখি, কোনটা খুব ঝুঁকিপূর্ণ এবং সেক্ষেত্রে বিকল্প কী হতে পারে৷ যেমন, এখানে (সাবমেরিন চালানোর সময়) আমাদের সঙ্গে একজন ডুবুরি থাকেন৷ ভেতরে একটি অক্সিজেন সিলিন্ডার ও পেছনে একটি দড়ি লাগানো আছে৷ তাই আমাদের নিরাপত্তাও আছে৷''
বলতে বলতে পেডাল কার তৈরি করে ফেলেন দুই যমজ৷ এর ইঞ্জিনের ক্ষমতা ২০ অশ্বশক্তি৷ ইয়োহানেস তাঁর ভাইয়ের সঙ্গে পাল্লা দিতে ৯০ অশ্বশক্তির একটি ছোট গাড়িতে চড়ে বসেন৷ কিন্তু পেডাল কার ছাড়িয়ে যায় সেই গাড়িকে৷
তবে এমন আইডিয়া মাথায় এলেই সঙ্গে সঙ্গে ঝাঁপিয়ে পড়েন না এই দুই আবিষ্কারক৷ সময় নেন৷ যেমন এখন একটি উড়ন্ত গাড়ি তাদের মাথায় ঘুরছে৷
ক্রিস্টিনা লাউবে/জেডএ