1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

দুর্নীতির মামলায় বেতন বন্ধের নির্দেশ হাইকোর্টের

গৌতম হোড় নতুন দিল্লি
২৬ নভেম্বর ২০২১

পশ্চিমবঙ্গের স্কুলে গ্রুপ ডি কর্মী নিয়োগে দুর্নীতি মামলায় নতুন মোড়। ৫৪২ জন কর্মীর বেতন বন্ধের নির্দেশ হাইকোর্টের।

https://p.dw.com/p/43Wa0
প্রতীকী ছবি। ছবি: Satyajit Shaw/DW

এই ধরনের চাকরির ক্ষেত্রে স্কুল সার্ভিস কমিশন একটা প্যানেল তৈরি করে। মধ্যশিক্ষা পর্ষদ সেই প্যানেল অনুসারে নিয়োগ করে। কিন্তু এখানে পুরনো প্যানেল থেকে, প্যানেলের বাইরে গিয়ে কর্মী নিয়োগের অভিযোগ রয়েছে। সেই মামলা এখন হাইকোর্টে বিচারাধীন। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছেন, যাদের বিরুদ্ধে বেআইনিভাবে নিয়োগের অভিযোগ উঠেছে, সেই ৫৪২ জনের বেতন বন্ধ থাকবে। তবে তার আগে দেখে নিতে হবে, তারা এখনো চাকরিতে আছেন কিনা এবং তাদের নিয়োগপত্রও খতিয়ে দেখতে হবে।

এর আগে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এই অভিযোগের সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ তিন সপ্তাহের জন্য সেই নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ জারি করেছে। এরপর বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বেতন বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন।

বিভিন্ন চাকরির ক্ষেত্রে অভিযোগ

প্রবীণ সাংবাদিক আশিস গুপ্ত পশ্চিমবঙ্গে চাকরি পরিস্থিতি সম্পর্কে ডিডাব্লিউকে বলেন, ''পশ্চিমবঙ্গে এখন বিভিন্ন সরকারি চাকরির ক্ষেত্রেই দুর্নীতি ও বেনিয়মের অভিযোগ উঠছে। শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে উঠেছে, নার্সের চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে উঠেছে, পুলিশের চাকরির ক্ষেত্রে উঠেছে। স্কুলের গ্রুপ ডি কর্মীদের ক্ষেত্রে তো হাইকোর্টই এখন ব্যবস্থা নিচ্ছে।''

আশিসের মতে, ''ভোটের আগে ঢালাও সরকারি চাকরির প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়। কিন্তু সরকারের হাতে টাকা নেই। তাই নিয়োগ করা হয় না। যে সামান্য নিয়োগ হয়, তার মধ্যে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। পশ্চিমবঙ্গের সরকারি চাকরির প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই এই ধরনের অভিযোগ উঠছে।''

সিবিআই এখন পশ্চিমবঙ্গের কয়লা কেলেঙ্কারি, চিট ফান্ড কেলেঙ্কারি, নারদ মামলা এবং গরু পাচার নিয়ে তদন্ত করছে। গ্রুপ ডি কর্মী নিয়োগ মামলার তদন্তের ভার শেষপর্যন্ত তাদের হাতে এলে তালিকায় আরো একটি দুর্নীতির মামলা যোগ হবে।

Indien Lehrer Hungerstreik in Kalkutta
কলকাতায় আন্দোলনরত শিক্ষকরা। ছবি: DW/P. Samanta

গ্রুপ ডি নিয়োগ নিয়ে...

গ্রুপ ডি-র কর্মী নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর মধ্যশিক্ষা পর্ষদ বলছে, স্কুল সার্ভিস কমিশনই এর জন্য দায়ী। আর ঠিক উল্টো অভিযোগ করছে স্কুল সার্ভিস কমিশন। তারা দায় চাপাচ্ছে পর্ষদের উপর। বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলছেন, এটা তার আমলে হয়নি।

২০১৬ সালে রাজ্য সরকারি স্কুল ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলে গ্রুপ ডি কর্মী নিয়োগের বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হয়। তারপর চাকরির পরীক্ষা নেয়া হয়। সফল প্রার্থীদের প্যানেল তৈরি হয়। সেই প্যানেলের ভিত্তিতে ১৩ হাজার জন চাকরি পান। প্যানেলের মেয়াদ ২০১৯ সালে শেষ হয়। কিন্তু তারপরেও সেই প্যানেল থেকে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়। এরপরই দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। মামলা যায় হাইকোর্টে।

সংবাদমাধ্যমের দায়

প্রবীণ  সাংবাদিক শুভাশিস মৈত্র ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ''এর আগেও প্রতিটি সরকারের আমলে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। সংবাদপত্রে প্রচুর লেখালেখি হয়েছে। সরকারও তদন্ত কমিশন করতো। সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়ের সময়ে ভুষি কেলেঙ্কারি নিয়ে তদন্ত কমিশন হয়েছে। বাম আমলে মাটি কেলেঙ্কারি থেকে ওয়াকফ কেলেঙ্কারি পর্যন্ত বিভিন্ন অভিযোগ নিয়ে কমিশন হয়েছে।''  শুভাশিস মনে করেন, ''এখন মিডিয়া সেই কাজ করে না। লেখালিখি হয় না। জানা যায় না, কতবড় অভিযোগ। মিডিয়া নিজের কাজ করছে না বলে বিষয়টি সরাসরি আদালতে চলে যাচ্ছে।''

বাম ছাত্র-যুবদের বিক্ষোভ

গ্রুর ডি কর্মী নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছে বামপন্থি ছাত্র-যুবরা। গত বুধবার তারা সল্ট লেকে স্কুল শিক্ষা কমিশনের ভবন অভিযান করে। কিন্তু তাদের ভবন পর্যন্ত যেতে দেয়নি পুলিশ। কিন্তু বাম ছাত্র ও যুবরা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে এগিয়ে যেতে চান। শুরু হয় পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি। বাম ছাত্র-যুবরা রাস্তায় বসে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। পুলিশ তাদের জোর করে তুলে নিয়ে যায়। বামপন্থি নেতাদের অভিযোগ, পুলিশ নারী কর্মীদের সঙ্গে অশোভনীয় আচরণ করেছে। বাম নেত্রী মীনাক্ষি মুখোপাধ্যায়কে পুলিশ রাস্তা দিয়ে টানতে টানতে নিয়ে যায়। একজন ছাত্র অসুস্থ হয়ে পড়েন।