1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

দেওয়ালির আগেই দিল্লির বায়ুদূষণ চরমে

৩ নভেম্বর ২০২১

বৃহস্পতিবার দেওয়ালি। তার আগেই দিল্লির বায়ুদূষণের অবস্থা খুব খারাপ পর্যায়ে চলে গেল।  

https://p.dw.com/p/42Vvq
দিল্লিতে বায়ুদূষণের মাত্রা খুবই বেশি। ছবি: Jewel Samad/AFP/Getty Images

বাজি ফাটা শুরু হয়ে গেছে মঙ্গলবার থেকেই। খড় পোড়ানো চলছে। আর দিল্লি ও তার আশপাশের গাজিয়াবাদ, নয়ডার মতো জায়গায় বায়ুদূষণের পরিমাপ বলছে, 'ভেরি পুওর' বা খুবই খারাপ। 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেওয়ালির দিন পরিস্থিতি আরো খারাপ হতে পারে। সরকার যাই বলুক না কেন খড় পোড়ানো চলছে। শীত আসছে। হাওয়ায় তেজ না থাকলে দূষণ যাবে না। তার উপর যদি বাজি পোড়ানো শুরু হয়, তা হলে আবার অস্বাস্থ্যকর বায়ুদূষণের কবলে পড়তে বাধ্য দিল্লি। এখনই দিল্লির অধিকাংশ জায়গায় অবস্থা অস্বাস্থ্যকর। বায়ুদূষণ বাড়লে তা দিল্লিবাসীর যন্ত্রণার কারণ হতে বাধ্য।

মঙ্গলবার সারাদিনের বায়ুদূষণের গড় পরিমাপ হলো ৩০৩। তিনশর বেশি হলেই তা খুব খারাপ পর্যায়ে চলে যায়। খুব খারাপ মানে খুবই অস্বাস্থ্যকর। বুধবার সকালেও দিল্লি ও তার আশপাশের এলাকায় বায়ুদূষণ খারাপ এবং খুব খারাপের মধ্যে ঘোরাফেরা করেছে। এখনো ধোঁয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েনি দিল্লি। কিন্তু দেওয়ালিতে বাজি ফাটালে সেটাও চলে আসবে।

দিল্লির বায়ুদূষণ নিয়ে যারা কাজ করে সেই সফর-এর মতে, দেওয়ালির দিন দিল্লির বায়ুদূষণ মারাত্মক জায়গায় পৌঁছতে পারে। ২০১৯-এর তুলনায় অর্ধেক বাজি ফাটলেও এই অবস্থা হবে বলে তারা জানিয়েছে। সফরের মতে, যদি কোনো বাজি ফাটানো নাও হয়, তাও দিল্লির বায়ুদূষণ পরিস্থিতি খুবই খারাপ থাকবে।

সফরের প্রজেক্ট ডিরেক্টর গুফরান বেগ বলেছেন, হাওয়ার দিকবদল হচ্ছে। এর ফলে খড় পোড়ানো ধোঁয়া এবার দিল্লিতে আরো বেশি করে আসবে। তার ফলে পরিস্থিতি খারাপ হবে। সেন্টার ফর সায়েন্স অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর অনুমিতা বসুরায়চৌধুরী টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে বলেছেন, এবার খুব কম সময় ধরে খুব বেশি পরিমাণ খড় পোড়ানো হতে পারে। তাই দিল্লি দেওয়ালির সময় ধোঁয়াশার কবলে পড়তে পারে।

সেন্ট্রাল পলিউশন কন্ট্রোল বোর্ডের এয়ার ল্যাবরেটরির সাবেক প্রধান  দীপঙ্কর সাহা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, দেওয়ালির সময় দিল্লির দূষণের পরিমাপ দাঁড়াতে পারে ৩৫০, যা খুবই ক্ষতিকর।

প্রতিবছর সরকার নানা ধরনের প্রতিশ্রুতি দেয় দূষণ কম করার। তা সত্ত্বেও ছবিটা বিশেষ বদলায় না। কেন? প্রবীণ সাংবাদিক শরদ গুপ্তা ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ''দেওয়ালির দিন দুই ঘণ্টার জন্য বাজি ফাটাতে দেয়া হবে। আসলে সরকার ভোট ব্যাঙ্ক অটুট রাখতে চায়। হিন্দুদের চটালে তো তারা ভোট পাবে না।'' শরদের মতে, ''গোটা পৃথিবী জুড়েই রাষ্ট্রপ্রধান থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ পর্যন্ত পরিবেশ সম্পর্কে অসচেতন। না হলে, সমুদ্রের জলস্তর বাড়ছে, প্রকৃতি তার প্রতিশোধ নিতে শুরু করেছে, কিন্তু কেউ জরুরি ব্যবস্থা নিচ্ছেন না।''

বাজির আওয়াজ

দিল্লির লাগোয়া শহর গুরুগ্রামের অভিজ্ঞতা হলো, মঙ্গলবার সারাদিন ও অনেক রাত পর্যন্ত বাজি ফেটেছে। বুধবারও বাজি ফাটছে। দিল্লিতেও বাজির শব্দ শোনা যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার দেওয়ালির দিন বাজি ফাটার পরিমাণ অনেকটা বাড়তে পারে। আলো হোক বা শব্দ, সবুজ হোক বা না হোক, প্রতিটি বাজি থেকেই বায়ুদূষণ হয়। সবুজ বাজিতে কিছুটা কম। অন্য বাজিতে পুরোদস্তুর। কলকাতার পরিবেশ আন্দোলনকারী সুভাষ দত্ত ডয়চে ভেলেকে আগেই জানিয়েছেন, সুপ্রিম কোর্ট গ্রিন বাজি ফাটানোর অনুমতি দেয়ায় তিনি হতাশ। বাজি পুড়লে দূষণ হবে।

আর দূষণ হলে দিল্লির পরিস্থিতি খারাপ হবে। খুব খারাপ থেকে ভয়ংকর জায়গায় চলে যাবে বায়ুদূষণ। যাদের শ্বাসকষ্ট আছে, করোনায় আক্রান্ত, তাদের অবস্থা খারাপ হবে। তাদের জন্য কষ্টের সময় অপেক্ষা করছে।

জিএইচ/এসজি(সিপিসিবি, টাইমস অফ ইন্ডিয়া)