1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘‘দৌড় আমাকে বাঁচিয়ে রাখে''

রেশমী নন্দী
২২ ডিসেম্বর ২০১৭

সেই ১৯৮৯ সালে দেশ ছেড়ে জার্মানিতে আসেন শিব শংকর পাল৷ ভিন্ন ভাষা ও সংস্কৃতিতে মানিয়ে নেয়ার যুদ্ধে জিতেছেন সফলভাবেই৷ সম্প্রতি মিউনিখ পৌর কর্তৃপক্ষ তাঁকে দিয়েছেন ‘সফল অভিবাসী উদ্যোক্তা'-র স্বীকৃতি৷

https://p.dw.com/p/2ppSZ
Cricket ICC Champions Trophy Australien - Bangladesch
ছবি: picture-alliance/empics/A. Davy

ইউরোপের উন্নত ও সমৃদ্ধশালী শহরগুলোর একটি জার্মানির মিউনিখ শহর৷ বাভেরিয়ার রাজ্যের রাজধানী মিউনিখের মোট জনসংখ্যার এক চতুর্থাংশই অভিবাসী৷ নগর উন্নয়নে অভিবাসীদের গুরুত্বপূর্ণ অবদানের কথা বিবেচনা করে এখানকার পৌর কর্তৃপক্ষ অভিবাসী উদ্যোক্তাদের পুরষ্কৃত করতে ২০১০ সাল থেকে চালু করে ‘ফিনিক্স পুরস্কার'৷ প্রথমবারের মতো এ পুরস্কার জিতলেন একজন বাংলাদেশি৷

ডয়চে ভেলের সাথে কথোপকথনকালে শিব শংকর পাল বলেন, ‘‘এখন তো অনেকেই এসে সরাসরি চাকরি করতে পারে৷ কিন্তু আমাদের সেই সময়ে এটা খুব কঠিন ছিল৷ আমি এখানে প্রথমে এসে আমার সার্টিফিকেটগুলোকে ‘একনলেজ' করানোর৷ কিন্তু হয়নি সেটা৷ আমাকে কেবল ‘আবিটুর' (জার্মানির শিক্ষাব্যবস্থায় মাধ্যমিক সমমানের পরীক্ষা) পর্যন্ত স্বীকৃতি দিয়েছিল৷'' হতাশ না হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক করে আসা শিব শংকর বৈদ্যুতিক ব্যবসায় প্রয়োজনীয় পড়াশুনা করে গড়ে তোলেন ‘পাউলইলেক্ট্রো' নামের একটি প্রতিষ্ঠান৷

বাংলাদেশের শিব শংকরের পাশাপাশি এবার মিউনিখের ফিনিক্স পুরষ্কার পেয়েছেন ফ্রান্স, ইটালি, গ্রিস ও পোল্যান্ড থেকে আসা আরো চার অভিবাসী৷ ডিসেম্বরের ৫ তারিখ তাঁদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন শহরের মেয়র৷

শিব শংকর গত ২৮ বছর ধরে বাস করছেন জার্মানিতে৷ স্ত্রী ও তিনসন্তান আর সেই সাথে নিজের ব্যবসা – এ সব নিয়ে ব্যস্ত জীবনের দৌড়ের পাশাপাশি মাঠেও দৌড়ান শিব শংকর৷ নিজস্ব এই নেশার ঘোরে নিয়মিত দৌড়ে অংশ নেন বিভিন্ন প্রতিযোগিতায়৷ এ পর্যন্ত অসংখ্য আন্তর্জাতিক ম্যারাথনে অংশ নেন তিনি৷ তাঁর ভাষায়, ‘‘ দু-তিন দিন না দৌড়ালে মনে হয় কী যেন করা হয়নি৷ দৌড় আমাকে বাঁচিয়ে রাখে৷''

যেসব তরুণ হতাশাগ্রস্থ হয়ে বিপথে পা বাড়ায়, তাদের জন্যও তিনি বলেন, ‘‘এ ধরনের কোনো অবলম্বন থাকলে মানুষ সহজে হতাশ হয় না৷'' ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, সফল উদ্যোক্তা হিসেবে এ স্বীকৃতি দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে ক্লায়েন্টদের আস্থা অর্জন করতে হয়েছে৷ অভিবাসী হিসেবে প্রতিকূলতার বাঁধাও টপকাতে হয়েছে অনেক৷ তবে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশিদের দেশের বাইরে বিভিন্ন নেতিবাচক কাজে জড়িয়ে পড়ায় অনেক সময় ভিন্ন ধরনের অবিশ্বাসের মুখোমুখিও হতে হয় তাঁকে৷ ‘‘অনেকেই মনে করেন, সন্ত্রাসী সব তৈরি হয় কেবল আমাদের ঐ দেশগুলোতে-বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্তানের মতো দেশে৷'' তবে সবাই মিলে চেষ্টা করলে এ ধরনের সমস্যা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব,  একজন প্রকৃত দৌড়বিদের মতোই এমন আশার কথাও জানান সেই সাথে৷

শিব শংকর পালকে কিছু বলতে চাইলে লিখুন নীচের ঘরে৷ আপনার শুভেচ্ছা আমরা তাঁর কাছে পৌঁছে দেবো৷