1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ধূমকেতু ‘চুরি'

কর্নেলিয়া বর্মান/এসি৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

ধূমকেতুর নাম ‘চুরি' – ৬৭পি/চুরিউমভ-গেরাসিমেঙ্কো৷ ধূমকেতুটি এখন পৃথিবী থেকে সাড়ে ৪০ কোটি কিলোমিটার দূরত্বে৷ রোসেটা স্পেস প্রোব এই ধূমকেতুটির উপরই নামিয়েছে তাদের নতুন রোবট ‘ফিলে' ল্যান্ডার – প্রায় সঠিকভাবে৷

https://p.dw.com/p/1EUlS
Komet Ison NASA
ছবি: Reuters

’চুরি' ধূমকেতুর একটির পর একটি চমক৷ প্রথমত তার কিম্ভুত আকৃতি, যে কারণে তার নাম ইতিমধ্যেই ‘স্পেস ডাক' বা মহাশূন্যের হাঁস হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ ওদিকে তার উপরিভাগ যতটা কঠিন হবে বলে ভাবা গিয়েছিল, তার চেয়েও বেশি কঠিন৷

‘মুপুস' নামধারী যে যন্ত্রটি এই সব তথ্য পাঠিয়েছে, সেটি একটি অ্যান্টেনা-যুক্ত ড্রিল-হ্যামার৷ ল্যাবোরেটরিতে মুপুস-এর যে জোড়োয়া আছে, সেটির মতোই ‘চুরি' ধূমকেতুর উপরে যে মুপুসটি নেমেছে, সে-ও ধূমকেতুর মাটিতে আঁকশি গাড়ার চেষ্টা করেছে, প্রথমে ধুলোর স্তর ভেদ করে৷ কিন্তু কয়েক সেন্টিমিটার যাবার পরেই মাইনাস ১৭০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রার কঠিন ধাতব পদার্থে ধাক্কা খেয়ে আঁকশি সেখানেই থেমে গেছে৷

বার্লিনের ডিএলআর গ্রহ গবেষণা প্রতিষ্ঠানের প্রফেসর টিলম্যান স্পন বলেন: ‘‘ধূমকেতু কী পদার্থ দিয়ে তৈরি, সে বিষয়ে এতদিন যা ভাবা গিয়েছিল, তা থেকে মনে হতে পারে যে, সেটা কোনো বরফ জাতীয় পদার্থ হবে, হয়ত জমাট বাঁধা গুঁড়ো বরফ৷ আমরাও তা-ই ভেবেছিলাম: সত্যিকারের বরফের মতো এরকম শক্ত কিছু আমরা ভাবতে পারিনি৷''

Bildergalerie ESA Projekt 3013
এই রোসেটার চূড়ান্ত গন্তব্য হচ্ছে ধূমকেতু ‘চুরি'ছবি: ESA/AOES Medialab

বাধা-বিপত্তি

গবেষণায় নানা বাধা এসে থাকে৷ ‘চুরি'-র মাধ্যাকর্ষণ শক্তি খুবই কম৷ ল্যান্ডার ‘ফিলে'-র ওজন পৃথিবীতে ১০০ কিলো হলেও, ধূমকেতুর ওপর তার ওজন মাত্র চার গ্রাম৷ যে কারণে ধূমকেতুতে অবতরণের সময় মাটিতে আঁকশি গেঁথে ফিলে-কে স্থিতিশীল করার পরিকল্পনা ছিল৷ কিন্তু ব্যাপারটা সেভাবে ঘটেনি৷ পরিকল্পনা মতো ল্যান্ডার যানটি পূর্বনির্বাচিত অবতরণের স্থানের দিকে চলেছে, কিন্তু তারপর মাটিতে ধাক্কা খেয়ে আবার বাতাসে উঠেছে এবং শেষমেষ একটি দেয়ালের সামনে টেরা হয়ে দাঁড়িয়ে পড়েছে: মুপুস বিজ্ঞানীদের কপাল মন্দ বৈকি৷

কাজেই সার্ফেস প্রোব পরিকল্পনা মতো বাড়ানো যায়নি৷ ড্রিল করা সম্ভব ছিল, কিন্তু কন্ট্রোল ক্যামেরা ছাড়া৷ সব সত্ত্বেও বিজ্ঞানীরা হাল ছাড়েননি৷ প্রফেসর স্পন-এর বিবৃতিতে: ‘‘আমরা ওখানে গেছি, এই বস্তুটিকে তার জায়গায় বসাতে৷ তা না করে তো আমরা ফিরতে পারি না শুধু এই কারণে যে, আমরা জানি না, সামনে কী আছে৷ স্বভাবতই এখানে একটা বড় ঝুঁকি ছিল৷ মুপুসকে ধূমকেতুর ওপরে নামানোটা ছিল আরো একটা বড় ঝুঁকি৷ কাজেই এক হিসেবে জানাই ছিল, কোনো না কোনো গোলমাল হবে৷''

ধাঁধা ও হেঁয়ালি

ল্যান্ডারের নীচের দিকে লাগানো ক্যামেরাটি ধূমকেতুর দিকে যাবার সময়েই তার উপরিভাগের একাধিক ছবি তুলেছে – এবং তার যত তথ্য সংগ্রহ করার কথা ছিল, তার চেয়ে অনেক বেশি তথ্য সংগ্রহ করেছে: একটির বদলে দু'টি ল্যান্ডিং-এর ক্লোজ-আপ৷ ছবিগুলিতে যে দৃশ্য দেখা যাচ্ছে, সেগুলি সম্পূর্ণ আলাদা, যদিও দু'টি স্থান খুবই কাছাকাছি৷ এটা কী করে সম্ভব, তা এখন বিজ্ঞানীদের ভেবে বার করতে হবে৷ ধূমকেতু থেকে ধুলো ওড়ার ছবিগুলোও একটা রহস্য, কেননা ‘চুরি'-র ওপর কোনো বাতাস নেই৷ ধূমকেতুটির কোনো আবহমণ্ডল নেই৷ সূর্যকিরণে ধূমকেতুর উপরিভাগ থেকে বরফ বাষ্প হয়ে বেরোচ্ছে কি? নাকি ধূমকেতুর অভ্যন্তর থেকে বাষ্প ফোয়ারার মতো ফুটে বেরিয়ে আরেকদিকে মাটিতে ঝরে পড়ছে? এরকম নানা প্রশ্ন, নানা রহস্য বাকি থেকে যাচ্ছে৷

তবুও রোসেটা স্পেস প্রোব ফিলে ল্যান্ডারটিকে ঠিকই ধূমকেতুর পৃষ্ঠে পাবে৷ তবে ফিলে-র সোলার ব্যাটারিগুলি খালি, কাজেই তাকে আরো বেশি সূর্যালোকের জন্য অপেক্ষা করতে হবে৷ হয়ত আগামী বছর সে আবার সাড়া দেবে৷ ইত্যবসরে অনুসন্ধান চলতে থাকবে৷ রোজেটা ‘চুরি'-র সঙ্গে সূর্যের দিকে যাবেএবং দেখবে, কিভাবে ধূমকেতুর তাপমাত্রা বাড়বে এবং আরো বেশি বরফ ও ধুলার ‘প্রশ্বাস' ছাড়তে থাকবে৷ সেটাই হবে এই মহাকাশ অভিযানের পরবর্তী রোমাঞ্চ৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান