1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নতুন মোড়কে ক্লাসিক শিল্প তুলে ধরছেন রুশ শিল্পী

৮ অক্টোবর ২০২১

ইউরোপীয় ঘরানার পুরানো অপেরা আজকের যুগে তেমন জনপ্রিয় নয়৷ এক রুশ শিল্পী অভিনব কস্টিউম ও সংগীতের মোড়কে এমন কাহিনিকে নতুন মাত্রা দিয়ে পরিবেশন করছেন৷ তার তৈরি ল্যাটেক্সের কস্টিউম অবিস্মরণীয় অভিজ্ঞতা সৃষ্টি করছে৷

https://p.dw.com/p/41QpH
DW Euromaxx Sasha Frolova
ছবি: arte

এই সব পোশাক মঞ্চের উপর যেন অনেকটা মূর্তির মতো ভাসতে থাকে৷ রুশ পারফরমেন্স শিল্পী সাশা ফ্রলোভা সেগুলি ডিজাইন করেছেন৷ ফোলানো যায় এমন সৃষ্টির কারণে তিনি বিখ্যাত হয়ে উঠেছেন৷ ‘টেরা ম্যাজিকা'-র মতো প্রকল্পে তিনি নিজেই সেই পোশাক গায়ে চাপিয়েছেন৷ সাশা বলেন, ‘‘ক্লাসিকাল আর্ট ও বারোক শৈলির অপেরা আমাকে খুব প্রেরণা দেয়৷ কিন্তু আমার মতে ক্লাসিকাল আর্টকে নতুনভাবে তুলে ধরা প্রয়োজন৷ নতুন ফর্ম ও নতুন ভিসুয়াল ল্যাংগুয়েজ চাই৷''

এস্টোনিয়ার রাজধানী টালিনে নিজের প্রথম অপেরা প্রোডাকশনে তিনি সেই পরিকল্পনার রূপায়ন করেছেন৷ কাদ্রিয়র্ক নামের আর্ট মিউজিয়ামের ৩০৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে প্রথমবার সেই অপেরার মঞ্চায়ন হয়৷ সাশার ‘এক্সেন্ট্রিক' বা খামখেয়ালি সৃষ্টিগুলি ল্যাটেক্স দিয়ে তৈরি৷ সেই পোশাকের প্রস্তুতি ও সাজানোর কাজই বিশাল চ্যালেঞ্জ৷ পোশাকের উপাদান ইলাস্টিক হলেও সেটি পরার কাজ মোটেই সহজ নয়৷ প্রত্যেকটি কস্টিইউমের মধ্যে খুঁটিনাটী বিষয়গুলির প্রতি যত্ন চোখে পড়ে৷ সাশা ফ্রলোভা জানালেন, ‘‘এমন কস্টিইউম তৈরি করতে প্রায় দুই সপ্তাহ সময় লাগে৷ ল্যাটেক্স বিশেষ এক নমনীয়তা আনে এবং শরীরের নড়াচড়া স্থির করে দেয়৷ আপনার শরীরের মুভমেন্ট ও অনুভূতি বদলে দেয়৷''

অপেরার কুশিলবদের জন্যও এ এক নতুন অভিজ্ঞতা৷ এক নর্তকি বলেন এমন পোশাক পরলে খুব গরম লাগে৷ যেন শরীরের মধ্যে সাউনা৷ আর এক জনের মতে, এই সব কস্টিউম পরে যথেষ্ট অনুশীলন হয় নি৷ ফলে কস্টিউম ছাড়া কোরিওগ্রাফি বা নাচের সময়ে তিনি জানতেন না সেটি কেমন দেখতে বা পরলে কেমন অনুভূতি হবে, কেমন পরিবেশ সৃষ্টি করবে৷ এটাই সবচেয়ে জটিল বিষয়৷

ল্যাটেক্সের জামা পরে অপেরা!

সাশা ফ্রলোভা মস্কোয় আর্ট ও ডিজাইন নিয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেছেন৷ তিনি প্রায়ই নিজের পারফর্মেন্সে অংশ নেন৷ যেমনটা ‘অ্যাকোয়া এয়ারোবিকা' প্রকল্পেও ঘটেছে৷

তাঁর সৃজনশীল ল্যাটেক্স আর্ট আন্তর্জাতিক স্তরেও একাধিক স্বীকৃতি পেয়েছে৷ ২০১৪ সালে তিনি লন্ডনে ‘বিকল্প মিস ওয়ার্ল্ড' প্রতিযোগিতায় জয়ী হয়েছেন৷ সেই মঞ্চে ডাইভার্সিটি বা বহুমুখীতা তুলে ধরা হয়৷ দশ বছরেরও বেশি সময় ধরে সাশা ফ্রলোভা ইউরোপের বিভিন্ন মিউজিয়াম ও মঞ্চে নিজের সৃষ্টি পরিবেশন করছেন৷

টালিন শহরে ‘টেরা মাজিকা' নামের ব্যালে অপেরায় তিনি ক্লাসিক ঘরানা বেছে নিয়েছেন৷ বিষয়  নির্জন দ্বীপে আটকে পড়া দুই তরুণ-তরুণীর প্রেমের কাহিনি৷ বিখ্যাত ইটালীয় সুরকার আন্টোনিও ভিভালডির একাধিক সংগীতের সংমিশ্রণ ঘটিয়ে আবহ সংগীত রচনা করা হয়েছে৷ সাশা প্রায় সাত মাস ধরে মঞ্চায়ন প্রস্তুতির কাজ করেছেন৷ সেই পরিশ্রম অবশ্যই সার্থক হয়েছে৷

পারফরমেন্সের পর সাশা ফ্রলোভার সঙ্গে ছবি তোলার সুযোগও রয়েছে৷ তিনি বলেন, ‘‘কয়েকটি ছোট সমস্যা হয়েছিল৷ তবে ভাগ্য ভালো, বড় কোনো সমস্যা হয় নি৷ সব মিলিয়ে ভালোই হয়েছে, তবে পারফর্মেন্সের সময় সত্যি বড় কম৷''

পারফরমেন্স ছোট হলেও মনে ছাপ রেখে গেছে৷ অতুলনীয় মঞ্চায়নের মাধ্যমে সাশা ফ্রলোভা শুধু দর্শক নয়, শিল্পীদেরও অবিস্মরণীয় অভিজ্ঞতার করে সুযোগ দিয়েছেন৷

মেগিন লেই/এসবি