1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নাক দিয়ে যায় চেনা

৪ এপ্রিল ২০১৬

জার্মানির বোখুম ইউনিভার্সিটির গন্ধ বিশেষজ্ঞদের কাছে শেখা যায়, নাক ছাড়া আর কোন অঙ্গ দিয়ে গন্ধ শোঁকা যায়৷ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ নাকি বিশেষ বিশেষ গন্ধ শোঁকালে রাসায়নিক প্রতিক্রিয়া দেখায়৷

https://p.dw.com/p/1IO8S
Symbolbild Nasenkorrektur
ছবি: Colourbox/A.Minde

ফুলের মতো সুগন্ধ হোক, বা অন্য কোনো দুর্গন্ধ – সেল বায়োলজিস্ট, অর্থাৎ কোষ জীববিজ্ঞানী প্রফেসর হান্স হাট-এর কাছে তারা সবাই প্রিয়৷ প্রফেসর হাট-এর নাক যে অন্যদের চেয়ে বেশি ভালো, এমন নয়৷ তবে তাঁর নাক গন্ধ শুঁকে শুঁকে স্পেশালিস্ট হয়ে উঠেছে৷

বোখুমের রুর বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর পরীক্ষাগারে হান্স তাঁর ছাত্র-ছাত্রীদের গন্ধ চেনান, চিনতে শেখান৷ যে সব পথিকৃৎরা প্রথম উপলব্ধি করেন, আমাদের জীবনে বিভিন্ন গন্ধ ও সুগন্ধের গুরুত্ব ঠিক কতখানি, হান্স হাট তাদের মধ্যে পড়েন৷ ঘ্রাণেন্দ্রিয় সম্পর্কে আমাদের জ্ঞানে যারা বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছেন, হাট সেই সব বিজ্ঞানীদের মধ্যে পড়েন৷ তাঁর সংগ্রহে বেশ কয়েক হাজার গন্ধের নমুনা আছে৷

‘‘নাকের চেয়ে বেশি আশ্চর্যকর, চমকপ্রদ ইন্দ্রিয় আমাদের আর কিছু নেই'', জানালেন হাট৷ ‘‘প্রতি চার সপ্তাহে আমাদের নাক পুরোপুরি বদলে যায়৷ আমরা জীবনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত নিঃশ্বাস নিই আর গন্ধ শুঁকি৷ প্রত্যেকবার শ্বাস নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নাক আমাদের মস্তিষ্কে নানা তথ্য পাঠায়৷ এমনকি আমরা যখন ঘুমোই, তখন পর্যন্ত৷ আমাদের নাক দশ হাজার কোটি গন্ধের মধ্যে তফাৎ করতে পারে৷ নাক অন্য যে কোনো ইন্দ্রিয়ের চেয়ে বেশি সংবেদনশীল৷''

কিন্তু সেল বায়োলজিস্ট হান্স হাট আজ নাক ছেড়ে অনেকদূর এগিয়ে গেছেন৷ তাঁর পরীক্ষাগারে তিনি বিভিন্ন ধরনের টিস্যু – যেমন ত্বক কিংবা অন্ত্রের টিস্যু কালচার করেন ও বিভিন্ন ধরনের গন্ধের প্রতি তাদের প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করেন৷ আমাদের ঘ্রাণেন্দ্রিয়ের সঙ্গে তার কী সম্পর্ক? হাট জানালেন, ‘‘প্রথাগত ধারণা অনুযায়ী শুধু নাকই গন্ধ নিতে পারে৷ কিন্তু আমরা গন্ধের প্রতি শরীরের অন্যান্য অংশের প্রতিক্রিয়াকেও গন্ধ শোঁকাই বলি৷ নাকের মতো যকৃত, ফুসফুস, অন্ত্র বা ত্বকের কোষগুলোতেও গন্ধের সেন্সর আছে৷ গন্ধের উদ্দীপনা থেকে কোষে বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক প্রতিক্রিয়া হয়৷''

বোখুমের গন্ধ গোয়েন্দারা দেখাতে পেরেছেন যে, আমাদের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ ও টিস্যু গন্ধ শুঁকতে সক্ষম, অর্থাৎ তারা গন্ধের প্রতি প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করে৷ যেমন মানব ডিম্বাণুর লিলিফুলের মতো গন্ধ শুক্রকে জাদুমন্ত্রের মতো আকর্ষণ করে৷ ভায়োলেট ফুলের গন্ধ শুঁকলে প্রস্টেট ক্যানসারের সেলগুলো আর ছড়ায় না৷ মাইক্রোস্কোপের তলায় এ ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখার জন্য হাজার হাজার এক্সপেরিমেন্টের প্রয়োজন৷ রুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক জীববিজ্ঞানী ড. লায়ান গেলিস বললেন, ‘‘কোষগুলো সক্রিয় হলে সেগুলোর রং বদলে যায়, তারা লাল হয়ে যায়৷ আর সেটাই হলো সেই নাটকীয় মুহূর্ত – এটাই তাহলে সঠিক গন্ধ! হ্যাঁ, ল্যাবরেটিরেতে সেটাই আমাদের ইউরেকা মুহূর্ত৷''

বহু বছর ধরে গন্ধ বিশেষজ্ঞদের ঠাট্টা শুনতে হয়েছে৷ আজ তাঁদের কদর সারা বিশ্বে – ভেষজ আর প্রসাধন শিল্প তাঁদের চায় উপদেষ্টা হিসেবে৷ তাঁদের কাজ যে যুগান্তকারী, দুনিয়া এতদিনে সেটা বুঝতে পেরেছে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য