1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নারী অধিকার আদায়ে জাতিসংঘের উদ্যোগ

২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১১

জাতিসংঘের মহিলা দপ্তর ইউএন ওম্যান এ বছরের শুরুতে নারী অধিকার আদায়ে একটি এ্যাকশান প্ল্যান হাতে নিয়েছে৷ এই কর্মসূচির নাম দেওয়া হয়েছে একশো দিনের এ্যাকশান প্ল্যান৷

https://p.dw.com/p/10PD9
ছবি: AP

জাতিসংঘের মহিলা দপ্তর ইউএন ওম্যানের প্রধান চিলির সাবেক প্রেসিডেন্ট মিশেল বাচেলেট৷ সারা বিশ্বে নারীদের অধিকার রক্ষা এবং আদায়ে একশো দিনের এ্যাকশান প্ল্যান হাতে নেওয়া হয়েছে৷ জাতিসংঘের উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে বিশ্বের নারীদের এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন বাচেলেট৷

দৃঢ় প্রত্যয়

জানুয়ারি মাসে ইউএনওম্যানের বোর্ডে এক ভাষণে তিনি বলেন, ‘‘মহিলাদের এগিয়ে নিয়ে যাওয়া অত্যন্ত জরুরি৷ কর্মজীবী মহিলা, বিচক্ষণ মহিলা হলো যে কোন দেশের, যে কোন সমাজের অমূল্য সম্পদ৷ আমাদের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ হল সব ধরণের বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে এই অমূল্য সম্পদকে যথাযথভাবে কাজে লাগানো৷''

সবচেয়ে বেশি করে যে বিষয়ের ওপর তিনি জোর দেন তা হল, উচ্চাশার সঙ্গে সাধারণ জ্ঞান-গরিমার সমতা৷ এক্ষেত্রে পাঁচটি বিশেষ নীতির কথা বলেন তিনি৷ এর মধ্যে আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে জাতীয় পর্যায়ে কাজ করা, নারী-পুরুষের মধ্যে সমানাধিকার প্রতিষ্ঠা করা, সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে এগিয়ে আসতে নারীদের উদ্বুদ্ধ করা এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কী কী হচ্ছে সে বিষয়ে সার্বক্ষণিকভাবে নারীদের অবগত করা৷

সম্মিলিত উদ্যোগ

Mexiko Chile Präsidentin Michelle Bachelet zu UN Women Leiterin
ইউএন ওম্যানের প্রধান চিলির সাবেক প্রেসিডেন্ট মিশেল বাচেলেটছবি: AP

জাতিসংঘের চারটি বিশেষ দপ্তরকে জুড়ে গত বছর ইউএনওম্যান প্রতিষ্ঠিত করা হয়৷ দপ্তরগুলো হল ইউনিফেম, ডিভিশন ফর দ্য এ্যাডভান্সমেন্ট অফ ওম্যান, অফিস অফ দ্য স্পেশাল এ্যাডভাইজার অন জেন্ডার ইস্যু এবং ইউএন ইন্সট্র৷

ফেব্রুয়ারি মাসের ২৪ তারিখ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে পুরোপুরি কার্যক্রম শুরু করেছে জাতিসংঘের নতুন এই এজেন্সি৷ সারা বিশ্বে নারীদের অধিকার আদায় নিয়ে এই দিনই জাতিসংঘের ৫৫তম অধিবেশন বসেছিল৷ অধিবেশনে নারী-পুরুষের সমানাধিকার নিয়েও বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে৷

মিশেল বাচেলেট জানিয়েছেন, ইউএনওম্যান কাজ করবে সারা বিশ্বে৷ তবে প্রতিটি দেশের সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে ইউএনওম্যানের লক্ষ্য পূরণে সাহায্য করতে৷ তৃণমূল পর্যায়ে কাজ করতে আগ্রহী সংস্থাটি৷ সেটা শিল্পোন্নত দেশ থেকে তৃতীয় বিশ্বের দেশ পর্যন্ত৷

সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা

জানুয়ারি মাসের শেষে ইউএনওম্যানের বোর্ডে ভাষণ দিতে গিয়ে মিশেল বাচেলেট পাঁচটি বিষয়ে কাজ করার ওপর গুরুত্ব দেন৷ তা হল নারীদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা, নেত্রী হিসেবে আত্মপ্রকাশের সুযোগ, পীড়নের হাত থেকে নারীদের রক্ষা করা, সংঘর্ষ এবং সংঘাতপূর্ণ এলাকায় আরো সক্রিয় হয়ে কাজ করা, অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়া, তৃণমূল থেকে উচ্চ পর্যায়ে – প্রতিটি ক্ষেত্রে নারীর সক্রিয় অংশগ্রহণ৷ সেটা স্থানীয় এবং জাতীয় পর্যায়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ থেকে শুরু করে, পরিবার পরিকল্পনা এবং বাজেট তৈরি পর্যন্ত বিস্তৃত৷

তবে অর্থের অভাবে এসব পরিকল্পনা, প্রতিশ্রুতি মুখ থুবড়ে পড়তে পারে৷

জাতিসংঘে অ্যামেরিকার স্থায়ী প্রতিনিধি সুজান রাইস পুরোপুরি একমত প্রকাশ করেন ইউএন ওম্যানের প্রধান মিশেল বাচেলেটের সঙ্গে৷ সুজান রাইস জানান, ‘‘আমাদের সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হল, প্রতিবার আমরা যে বাজেট পেশ করি, তা গ্রহণ হল কিনা তা নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করা৷ এই বাজেট বা অর্থ ছাড়া অনেক কিছুই আটকে থাকবে৷ আমরা দু'জন এ্যাসিট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল নিয়োগের কথা বলেছি, তার প্রয়োজনীয়তাও দেখিয়েছি৷ এছাড়া আরো বেশি কর্মীর প্রয়োজন আমাদের৷ প্রকল্পের সংখ্যা বাড়ছে৷ বাড়ছে অফিসের সংখ্যা৷ বিভিন্ন মহাদেশে আঞ্চলিক অফিসের সংখ্যাও বাড়াতে হচ্ছে৷ কোন কাজই আমরা ঠিকমতো শুরু করতে পারবো না, যদি এসব দপ্তর ফাঁকা পড়ে থাকে৷ এসব দপ্তরে অতি দ্রুত কর্মীদের নিয়োগ দিতে হবে৷ নয়তো জাতিসংঘের কোন লক্ষ্যই সময়মত পূরণ করা সম্ভব হবে না৷ আমরা আগামী জুন মাস পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারবো না৷ সেটা অনেক দেরি হয়ে যাবে৷''

জানুয়ারি মাসে ইউএন ওম্যান বোর্ডের ভাষণে বেশ জোর দিয়েই একথাগুলো বলেছেন সুজান রাইস৷

২০১১ সালের জন্য জাতিসংঘের কাছে ইউএনওম্যান ৫১.১ মিলিয়ন ডলারের একটি বাজেট পেশ করেছে৷

প্রতিবেদন: মারিনা জোয়ারদার

সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন