1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নারী চলচ্চিত্র উৎসব অনুষ্ঠিত হল ডর্টমুন্ডে

২৬ এপ্রিল ২০১১

সম্প্রতি জার্মানির ডর্টমুন্ড শহরে অনুষ্ঠিত হল চতুর্থ আন্তর্জাতিক নারী চলচ্চিত্র উৎসব৷ তবে শুধু নারী নয় পুরুষ দর্শকদের জন্যও উন্মুক্ত ছিল এই উৎসব৷ কিন্তু ছবিগুলি নির্মাণ করেছেন নারী চলচ্চিত্রকাররা৷

https://p.dw.com/p/113rd
উৎসবে দেখানো একটি ছবির দৃশ্যছবি: Neshat

নারী পুরুষের সমঅধিকারের যুগে নারী চলচ্চিত্র উৎসবের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন জাগতেই পারে৷ কিন্তু লক্ষ্য করলেই দেখা যাবে যে, অন্যান্য অনেক ক্ষেত্রের মত চলচ্চিত্র জগতেও সমঅধিকার থেকে এখনও অনেকটাই দূরে নারীরা৷

২০১০ সালে প্রথমবারের মত অস্কার পুরস্কার পেলেন এক নারী পরিচালক ক্যাথরিন বিগেলো৷ ৮২ বছরের অস্কার পুরস্কারের ইতিহাসে এটা ছিল এক চমক৷ কিন্তু তারপর আবার চলতে থাকলো আগের মতই৷ কয়েক মাস পর কান চলচ্চিত্র উৎসবে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী ১৯টি ছবির একটিও নারী পরিচালক নির্মিত নয়৷ এ বছরও অস্কার প্রতিযোগিতার জন্য কোনো নারী নির্মিত ছায়াছবি মনোনীত হয়নি৷ পরিচালনা, ক্যামেরা ও প্রযোজনার ক্ষেত্রে মেয়েদের অংশ গ্রহণের হার ১০ থেকে ২০ শতাংশ৷ আর একারণেই মহিলা পরিচালকদের একটি প্ল্যাটফর্ম দেয়া হয় নারী চলচ্চিত্র উৎসবে৷

এই ধরনের উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে৷ শুরুটা হয় ফ্রান্সের ‘ফিল্ম দ্যা ফাম' দিয়ে৷ ৮০ এর দশকে জার্মানির কোলন ও ডর্টমুন্ড শহরে পৃথক পৃথক ভাবে নারী চলচ্চিত্র উৎসব অনুষ্ঠিত হত৷ ২০০৬ সালে এই দুই শহরের উৎসব একত্রিত হয়৷ তারপর থেকে এক বছর কোলনে পরের বছর ডর্টমুন্ডে আয়োজিত হয়ে আসছে নারী চলচ্চিত্র উৎসব৷ সাধারণত কোলনে দেশ ও অঞ্চল ভিত্তিক এবং ডর্টমুন্ডে বিষয়ভিত্তিক ছায়াছবি দেখানো হয়৷ কোলনে গত বছর প্রধান্য পেয়েছিল বলকান অঞ্চলের ছায়াছবি৷ এ বছর ডর্টমুন্ডে বৈশ্বিক সংকট নিয়ে প্রদর্শিত হল কয়েকটি ছবি৷ উৎসবের মটো ছিল ‘কী করা যায়- এই পরিস্থিতির ওপর ছায়াছবি'৷

কাহিনি চিত্রগুলিও আবর্তিত হয়েছে পরিবেশ, সামাজিক ও রাজনৈতিক বিষয়গুলিকে কেন্দ্র করে৷ কোলনে নবীন চিত্রনির্মাতাদের ছবিকে তুলে ধরা হয়৷ ডর্টমুন্ডে সাধারণত অভিজ্ঞ চিত্র নির্মাতাদের ছবিই প্রদর্শিত হয়৷ তুলে ধরা হয় রাজনৈতিক, সামাজিক বা পরিবেশগত নানা সমস্যা৷

Asian Hot Shots Film Fest in Berlin - Earth FLash-Galerie
ছবি: Asian Hot Shots Berlin

এ বছর প্রায় ৩০টি দেশের ১০০টির মত ছায়াছবি প্রদর্শিত হল ডর্টমুন্ডে৷ এ ছাড়া ওয়ার্ক শপ, আলোচনা সভা, কনসার্ট ইত্যাদিও অনুষ্ঠিত হয়েছে৷ উপভোগ করেছেন ৭ হাজারেরও বেশি দর্শক৷ প্রতিযোগিতার জন্য লড়েছে ৮ টি ছবি৷ জুরি মণ্ডলীর প্রধান ছিলেন জার্মান অভিনেত্রী মারেন ক্রয়মান৷

গ্রিসের চলচ্চিত্র নির্মাতা আথিনা রেচেল চাঙ্গারি'র ‘আটেনব্যার্গ' সেরা ছায়াছবি হিসাবে নির্বাচিত হয়েছে এই উৎসবে৷ পেয়েছে ২৫ হাজার অর্থমূল্যের পুরস্কারটি৷ এক তরুণীর বড় হয়ে ওঠার চ্যালেঞ্জ, প্রেম ভালবাসা নিয়ে গড়ে উঠেছে ছবির কাহিনি৷

বার্লিনের পরিচালক হেলগা রাইডেমাইস্টার প্রামাণ্য চিত্রে তাঁর অবদানের জন্য পেয়েছেন ১০ হাজার অর্থমূল্যের পুরস্কার৷ এবারের উৎসবে প্রদর্শিত হয়েছে তাঁর ছবি ‘মাই হার্ট সিজ দ্য ওয়ার্ল্ড ব্ল্যাক'৷ আফগানিস্তানে পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় মেয়েদের অবস্থান তুলে ধরা হয়েছে এই ছবিতে, যেখানে ঐতিহ্য ও ধর্মবিশ্বাসের অনুশাসন তাদের স্বাধিকারের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে৷

শুধু আবেগমথিত নয়, সমাজ ও রাজনীতি সচেতন কাহিনিও পরিচালনা করেন নারী পরিচালকরা৷ হয়তো প্রশ্ন উঠতে পারে, মেয়েদের দৃষ্টিভঙ্গি কী খানিকটা ভিন্ন রকম? হয়তো বা৷ নারী নির্মিত চলচ্চিত্র উৎসব এক্ষেত্রে কিছুটা প্রণোদনা জাগাতে পারে৷ তবে এমন একদিন হয়তো আসবে, যেদিন কোনো ছায়াছবি পুরুষ নাকি নারী নির্মিত, এ নিয়ে আর প্রশ্ন উঠবেনা৷

প্রতিবেদন: রায়হানা বেগম

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল ফারূক