1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নারী পুরুষের সমান অধিকারের বাস্তব প্রতিফলন নেই

২ জানুয়ারি ২০১১

সংবিধানে থাকলেও, নারীদের অধিকারের ওপর সেভাবে নজরও দেওয়া হচ্ছে না৷ বিশেষ করে অধিকাংশ পুরুষই নারীদের অধিকারের প্রতি নজর দিতে নারাজ৷ অধিকারের এই বিষয়টির জবাব পুরুষরা দেয় অত্যাচারকে হাতিয়ার করে৷

https://p.dw.com/p/zsWK
Afghanische, Frauen, Afghanistan, Press, konferenz দেশ, বিবাহ, আইন, সমালোচনা, সোচ্চার, আফগান নারী, আফগানিস্তান
দেশটির বিবাহ আইনের সমালোচনায় সোচ্চার কিছু আফগান নারীছবি: DW

পুরুষশাসিত আফগান সমাজে নারীদের অধিকার নিয়ে কথা বলা যেন একেবারে নিষিদ্ধ৷ নারীদের অধিকার রয়েছে তা মানতেও রাজি নন পুরুষরা৷ ব্যক্তিগত বা রাজনৈতিক যে কারণেই হোক না কেন – যে কোন অধিকার থেকে আফগান নারীরা এখনও অনেক অনেক দূরে৷

আফগান সমাজে মেয়েদের দেখা হয় তাচ্ছিল্যের সঙ্গে৷ কোন ধরণের সম্মান তাদের প্রতি প্রদর্শন করা হয় না৷ উগ্র মৌলবাদীদের কাজ হচ্ছে মেয়েদের ওপর নিয়মিত নির্যাতন চালানো, অত্যাচার করা৷ কথাগুলো জানান, ড. সোরাইয়া সোবরাং৷ তিনি বলেন, ঘৃণা আর করুণা নিয়ে আফগান মেয়েরা বেঁচে থাকে৷ এর সঙ্গে আছে পাথর ছুঁড়ে মারার মত আমানবিক কাজ৷ আফগানিস্তানের মানবাধিকার কমিশন চেষ্টা করছে আফগান মেয়েদের সাহায্য করতে৷ সেখানেই কাজ করছেন ড. সোরাইয়া সোবরাং৷

পাথর ছুঁড়ে মারা প্রসঙ্গে তিনি বললেন, ‘‘শুধু তাখারে নয় কুন্দুসেও একজন পুরুষ এবং একজন মহিলাকে পাথর ছুঁড়ে মারা হয়েছে৷ ঘোর প্রদেশেও এ ধরণের ঘটনা ঘটেছে সে কথা আমরা শুনেছি৷ সেখানে একটি মহিলাকে প্রকাশ্যে সবার সামনে অপমান করা হয়৷ ফাহরা রাজ্যে কয়েকদিন আগে ১৬ বছরের একটি মেয়েকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে৷''

আফগানিস্তানের সংবিধানে নারী পুরুষের সমানাধিকারের কথা বলা থাকলেও দেশের ভিতরে কট্টর ধর্মভীরু মানুষরা ঐতিহ্য, প্রচলিত নিয়ম-কানুনের বাইরে যেতে সাহস পায় না৷ এতদিন যা হয়ে এসেছে, এখনও সেরকমই হবে – এই বিশ্বাস নিয়েই তারা দিন কাটায়৷ কাবুল থেকে কিছু দূরে গেলেই দেখা যাবে বিভিন্ন প্রদেশে মেয়েদের দেখা হয় সম্পত্তি হিসেবে৷ স্ত্রী যেন তাঁর স্বামীরই সম্পত্তি৷ স্বামী যেভাবে চায় স্ত্রীকে ঠিক সেভাবে চলতে হবে৷ আর যেহেতু সবাই এধরণের চিন্তা-ভাবনার সঙ্গে পরিচিত – একটি মেয়ের ওপর যে অত্যাচার করা হচ্ছে তা কেউই বুঝতে পারে না বা বুঝতে চায় না৷ স্বামীর কথার অবাধ্য হলেই স্ত্রীকে শাস্তি ভোগ করতে হবে – তা নিশ্চিত৷ কথাগুলো জানান হামিদ সাফওয়াত৷ মাজার-ই-শরিফে অবস্থিত কো-অপারেশন সেন্টার আফগানিস্তানের পরিচালক তিনি৷

Afghanische Frauen
পর্দার অন্তরালে কয়েকজন আফগান নারী (ফাইল ছবি)

তিনি বলেন, মেয়েদের ওপর অত্যাচার আগের চেয়ে বেড়েছে৷ সংস্থাটি অত্যাচারিত মেয়েদের আশ্রয় দেয়, সাহায্য করে৷ হামিদ সাফওয়াত'এর কথায়, ‘‘আমাদের হাতে অসংখ্য উদাহরণ রয়েছে৷ পরিবারের সম্মান ও ঐতিহ্য রক্ষার কথা বলে মেয়ে বা স্ত্রীকে খুন করে ফেলা হয়েছে৷ যদি একটি মেয়েকে ধর্ষণ করা হয় তখন পরিবারটি চায় কোন অবস্থাতেই যেন এই খবর প্রকাশিত না হয়৷ এই খবর চেপে যাওয়ার একমাত্র উপায় হল মেয়েটিকে মেরে ফেলা৷ এবং তা-ই করা হয়৷ অনেক পরিবারেই নির্দ্বিধায় হত্যা করেছে বাড়ির মেয়েকে৷ শুধু কলঙ্কিত একটি ঘটনাকে ঢাকার জন্য৷ একারণেই আমরা এই আশ্রয়কেন্দ্র খুলেছি৷ আমরা এসব অসহায় মেয়েদের সাহায্য করছি এখানে৷''

এই আশ্রয়স্থানে মেয়েদের শুধু আশ্রয় দেওয়া হয় না তাদের ওপর যে ধরণের অত্যাচার চালানো হয়েছে সে বিষয়ে আইনগত দিক থেকে সাহায্যও করা হয়৷ এখানে কাজ করছেন বেশ কিছু আইনজীবি৷ কিন্তু এত কিছুর পরও যে বা যারা এ ধরণের অপরাধ করে তারা নির্বিঘ্নে খোলা আকাশের নিচে ঘুরে বেড়াচ্ছে৷ এই অবস্থার পরিবর্তনের দাবি জানান ওয়েদা হামেদ৷ ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত করতে তিনি কাজ করছে একটি সংস্থায়৷ ওয়েদা হামেদ জানান, ‘‘আমরা চাই যে বা যারা এ ধরণের অপরাধ করছে তাদের আদালতে হাজির করা হোক৷ তাদের শাস্তি হোক৷ তাদের কাছ থেকে অস্ত্র কেড়ে নেওয়া হোক৷ গত ৩০ বছর ধরে যারা এ ধরণের অপরাধমূলক কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে তাদের কারোরই বিচার হয়নি৷ দেশের বিচার ব্যবস্থার ওপর ছড়িয়ে রয়েছে দূর্নীতির জাল৷''

প্রশ্ন উঠেছে এই অবস্থার মধ্য থেকে আফগান নারীদের বের করে আনা আদৌ সম্ভব কী ? নতুন বছর কী তাদের ভাগ্যের কোন পরিবর্তন বয়ে আনবে?

প্রতিবেদন: মারিনা জোয়ারদার

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য