1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নিখোঁজ ১৭৬ জন কোথায়?

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা১৭ অক্টোবর ২০১৪

বাংলাদেশ থেকে নিয়ে যাওয়ার পর থাইল্যান্ডের এক দ্বীপ থেকে নিখোঁজ ১৭৬ জনকে নিয়ে রহস্য ঘনীভূত হচ্ছে৷ মানবপাচারকারীরা তাঁদের দাস হিসেবে বিক্রি করে দিয়েছে বলে ধারণা৷ বাংলাদেশের কর্মকর্তারা তাঁদের খুঁজতে অনুসন্ধান চালাচ্ছেন৷

https://p.dw.com/p/1DWzy
Flüchtlingsboot kentert vor Bangladesch
ছবি: Reuters

সম্প্রতি থাইল্যান্ডের উপকূল থেকে থাই কর্তৃপক্ষ ১৩৪ জনকে উদ্ধার করে৷ মানবপাচারকারীরা নাকি একটি ইঞ্জিন চালিত নৌকা করে তাঁদের সেখানে নিয়ে যায়৷ তবে সেই নৌকায় আরো ১৭৬ জন ছিলেন, যাঁদের এখনও কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না৷ বাংলাদেশের কক্সবাজার থেকে যাওয়া নৌকাটি ছেড়ে যায়৷ জানা গেছে, উদ্ধার হওয়া ১৩৪ জনের মধ্যে ১৬ জন রোহিঙ্গা৷ উদ্ধারকৃতরা থাই কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন যে, তাঁদের সঙ্গে আরো ১৭৬ জন ঐ একই নৌকায় ছিলেন এবং তাঁদের সকলকে একটি দুর্গম দ্বীপে রাখা হয়েছিল৷

নৌকায় মোট ৩১০ জন যাত্রীকে পাচারকারীরা কী কারণে এবং কোথায় নিয়ে যাচ্ছিল – তা এখন পর্যন্ত পরিষ্কার নয়৷ উদ্ধারকৃতদের দেয়া তথ্যমতে, পাচারকারীরা নিখোঁজদের মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার মাছধরা ট্রলার ও কারখানায় দাস হিসেবে বিক্রি করে দিতে পারে৷

Bangladesch Rohingya Bootsflüchtlinge
২০০৫ সালের আগ পর্যন্ত প্রায় দুই লাখ রোহিঙ্গাকে মিয়ানমার ফিরিয়ে নেয়ছবি: DW/Shaikh Azizur Rahman

উদ্ধার হওয়া ১৩৪ জনের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ এবং নিখোঁজদের উদ্ধার করতে বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের একটি দল এ মুহূর্তে থাইল্যান্ডে রয়েছেন৷ তাঁরা এরইমধ্যে উদ্ধার হওয়া ১৩৪ জনের মধ্যে কয়েকজনের সঙ্গে কথাও বলেছেন বলে জানা গেছে৷ জিজ্ঞাসাবাদে দু'জন, যাঁদের মধ্যে একজন কিশোরও রয়েছেন, জনিয়েছেন যে তাঁদের বাংলাদেশ থেকে ‘অপহরণ' করে নিয়ে যাওয়া হয়৷ অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা তাঁদের অপহরণের পর প্রথমে মাছধরা জাহাজে আটকে রাখে, পরে কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর এলাকা থেকে থাইল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চল উপকূলের একটি দুর্গম দ্বীপের উদ্দেশ্যে রওনা হয়৷

থাইল্যান্ডের একটি দ্বীপে পাচারকারীরা একদল লোককে নিয়ে এসেছে বলে থাই কর্তৃপক্ষ জানতে পারার পর, পাচারকারীর ১৩৪ জনকে সমুদ্রে ফেলে দেয় এবং তারা সাঁতরে সমুদ্র উপকূলে পৌঁছাতে সক্ষম হয়৷ সেখান থেকেই তাঁদের উদ্ধার করা হয়৷ তবে বাকি ১৭৬ জনকে পাচারকারীর দল সরিয়ে নিতে সক্ষম হয় বলে ধারণা করা হচ্ছে৷

উদ্ধারকৃতরা জানান, তাঁদের জঙ্গলে আটকে রেখে ব্যাপক মারধর ও নির্যাতন করা হয়েছে এবং ঠিকমতো খাবার-দাবারও দেওয়া হয়নি৷

বাংলাদেশের এক কর্মকর্তা থাই সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘‘আমরা এ ধরনের ঘটনা আর কখনো ঘটতে দেখিনি৷ কারণ বাংলাদেশ থেকে সাধারণত পাচারের ঘটনা ঘটে না৷''

এর আগে আরেকটি ঘটনায় থাইল্যান্ডের ফ্যাং এঙ্গা প্রদেশের তাকুয়া পা জেলায় ১৩০ জনকে উদ্ধারের ঘটনার পর, মানবপাচারের অভিযোগ এনে দুই থাই নাগরিকের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছিল৷ পুলিশ এ ঘটনায় অন্য অভিযুক্তদেরও খুঁজছে৷

মানবপাচার প্রতিরোধে থাইল্যান্ডের অবস্থা খুবই নাজুক৷ ২০১৪ সালে ইএস স্টেট ডিপার্টমেন্ট মানবপাচার ইনডেক্স-এ থাইল্যান্ডের অবস্থার আরো নামিয়ে টায়ার ৩-এ রাখা হয়েছে৷ আর এ ঘটনার মধ্য দিয়ে স্পষ্ট হলো যে, থাইল্যান্ডের দক্ষিণে মানবপাচার রুট পুরোপুরি খোলা রয়েছে এবং পাচারকারীরা সেখানে বেশ ভালোই সক্রিয়৷

এবার উদ্ধার হওয়া ১৩৪ জনের মধ্যে ১৬ জন রোহিঙ্গা আর নিখোঁজ ১৭৬ জনের মধ্যেও রোহিঙ্গা শরণার্থী আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে৷ মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে জাতিগত দাঙ্গার কারণে ২০১২ সালে ১০ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা মিয়ানমার ছেড়ে পালান৷ এছাড়া সেই ঘটনায় কয়েকশ' নিহত এবং অন্তত এক লাখ ৪০ হাজার রোহিঙ্গা গৃহহীন হয়েছিলেন৷

সাধারণত অক্টোবর থেকে পরবর্তী পাঁচ মাসকে সমুদ্র যাত্রার জন্য সঠিক সময় বলে বিবেচনা করা হয়৷ এ সময়ে আরো শত শত রোহিঙ্গা শরণার্থী মিয়ানমার ছেড়ে পালাতে পারে৷ তাঁদের গন্তব্য হতে পারে মালয়েশিয়া, কারণ সেখানে বহু রোহিঙ্গা বসবাস করেন৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান