1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভূমিকম্পে বেঁচে যাওয়াদের হতাশার কাহিনি

৩০ এপ্রিল ২০১৭

২৫শে এপ্রিল ছিল নেপালের ভয়াবহ ভূমিকম্পের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তি৷ যেসব স্থাপনা ধ্বংস হয়েছিল সেগুলোর কিছুর সংস্কার শুরু হয়েছে৷ কিন্তু ভূমিকম্পে বেঁচে যাওয়া লাখো মানুষ নড়বড়ে শরণার্থী শিবিরে থাকছে,যাদের ঘরে ফেরার সম্ভাবনা ক্ষীণ৷

https://p.dw.com/p/2c5fZ
ছবি: picture alliance/ZUMA Press

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ২০১৫ সালে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে অন্তত ৯ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছিল৷ কিন্তু ঐ ঘটনার পর বর্ষা মৌসুমে হিমালয় কন্যার বিভিন্ন অঞ্চলে প্রায়ই ভূমিধসের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘটে চলেছে৷

ক্ষণস্থায়ী শরণার্থী শিবিরে এখনও আশ্রয় নেয়া আড়াই হাজার পরিবার স্থায়ী আবাসনের আশায় দিন কাটাচ্ছেন৷ কারণ, কর্তৃপক্ষ বলছেন, যেসব গ্রামে তারা ছিলেন, সেখানে ফিরে যাওয়া নিরাপদ নয়৷

এদের মধ্যে একজন সুবি তামাং, যিনি ঐ ভূমিকম্পের ফলে ভূমিধসে তাঁর বাড়ি-ঘর এবং তিন বছরের নাতনীকে হারিয়েছেন৷ ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ঐ ভূমিকম্পের পর গত দুই বছরে তামাং এবং তার পরিবার এমন একটি জায়গায় আশ্রয় নিয়েছেন যেখানে অন্য ১০০টি পরিবারের সঙ্গে বাস করতে হয় এবং প্রতি মাসে ভাড়াও দিতে হয়৷ সেখান থেকে তাদের আগের বাড়িতে হেঁটে যেতে পুরো একদিন সময় লাগে৷ সেই বাড়ি অবশ্য এখনো ধ্বংসস্তূপ৷ 

কাঠমাণ্ডুর উত্তরে হিমালয়ের পাদদেশে প্রত্যন্ত এই জেলাতে টিনের তৈরি এই বাসস্থানগুলো তেমন একটা মজবুত নয়৷ তাই তীব্র শীতে প্রচণ্ড কষ্ট হয় তাদের৷ ৪৮ বছর বয়সি তামাং স্মৃতি রোমন্থন করতে গিয়ে জানালেন, কীভাবে তাদের গ্রামে পাথর ধসে ৫০ জনের মৃত্যু হয়েছিল৷ সংবাদ সংস্থা এএফপিকে তিনি জানালেন, ‘‘এই ভূমিকম্প আমাদের সর্বস্ব কেড়ে নিয়েছে৷ ভূমিধসে সব তলিয়ে গেছে, কিছুই অবশিষ্ট নেই৷ সেখানে যাওয়ার কোনো সড়ক নেই৷ থাকার মতো কোনো ঘর নেই৷ কৃষিকাজ করার মতো জমিও নেই৷''

তবে তামাং ভাগ্যবানদের একজন, কারণ, তাদের গ্রামটি সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার৷ সরকারি সংস্থা এনআরএ দাতা সংস্থাগুলোর কাছ থেকে পাওয়া চারশ' কোটি মার্কিন ডলার ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত ও ধ্বংসপ্রাপ্ত কাঠামোর সংস্কারে ব্যয় করছে৷ কোন এলাকা ও স্থাপনার সংস্কার করা হবে সেগুলো এতদিন ধরে চিহ্নিত করেছেন তারা৷

তাই নতুন জায়গায় শরণার্থীদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করছে কর্তৃপক্ষ৷ তবে কবে থেকে এই পুনর্বাসন শুরু হবে তা জানায়নি তারা৷ এনআরএ কর্মকর্তা দূর্বা শর্মা জানালেন, ‘‘প্রয়োজনের ভিত্তিতে পুনর্বাসন প্রক্রিয়া চলবে৷ যাদের প্রয়োজনটা বেশি তাদের প্রাধান্য দেয়া হবে৷ কেবল বাসস্থান নয়, স্কুলও নির্মাণ করা হবে৷''

যেসব মানুষ বাড়ি-ঘর হারিয়েছেন, তাদের বলা হয়েছিল প্রত্যেকে ৩ লাখ রূপি করে দেয়া হবে৷ কিন্তু এখনো কোনো অর্থ না পেয়ে তারা অধৈর্য্য হয়ে পড়েছেন৷ ৬৪ বছরের কৃষক বীরবল তামাং ভূমিধসে বাড়ি-ঘর গৃহপালিত পশু সব হারিয়েছেন৷ তবে আবার সব ফিরে পাবেন সেই আশায় প্রতিটা ক্ষণ গোনেন৷ এএফপিকে তিনি জানালেন, ‘‘প্রায়ই আমাদের গ্রামে যন্ত্রপাতি ইত্যাদি নিয়ে হাজির হন কিছু মানুষ এবং যাওয়ার সময় বলেন, এখনও এলাকাটি বিপজ্জনক৷ তারা এটাও বলেছিল আমাদের জায়গা-জমি দেবে৷ কিন্তু আমরা কিছুই জানি না আদৌ কিছু পাব কিনা৷''

এপিবি/এসিবি (এপি, এএফপি, রয়টার্স)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য