1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সহযোগিতার আশ্বাস জার্মান মন্ত্রীর

সমীর কুমার দে ঢাকা
২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০

তৈরি পোশাকের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে গার্মেন্টস মালিকদের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন জার্মানির অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং উন্নয়ন বিষয়ক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ড. গার্ড মুলার৷

https://p.dw.com/p/3YTdv
Bangladesch Dhaka Bundesentwicklungsminister Gerd Müller besucht Sheikh Hasina
ছবি: Imago Images/photothek/U. Grabowsky

তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ, শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং শ্রমিক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে যৌথ বৈঠকে তিনি এই আশ্বাস দেন৷ বিজিএমইএ সভাপতি রুবানা হক ডয়চে ভেলেকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন৷

রুবানা হক বলেন, ‘‘জার্মান মন্ত্রীর সঙ্গে দারুণ একটা বৈঠক হয়েছে৷ উনি আসলে আরএমজি সাসটেনেবিলিটি কাউন্সিল (আরএসসি) যেটা আমরা করেছি, সেটা কেমন হচ্ছে বা আমরা কি করছি সেটা জানতে এসেছিলেন৷ আমরা তাকে বলার পর উনি খুবই খুশি৷ তবে উনি আমাদের বলেছিলেন, শ্রমিকদের জীবন চলার মতো মজুরি দিতে হবে৷ প্রয়োজনে উনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকেও বিষয়টি তুলবেন৷ তখন আমি  বলেছি, ক্রেতারা তো আমাদের পোশাকের ঠিকমতো দাম দিচ্ছেন না৷ এটা আগে নিশ্চিত করা দরকার৷ তখন উনি আমাকে বলেছেন, আপনি বার্লিনে আসেন সেখানে দেখা হবে৷ আমি ইউরোপীয় ইউনিয়নের পার্লামেন্টে আছি, সেখানে আমরা একত্রে বিষয়টি উপস্থাপন করব৷''

দুই দিনের সফর শেষে ড. মুলার বুধবার ফিরে গেছেন৷ তার আগে তিনি মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করেন৷ বুধবার সকালে তিনি কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেন৷

রুবানা হক

বাংলাদেশে জার্মান দূতাবাসের প্রেস অফিসার কাজী মুকিতুল ইসলাম ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘উনি আসলে দু'টি কারণে এসেছিলেন৷আরএমজি সেক্টরের অবস্থা এবং রোহিঙ্গা ক্যাম্প দেখতে৷ মঙ্গলবার উনি গার্মেন্টস মালিক-শ্রমিক সবার সঙ্গেই কথা বলেছেন৷ পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গেও বৈঠক করেছেন৷ আর বুধবার সকালে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে বিকেলেই দেশে ফিরে গেছেন৷ পুরো সফরে উনি কোন মিডিয়ার সঙ্গেই কথা বলেননি৷ অফিসিয়াল কোন স্টেটমেন্টও দেননি৷''

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে জার্মান মন্ত্রী

কক্সবাজারের উখিয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অবস্থা বুধবার সরেজমিনে দেখেছেন ড. মুলার৷ বেলা ১২ টার দিকে উখিয়ার বালুখালীর ১৮ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পৌছেন৷ এরপর তিনি সেখানে রোহিঙ্গাদের মাল্টিপারপাস ও লার্নিং সেন্টার ঘুরে দেখেন৷ এসময় রোহিঙ্গারা তাদের বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেন মন্ত্রীর কাছে৷ 

তার সঙ্গে থাকা অতিরিক্ত শরনার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ সামছু-দ্দৌজা উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘ সফররত জার্মানির মন্ত্রী রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরির্দশন করে অনেকের সঙ্গে কথা বলেছেন৷ তাদের অভিযোগ, সমস্যা-সুবিধা অসুবিধার কথা শুনেছেন৷ তবে এখানে তিনি কোন মন্তব্য করেননি৷''

কাজী মুকিতুল ইসলাম

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ড. মুলার

মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করেন ড. মুলার৷ বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর উপপ্রেস সচিব হাসান জাহিদ তুষার সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে মিয়ানমার সরকারের ওপর আরো চাপ সৃষ্টি করতে জার্মানিসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী৷ প্রধানমন্ত্রী তাকে বলেছেন, রোহিঙ্গারা আমাদের জন্য এক বিরাট বোঝা এবং তারা সামাজিক সমস্যার সৃষ্টি করছে৷ মিয়ানমারকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বাংলাদেশ থেকে তাদের নাগরিকদের ফেরত নিয়ে যেতে হবে৷ প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গার আগমন কক্সবাজারের স্থানীয় জনগণের জন্য একটি বড় সমস্যার কারণ হয়েছে, কেননা তারা সংখ্যায় স্থানীয় জনগণকে ছাড়িয়ে গেছে৷ অনেকেই (রোহিঙ্গারা) নিজেদেরকে সন্ত্রাস এবং মানবপাচারে জড়িয়ে ফেলার সুযোগ নিচ্ছে৷ দ্বিপাক্ষিক আলোচনা ছাড়াও বাংলাদেশ মিয়ানমারের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে যাতে করে মিয়ানমার সরকার স্বেচ্ছায় বাংলাদেশ থেকে তাদের নাগরিকদের ফেরত নিয়ে যেতে পারে৷ এরপর মিয়ানমার আর রোহিঙ্গাদের ফেরত নিচ্ছে না এবং চুক্তিও মানছে না৷''

বাংলাদেশে বিএমডব্লিউ গাড়ি উৎপাদন করার প্রস্তাব

বাংলাদেশে বিএমডব্লিউ গাড়ি উৎপাদন করার প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে ড. মুলার৷ মঙ্গলবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন বৈঠকের সময় জার্মান মন্ত্রীকে বিএমডব্লিউ গাড়ি উৎপাদন কারখানা করার বিষয়টি উত্থাপন করেন৷

পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী জার্মান বিনিয়োগকারিদের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ও হাইটেক পার্কে বিনিয়োগ করার জন্য আহবান জানান৷ মুজিব বর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জার্মানির চ্যান্সেলর এঙ্গেলা মার্কেলকে আমন্ত্রন জানানোর বিষয়টি পুনরায় জার্মান মন্ত্রীকে স্মরন করিয়ে দেন ড. মোমেন৷ দুই মন্ত্রীর আলোচনায় রোহিঙ্গা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে আলোচিত হয় এবং রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য রাখাইনে সহায়ক পরিবেশ তৈরীর জন্য মিয়ানমারকে চাপ দেওয়ার জন্য মোমেন অনুরোধ করেন৷ জার্মান মন্ত্রী রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের বিষয়ে তাদের দৃঢ় প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন৷