পরমাণু দায়বদ্ধতা বিলের সংশোধনী রিপোর্ট পেশ সংসদে
১৮ আগস্ট ২০১০বিলের যেসব ধারা সম্পর্কে বিরোধীদের আপত্তি ছিল, বহুলাংশে তা দূর করা হয়েছে৷
সংসদীয় কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে পরমাণু দায়বদ্ধতা বিল সংশোধিত আকারে সংসদে আনা হবে এই সপ্তাহে৷ আগেকার বিলের যেসব ধারা সম্পর্কে বিরোধী দলগুলির আপত্তি ছিল, সংশোধিত রিপোর্টে তার অনেকটা দূর হওয়ায় বিজেপি এতে ছাড়পত্র দিয়েছে৷ ফলে বিলটি সংসদে পাশ করানোর পথ সুগম হলো৷ বাম দলগুলির আপত্তি থাকলেও তাতে ইতরবিশেষ হবেনা৷ সংশোধনগুলি মোটামুটি এই রকম৷ প্রথমত, পরমাণু দুর্ঘটনার ক্ষতিপূরণের অর্থ ৫০০ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে করা হয় ১৫০০ কোটি টাকা৷ দ্বিতীয়ত, আগে উল্লেখ ছিল, দায়বদ্ধতার প্রশ্ন উঠবে ইচ্ছাকৃত বা চরম গাফিলতির ক্ষেত্রে৷ নতুন বিলে দায়বদ্ধতার পরিধি বাড়িয়ে সাজসরঞ্জামের খারাপ গুণমান বা ত্রুটিকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে৷ তৃতীয়ত, আগের বিলে পরমাণু দায়বদ্ধতা তহবিলের কোন সংস্থান ছিলনা, নতুন বিলে মার্কিন ধাঁচে এর সংস্থান রাখা হয়৷ চতুর্থত, পরমাণু দুর্ঘটনায় স্রেফ জানমালের ক্ষয়ক্ষতিকেই আগে ধরা হয়েছিল, এবার তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে পশুপ্রাণী, গাছপালা, ফসল ও উদ্ভিদ৷ পঞ্চমত, ক্ষতিপূরণের দাবি জানানোর সময়সীমা আগে ছিল ১০ বছর৷ সেটাকে বাড়িয়ে করা হয় ২০ বছর৷
সংশোধিত রিপোর্টে বিজেপি সায় দেয়ায় আরজেডি ও সমাজবাদি পার্টি খাপ্পা৷ আরজেডির লালু যাদবের অভিযোগ, গুজরাটে বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে সিবিআই মামলা থেকে রেহাই দেবার শর্তে বিজেপি এই রিপোর্ট অনুমোদন করেছে৷ কংগ্রেস নেতা রাজীব শুক্লার মন্তব্য, এসব বাজে কথা৷ দেশে বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে এই বিল পাশ করানো জরুরি৷ অন্যদিকে বিজেপির মুখপাত্র রবিশঙ্কর প্রসাদ সাংবাদিকদের বলেন,ভারত-মার্কিন অসামরিক পরমাণু চুক্তি সম্পর্কে দলের অবস্থান স্পষ্ট৷ দেশের স্বার্থ সুরক্ষিত রাখতে হবে৷ তাই প্রয়োজনীয় সংশোধনে সরকারকে বাধ্য করা হয়৷ সিপিআই-এম সাংসদ সীতারাম ইয়েচুরি মন্তব্য, নভেম্বরে ওবামা ভারতে এলে তাঁকে ভেট দিতেই তড়িঘড়ি বিল পাশ করাতে হবে সরকারকে৷ ক্ষতিপূরণের সীমা যাতে বেঁধে দেয়া না হয়, তার জন্য পরিবেশবাদি গ্রিনপিস সংগঠন বিরোধি দলগুলির প্রতি আহ্বান জানিয়েছে৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুনদিল্লি
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন