1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পরিবহণে বিপ্লব আনতে পারে হাইড্রোজেন জ্বালানি

১৯ এপ্রিল ২০২১

দীর্ঘ সময় ধরে চার্জিংয়ের কারণে ব্যাটারিচালিত গাড়ি এখনো অনেক ক্রেতার জন্য তেমন আকর্ষণীয় নয়৷ ভবিষ্যতে পরিবহণের ক্ষেত্রে হাইড্রোজেন-ভিত্তিক ফুয়েল সেল আরো আকর্ষণীয় বিকল্প হয়ে উঠতে পারে৷

https://p.dw.com/p/3sCYO
Automobil Wasserstoffantrieb l Toyota Mirai Concept, Tokyo
ছবি: picture alliance/Geisler-Fotopress/Y. Tomita

ব্যাটারিচালিত গাড়ি ব্যবহার করা উচিত বলেই তো এতকাল মনে হতো৷ জার্মানিতে ইতোমধ্যে এমন গাড়ি ভাড়া নেওয়া বেশ সহজ হয়ে উঠেছে৷ কিন্তু এখন হাইড্রোজেন গাড়ি নিয়ে চর্চা বেড়ে চলেছে৷ প্রায় ২০ বছর আগে এমন গাড়ি তুলে ধরা হয়েছিল বটে, তবে সেই জ্বালানি দিয়ে সে সময়কার প্রচলিত ইঞ্জিন চালানো হতো৷ প্রশ্ন হলো, এখনো পর্যন্ত হাইড্রোজেন ইঞ্জিনের প্রচলন কেন বাড়েনি?

হাইড্রোজেন জ্বালানি সংগঠন ও সংগঠনের শীর্ষ প্রতিনিধিরা অবশ্য অনেক কাল ধরেই এমন গাড়ি চালাচ্ছেন৷ প্রশ্ন হলো, ব্যাটারিচালিত গাড়ির তুলনায় এমন গাড়ির সুবিধা কী? হাইড্রোজেন জ্বালানি সংগঠনের প্রধান ভ্যার্নার ডিভাল্ড বলেন, ‘‘ব্যাটারিচালিত ইলেকট্রিক গাড়ির ক্ষেত্রে রেঞ্জ একটা বড় সমস্যা৷ আগের তুলনায় রেঞ্জ বাড়লেও তারপর দুই থেকে চার ঘণ্টা ধরে চার্জ করতে হয়৷ ছুটি কাটাতে বেরিয়ে আড়াইশ' কিলোমিটার পর পর চার ঘণ্টা ধরে বিরতি নিতে হলে কেমন লাগে? আমার মতে, এটা মোটেই কোনো সমাধানসূত্র হতে পারে না৷''

হাইড্রোজেন-গাড়ি কীভাবে চলে? এমন গাড়িকে ‘ফুয়েল সেল কার'-ও বলা হয়৷ বাইরের বাতাস অক্সিজেন ট্যাংকের ফুয়েল সেলের মধ্যে রাখা হাইড্রোজেনের সংস্পর্শে আসে৷ এর ফলে বিদ্যুৎ সৃষ্টি হয়, যা দিয়ে ইলেকট্রিক ইঞ্জিন চলে৷ গাড়ির পেছনের এক্সট পাইপ থেকে পানির বিন্দু পড়ে৷ প্রচলিত পেট্রোল বা ডিজেল ইঞ্জিনের মতো ধোঁয়া বের হয় না৷

যে পরিবর্তন আনতে পারে হাইড্রোজেন জ্বালানি

অর্থাৎ, হাইড্রোজেনের আরো ব্যাপক প্রয়োগ করতে হলে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমপক্ষে দুই গুণ বাড়াতে হবে৷ সেই লক্ষ্য পূরণ করতে হলে আমাদের বায়ু ও সৌরশক্তি থেকে জ্বালানি উৎপাদন ব্যাপক হারে বাড়াতে হবে৷ তবেই পরিবহণের ক্ষেত্রে হাইড্রোজেন এবং মানুষের জন্য যথেষ্ট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হবে৷ ভ্যার্নার ডিভাল্ড মনে করেন, ‘‘পরিবহণের ক্ষেত্রে হাইড্রোজেন ব্যবহার করতে হলে শুধু পুনর্বব্যহারযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার করে সেই হাইড্রোজেন উৎপাদন করতে হবে৷ এমন সব রাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যিক সহায়তার পথে যেতে হবে, যেখানে বিশাল পরিমাণ খালি জমি এবং যথেষ্ট সূর্যের আলো ও বাতাস রয়েছে৷ আমাদের জ্বালানি কোম্পানিগুলি সেখানে পুনর্ব্যবহারযোগ্য জ্বালানি প্লান্টে হাইড্রোজেন উৎপাদন করে পাইপলাইন অথবা জাহাজের মাধ্যমে জার্মানিতে পাঠাতে পারবে৷''

পুনর্ব্যবহারযোগ্য জ্বালানির সরবরাহ ব্যাপক আকারে বাড়িয়ে হাইড্রোজেন উৎপাদন না হয় সম্ভব হলো৷ কিন্তু সেই জ্বালানী ভোক্তার কাছে পৌঁছে দিতে ফুয়েল স্টেশনের মতো প্রয়োজনীয় অবকাঠামোর অভাবও তো বড় এক সমস্যা৷ বার্লিন শহরে মাত্র পাঁচটি হাইড্রোজেন স্টেশন রয়েছে৷ গোটা জার্মানিতে সব মিলিয়ে সংখ্যাটি প্রায় নব্বই৷ গাড়িতে জ্বালানি ভরতে তিন মিনিটের মতো সময় লাগে৷ তারপর গাড়ি প্রায় ৫০০ কিলোমিটার পর্যন্ত চলতে পারে৷ ডিভাল্ড বলেন, ‘‘১০০ কিলোমিটার চালানোর খরচ ডিজেল গাড়ির মতো৷ অর্থাৎ, মালিকের এর বেশি ব্যয় হয় না৷ শিল্পজগতের সঙ্গে রফা অনুযায়ী প্রায় ৪০০ ফুয়েল স্টেশন গড়ে তোলা হবে৷ তবে এমন গাড়ির সংখ্যা সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই৷''

রাজনীতি জগত পুনর্ব্যবহারযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়াতে যথেষ্ট সহায়তা করছে৷ হাইড্রোজেন উৎপাদনও বাড়ছে৷ ডিসেম্বর মাসে জার্মান সরকার চিলিতে এক পরীক্ষামূলক প্রকল্প শুরু করেছে৷ সেখানে সিমেন্স কোম্পানি ভবিষ্যতে হাইড্রোজেনের সাহায্যে কৃত্রিম পেট্রোলিয়াম তৈরি করবে৷ সে কারণেও বিশেষজ্ঞরা জ্বালানি হিসেবে হাইড্রোজেনের সম্ভাবনা সম্পর্কে নিশ্চিত৷ হাইড্রোজেন জ্বালানি সংগঠনের প্রধান ভ্যার্নার ডিভাল্ড বলেন, ‘‘প্রায় দশ বছর আগে শুধু কয়েকজন ইঞ্জিনিয়ারের মনে এমন ‘স্মার্ট' প্রযুক্তির স্বপ্ন ছিল৷ আজ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় ‘গ্রিন ডিল'-এর আওতায় বাধ্যতামূলক লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হয়েছে৷ পেট্রোল বা ডিজেল ইঞ্জিন চালু রেখে যে সেটা আর সম্ভব নয়, তা স্পষ্ট হয়ে গেছে৷ আমাদের অন্য প্রযুক্তির প্রয়োজন৷''

হাইড্রোজেনের আন্তর্জাতিক বাজার এবং সেটি কাজে লাগিয়ে কৃত্রিম পণ্য উৎপাদনও বেড়ে চলেছে৷ এর ফলে হাইড্রোজেন প্রযুক্তির ভবিষ্যৎ আরো উজ্জ্বল হয়ে উঠছে৷ আগামী ১০ বছরের মধ্যে এই জ্বালানি কাজে লাগিয়ে আরও গাড়ি জার্মানির রাজপথে নামবে বলে আশা করা হচ্ছে৷

ইয়ুলিয়া হাইনরিশমান/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য